‘দর্শকদের আনন্দ দিতেই’ পাকিস্তানের রোমাঞ্চকর জয়!
সেঞ্চুরির পর সঙ্গী ইমামকে জড়িয়ে ধরে বাবরের উদযাপন/আইসিসি
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৫০ ওভারে ২৭৩/৬ (ফন ডার ডাসেন ১২৩*, মিলার ৫০, ফেলুকওয়ায়ো ২৯, রাবাদা ১৩*; আফ্রিদি ৬১-২, ফাহিম ২৫-১, রউফ ৭২-২)।
পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ২৭৪/৭ (ইমাম ৭০, বাবর ১০৩, রিজওয়ান ৪০, শাদাব ৩৩; রাবাদা ৫১-১, নরকিয়া ৫১-৪, ফেলুকওয়ায়ো ৫৬-২)।
ফলাফল: পাকিস্তান ৩ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে পাকিস্তান।
ম্যাচসেরা: বাবর আজম।
২৭৪ রানের লক্ষ্য। আধুনিক ক্রিকেটে এ আর এমন কী! ইমাম উল হক আর বাবর আজমের ব্যাটিংয়ে লক্ষ্যটা সহজই মনে হচ্ছিল পাকিস্তানের। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে শেষমেশ সেই রানটা কিনা পাকিস্তান তাড়া করল একেবারে শেষ বলে, দারুণ রোমাঞ্চ ছড়িয়ে! এরপর ইমাম তো রসিকতাই করে বসলেন। জানালেন, ‘দর্শকদের বিনোদন দিতেই মাঝে এমন পথ হারিয়েছিল পাকিস্তান’!
বিজ্ঞাপন
যে কোনো রানের লক্ষ্যই হোক, তাড়া করায় পাকিস্তান খুব একটা দক্ষ নয়। লক্ষ্যটা যখন ২৭০ পেরিয়ে যায়, শেষ দশ বছরে পাকিস্তানের তাড়া করার হারটাও যায় কমে। এ সময়ে কেবল পাঁচ বার এর চেয়ে বেশি রান তাড়া করার কীর্তি আছে দলটির। সংখ্যাটা আয়ারল্যান্ডের সমান, আর জিম্বাবুয়ে বাদে বাকি সব পূর্ণ সদস্য এমন লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছে পাকিস্তানের চেয়ে বেশি। তাই দলটির বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার ছুঁড়ে ২৭৪ রানের লক্ষ্যকে নিরাপদই মনে হচ্ছিল ইনিংস বিরতির সময়।
তবে বাবর আজম আর ইমাম উল হকের জুটিতে কাজটা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছিল সফরকারীদের। ফখর জামানকে দ্রুত হারানোর পর দু’জন গড়েন ১৭৭ রানের জুটি। তবে দলীয় ১৮৬ রানে বাবরের উইকেট পড়তেই শুরু হলো আসা যাওয়ার মিছিল। আর ১৭ রান যোগ করতেই নেই ইমাম, দানিশ আজিজ ও আসিফ আলির উইকেট। অননুমেয় পাকিস্তান তখন কাঁপছে আরেকটা হারের শঙ্কায়। মোহাম্মদ রিজওয়ান আর শাদাব খান মিলে এরপর ৫৩ রানের জুটি গড়ে পরিস্থিতি সামাল দিলেন কিছুটা। ২৫৬ রানে ফিরলেন রিজওয়ান, শাদাব ছিলেন বলে ১৬ বলে ১৮ রানের চাহিদাটা খুব বড় ঠেকছিল না। পরের ১১ বলে ১৫ রান তুলে কাজটা আরও একটু সহজ করে দিয়েছিলেন শাদাব, ফিরলেন এরপরই।
বিজ্ঞাপন
পরের তিনটি বল ডট হওয়ায় শঙ্কা ক্রমেই বাড়ছিল। কিন্তু এরপর দুই বলে তিন রান তুলে নেন ফাহিম আশরাফ। রাসি ফন ডার ডাসেনের অনবদ্য শতকে ভর করে দক্ষিণ আফ্রিকার ছুঁড়ে দেওয়া ২৭৪ রানের চ্যালেঞ্জটাও রোমাঞ্চকরভাবে তাড়া করে ফেলে পাকিস্তান।
এরপরই ইমামের সেই রসিকতা, ‘আপনি জানেন, এই মহামারি সবাইকেই দুঃখী করে তুলছে শেষ এক বছরে, আমরা ভাবলাম, কেন না আমরা তাদের কিছুটা বিনোদন উপহার দিই!’ তবে এরপরই আবার গম্ভীর কথায় ফিরে এলেন ইনজামাম উল হকের ভাইপো। জানালেন, পাকিস্তানকে ‘বড় দল’ হয়ে ওঠতে হলে আরও উন্নতি করতে হবে। বললেন, ‘যদি আপনি বড় টুর্নামেন্ট জিততে চান, শীর্ষ তিন দলের দিকে তাকান, তাহলে দেখবেন তাদের শীর্ষ তিন ব্যাটসম্যানের কেউ যদি থিতু হয় তাহলে তারা কেবল ১০০ করে না, ১৫০তে চোখ রাখে। এটাই আমরা করতে চাই। যেমন বাবর আর আমি আজকে উইকেটে থিতু হয়েছিলাম, কিন্তু আমাদের আজকে ম্যাচটা শেষ করে আসা উচিত ছিল।’
এমন ‘রোমাঞ্চকর’ জয়ও আর চান না ইমাম। বললেন, ‘অনেক দিন পর আন্তর্জাতিক ওয়ানডে খেলছি আমরা, আর আমরা আমাদের ভুলগুলো থেকে শিখতে চাই। এই ৭০-৮০ রানের ইনিংসগুলোকে আমরা ম্যাচ জেতানো ইনিংসে রূপ দিতে চাই, এই ধরনের জয়গুলোকে ৬-৭ উইকেটের জয় বানাতে চাই।’ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৪ এপ্রিল পাকিস্তান লড়বে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
এনইউ