ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের মাঠে দাপট দেখিয়ে সিরিজের প্রথম দুটি ওয়ানডে জিতে নিয়েছে আফগানিস্তান। দ্বিতীয় ম্যাচে তো সফরকারীরা লিটন দাসদের দাঁড়াতেই দেয়নি। একমাত্র মুশফিকুর রহিম (৬৯ রান) ছাড়া উল্লেখযোগ্য রান পাননি অন্য কোনো টাইগার ব্যাটার। ফলে ১৪২ রানের ব্যবধানে ম্যাচের সঙ্গে সিরিজও হেরে গেছে স্বাগতিকরা। সিরিজের দুটি ম্যাচেই গ্যালারিতে নজর কেড়েছেন আফগান সুন্দরীরা!

বাংলাদেশের সঙ্গে এর আগেও সিরিজ খেলেছিল আফগানিস্তান। কিন্তু দেশের মাঠে তাদের দর্শকের এমন উপস্থিতি আগে দেখা যায়নি। রশিদ খানরা যখন মাঠে দারুণ নৈপুণ্য দেখাচ্ছিলেন, তখন গ্যালারি মাতাচ্ছিলেন এক ঝাঁক স্বদেশি দর্শক। ফলে দেশের বাইরে খেললেও একদমই সমর্থনহীন ছিলেন না রশিদরা।

জানা গেছে, শনিবার (৮ জুলাই) অনুষ্ঠিত ম্যাচে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রায় একশ আফগান তরুণী হাজির ছিলেন। তাদের বসার আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছিল আয়োজকদের পক্ষ থেকে। মাঠে আসা আফগান মেয়েদের মধ্যে বেশিরভাগই এসেছেন বাংলাদেশে পড়াশোনা করতে। চট্টগ্রামে অবস্থিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের শিক্ষার্থী তারা।

গ্যালারিতে উপস্থিত তরুণীদের কেউ ওড়াচ্ছেন লাল, সবুজ ও কালোর সমন্বয়ে গড়া আফগানিস্তানের পতাকা, আবার কেউবা মুখে এঁকেছেন জাতীয় পতাকা। তীব্র গরম উপেক্ষা করে তার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহীম জাদরানদের একেকটি বাউন্ডারি উল্লাসে মেতে ওঠেন। গ্যালারিতে নীরব প্রতিবাদ করতেও দেখা গেল ৮ জনের একটি দলকে। যারা ঢাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) শিক্ষার্থী। তবে সেই প্রতিবাদ তালেবান শাসনের বিরুদ্ধে।

কাবুল থেকে এশিয়ান ইউনির্ভাসিটিতে পড়তে আসা ইসমায়া বলছেন, ‘আমি এসেছি পড়াশোনা করতে। বাংলাদেশে এসে তাও স্বাধীনভাবে শ্বাস নিতে পারছি আমরা। আমাদের দেশে এমনভাবে খেলা দেখাই যায় না। সেখানে আমাদের হাত-পা কার্যত বাঁধা। বাংলাদেশে এসে বুঝেছি, স্বাধীনতা কী জিনিস।’

নাসির, এনায়েতউল্লাহদের মতো ছাত্রীদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে তুরস্কের একটি ফাউন্ডেশন। যারা মহিলা ও শিশুর মৌলিক অধিকার নিয়ে কাজ করে। অনেকে আবার বাংলাদেশে এসেছেন বহুজাতিক সংস্থায় চাকরি করার সুবাদে। ছুটি নিয়ে খেলা দেখতে এসে দারুণ উপভোগ করলেন চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামের পরিবেশ।

আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের ক্ষমতায় বসার পর থেকে মেয়েদের চলাফেরায় নানা বিধি-নিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। ফলে রাস্তা কিংবা গ্যালারিতে তাদের উপস্থিতি অনেকটাই কঠিন। তবে সংগঠনটি সরকারে আসার পর ধারণা করা হয়েছিল রশিদদের ক্রিকেটে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে। কিন্তু সেই শঙ্কাকে পাশ কাটিয়ে উল্টো ক্রিকেটে দেশটির পৃষ্ঠপোষকতার কথাই জানা যায়।

এএইচএস