গেল বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়ার পর তাকে নিয়ে কম সমালোচনা হয়নি। তবে সিডনি-অ্যাডিলেডের মাঠে ব্যাট হাতেই সেসব সমালোচনা বা ট্রলের জবাব দিয়েছেন তিনি। টুর্নামেন্ট শেষে হয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও। এতক্ষণে হয়তো বুঝতে বাকি নেই কার কথা বলা হচ্ছে। হ্যাঁ, টাইগার ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তর কথাই বলা হচ্ছে।   

সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল) ব্যাট হাতে নিজের সক্ষমতার জানান দিয়েছেন শান্ত। আসর জুড়ে ব্যাট হাতে প্রতিপক্ষ বোলারদের নাভিশ্বাস তুলেছেন বাঁহাতি এ ব্যাটার। হয়েছেন বিপিএলের নবম আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও। ১৫ ম্যাচে ৩৯.৬৯ গড়ে ৫১৬ রান করেছেন শান্ত। ১১৬.৭৪ স্ট্রাইক রেটে চারটি ফিফটিও করেছেন তারকা ওপেনার।   

প্রথমবারের মতো বিপিএলের টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কারও গেছে তার হাতে। তবে এতো এতো সাফল্য যে আসবে টুর্নামেন্ট শুরুর আগেও ভাবেননি ২৪ বছর বয়সী এ ব্যাটার। আর অনেক সাফল্য পেলেও শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হতে না পারার আক্ষেপটা রয়ে গেছে এই ব্যাটারের। ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপাকালে শান্ত জানিয়েছেন সেই আক্ষেপের কথা। এছাড়াও কথা বলেছেন ইংল্যান্ড সিরিজে নিজের লক্ষ্য নিয়ে। 

প্রশ্ন: ব্যাট হাতে রাঙিয়েছেন এবারের বিপিএল। কেমন লাগছে সবমিলিয়ে? 

শান্ত: আলহামদুলিল্লাহ খুবই ভালো হয়েছে। চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে আরও ভালো লাগত। কিন্তু সবমিলিয়ে বলব ভালো। 

প্রশ্ন: বিপিএলে দর্শকরা আপনার ব্যাটিং বেশ উপভোগ করেছে, সামনে দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল কিনা?

শান্ত: না, আসলে দায়িত্ব কিন্তু সবসময় একইরকম থাকে। আমি সবসময় চিন্তা করি কীভাবে রান করতে পারি এবং কীভাবে দলের জন্য কন্ট্রিবিউট করতে পারি। 

প্রশ্ন: বিপিএল শুরুর আগে কি ভেবেছিলেন এবার টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হবেন?

শান্ত: না, কখনোই এরকম চিন্তা ছিল না। আমার কাজ একটাই ছিল যে আমি কিভাবে প্রতি ম্যাচে দলের হয়ে ব্যাট হাতে অবদান রাখতে পারি। 

প্রশ্ন: ব্যাট হাতে নামলেই রানের দেখা পাচ্ছেন। এর পেছনে বিশেষ কোনো রহস্য আছে কি?

শান্ত: কিছুদিন আগেও বলেছি, আমি চেষ্টা করছি নিজের স্কিল বাড়ানোর। যখন হচ্ছে না, তখন সেই জায়গাগুলো নিয়ে কাজ করছি। এখনও অনেক জায়গায় কাজ করা বাকি। উন্নতির অনেক জায়গা আছে, ঐ জায়গাতেই আমি চোখ রেখেছি। চেষ্টা করছি, দেখা যাক কী হয়। তবে আমি বুঝতে পারছি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে কারণ আমি ফল পাচ্ছি ধীরে ধীরে।  

প্রশ্ন: ‘এভাবেও ফিরে আসা যায়’ ভারতের জনপ্রিয় এক গানের লাইন। বাজেভাবে ট্রল কিংবা সমালোচনার পর এই গানটার সঙ্গে নিজের পারফরম্যান্সের প্রাসঙ্গিকতা খুঁজে পান কিনা?

শান্ত: আমার মনে হয় এটা প্রত্যেকটা মানুষের জীবনেই। বাংলাদেশের যারা ক্রিকেট খেলোয়াড় আছে সবার জীবনেই কোনো না কোনো সময়ে হয়েছে। সুতরাং এটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার সুযোগ নেই।

প্রশ্ন: বিপিএলের এবারের আসরে সিলেট ফ্র্যাঞ্চাইজি থেকে যতোটা আশা ছিল সবটুকু পেয়েছেন কিনা? 

শান্ত: অবশ্যই। আমার মনে হয় যতগুলো বিপিএল খেলেছি সবথেকে ভালো ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে এবার খেলেছি। খুবই উপভোগ করেছি এবং টিমের মালিকপক্ষ খুবই সাপোর্টিভ ছিল। ভালো সময় কিংবা খারাপ সময় বলেন সবসময় তারা পাশে ছিল।  

প্রশ্ন: বিপিএল ফাইনাল হারের রাতটা একটু মন খারাপ ছিল কিনা? 

শান্ত: মন তো একটু খারাপ হয়েছেই। কিন্তু একটা দল জিতবে একটা দল হারবে এটাই স্বাভাবিক। ক্রিকেটের একটা অংশ এটাই। তবে আমরা পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই ভালো ক্রিকেট খেলেছি।

প্রশ্ন: আপনি নিজে পরপর তিন বার ফাইনাল ম্যাচ হেরেছেন। এটা বেশি কষ্টদায়ক কিনা? 

শান্ত: না। সেটা না হয়ে যদি ফাইনাল খেলতে না পারতাম সেটা আরও কষ্টদায়ক হতো। ফাইনাল তো খেলতে পারছি, আশা রাখছি সামনে চ্যাম্পিয়ন হব ইনশাআল্লাহ। 

প্রশ্ন: ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে আপনার ব্যক্তিগত চাওয়া কি থাকবে? 

শান্ত: ব্যক্তিগত লক্ষ্য বলতে দলের পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করা এবং চেষ্টা থাকবে দলের জন্য প্রতিটি ম্যাচেই সর্বোচ্চটা দিয়ে অবদান রাখার।  

প্রশ্ন: ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে সিরিজে কেমন করবে বাংলাদেশ, আপনার ব্যক্তিগত মতামত?

শান্ত: ইংল্যান্ড অনেক ভালো দল, আমরাও ভালো দল। সবমিলিয়ে একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেট হবে আশা করি।

এসএইচ/এনইআর