আজ ৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস। স্পোর্টস ফিজিওথেরাপি হলো ফিজিওথেরাপির একটি বিশেষ ক্ষেত্র যা স্পোর্টস ইনজুরির রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করে থাকে। তাছাড়া একজন ক্রীড়াবিদকে সর্বোত্তম ক্রীড়া কর্মক্ষমতা অর্জন করতে সাহায্য করে থাকে। 

একজন ফিজিওর ওপর একজন খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ার নির্ভর করে থাকে। কারণ সঠিক ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা না পেলে একজন খেলোয়াড় ভালোভাবে সুস্থ হয়ে উঠতে পারেনা। সঠিক সময়ে সুস্থ হয়ে না উঠতে পারলে সিলেকশন এর সময় বাদ পড়ে যায়। ইনজুরির কারণে অনেক খেলোয়াড়কে অল্প সময়ে ছিটকে যেতে হয়েছে। সবাই তো মাশরাফির মতো যোদ্ধা হয় না। যেমন এই এশিয়া কাপের কথাই ধরুন, অনেক খেলোয়াড় ইনজুরির কারনে খেলতে পারেনি। আর সেটির ফল তো আমরা এশিয়া কাপেই পেয়েছি।

সঠিক ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার গুরুত্ব অপরিসীম। একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক খেলার আগে, পরে ও খেলা চলাকালীন  অনেক ভূমিকা পালন করে থাকে। খেলার আগে খেলোয়াড় এর সঠিক খাবার, পরিমাপ অনুযায়ী পানি ও ওয়ার্ম আপ থেকে শুরু করে অনেক কিছু খেয়াল রাখতে হয় ইনজুরি  প্রতিরোধ করার জন্য। তাছাড়াও খেলার পরবর্তী কুলডাউন থেকে শুরু করে আরো অনেক কিছুর খেয়াল রাখতে হয়। 

ইনজুরি থেকে সেরে উঠতে একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক খেলোয়াড় এর সঠিক এসেসমেন্টন্টের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করে থাকে।এরপর বিভিন্নরকম থেরাপি এপ্রোচ যেমন ম্যাকেন্জি, মালিগান ও সিরিয়াক্স এর মাধ্যমে চিকিৎসা করে থাকেন। ম্যানুয়াল থেরাপি যেমন সফ্ট টিস্যু রিলিজ, মোবিলাইজেশন, ম্যানিপুলেশন, ড্রাই নিডলিং ব্যবহার করে থাকে। তাছাড়া ম্যানুয়াল থেরাপির সঙ্গে বিভিন্ন থেরাপিউটিক ডিভাইস, আইস এবং হিট ব্যবহার করা হয়। 

বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর যুদ্ধাহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে এই ফিজিওথেরাপি পেশার অগ্রযাত্রা শুরু হয়।এরপর বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) বাংলাদেশ সরকারের স্বীকৃতিতে ২০০১ সালে গঠিত হয়েছিল। বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশন (BPA) ২০০৬ সালে ওয়ার্ল্ড কনফেডারেশন অফ 
ফিজিক্যাল থেরাপিস্ট (WCPT) এর অস্থায়ী সদস্যপদ লাভ করে। অবশেষে, ২০০৭ এ WCPT-এর পূর্ণ সদস্যপদ প্রদান করে।
বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি এসোসিয়েশনের কল্যানে ক্রীড়াখাতেও স্পোর্টস ফিজিওরা কাজ করা শুরু করেছে। বাংলাদেশে এখন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অধীনে অনেক ফিজিও সাফল্যের সহিত কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু যে পরিমাণ ফিজিও দরকার সেই পরিমান ফিজিও সব জায়গায় নেই। 

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় খেলোয়াড়দের ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা করে এবং দেশের স্বার্থে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্নাতকপাশ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক সরকারী পর্যায়ে নিয়োগ করে দেয় এবং তাদের উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা করে দেয়। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ইনজুরিজনিত কারণে আর কোনো ক্রীড়াবিদ যেন হারিয়ে না যায়।

তামজিদ হোসেন: ব্যাচেলর অব ফিজিওথেরাপি, বাংলাদেশ হেলথ্ প্রফেশনস্ ইনস্টিটিউট। সিআরপি, সাভার, ঢাকা।

এটি/এইচএমএ