বিশ্বকাপে অঘটনের শিকার হতে যেন ইংল্যান্ডই জনপ্রিয়। ২০১১ তে ইংলিশদের হারিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। সেই আসরেই আবার বাংলাদেশের কাছে হার। ২০১৫ সালেও একইভাবে টাইগারদের হাতে নাস্তানাবুদ হওয়া। মাঝে এক আসর বিরতি দিয়ে ২০২৩ বিশ্বকাপের প্রথম অঘটনের সঙ্গেও মিশে আছে ইংল্যান্ড। যেখানে তাদের বধ করেছে আফগানিস্তান। 

২০২৩ বিশ্বকাপের ১০ম দিনে এসে দেখা গেল চমক। মাঝে রানবন্যা, সেঞ্চুরি এসব দেখা গেলেও সেই অর্থে নাটকীয় কোন ম্যাচ দেখা যায়নি। দিল্লিতে সেই অতৃপ্তি মিটিয়েছে ইংল্যান্ড-আফগানিস্তান ম্যাচ।  নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৬৯ রানে হারিয়েছে আফগানরা। যেখানে নিজের বোলিং দিয়ে দলের জয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন আফগান স্পিনার মুজিব-উর রহমান। 

৫১ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। আর ব্যাট হাতে ছিল ১৬ বলে ২৮ রানের ঝলক দেখানো ইনিংস। ম্যাচসেরার পুরস্কার পেতে সমস্যা হয়নি মুজিবের। তবে এমন দিনেও নিজ দেশের দূর্গত মানুষদের ভোলেননি তিনি। ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার নিজ দেশের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন মুজিব। 

ম্যাচসেরার পুরস্কার নিতে এসে মুজিব বলেন,  ‘আমি এই পুরস্কার (ম্যাচ সেরার পুরস্কার) দেশের মানুষকে উৎসর্গ করছি, যারা ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটা এমন কিছু যা দল হিসেবে এবং ব্যক্তিগতভাবে আমি করতে পারি।’

অপ্রত্যাশিত পারফর্মে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে আফগানরা। এই জয় দিয়ে বিশ্বকাপে টানা পরাজয়ের রেকর্ডের ইতি ঘটিয়েছে দেশটি। স্বাভাবিকভাবেই এমন জয় তাদের জন্য বিশেষ কিছু, ‘বিশ্বকাপে আসতে পারা এবং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারাতে পারার মুহূর্তটা গর্বের। দলের জন্য এটা দারুণ অর্জন। এটা এমন কিছু যার জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি। আমরা অনেক বড় একটি দলকে হারিয়েছি। বোলার এবং ব্যাটসম্যানরা দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে।’

অধিনায়কের কথায় ইনিংসের প্রথম ওভারেই এসেছিলেন মুজিব। যেমনটা সচরাচর দেখা যায় না। তবে বল হাতে এটাই নিয়মিত করছেন তিনি। কথা বললেন সে নিয়েও ‘স্পিনার হিসেবে পাওয়ার প্লেতে বল করাটা বেশ কঠিন। কারণ বাইরে কেবল দুজন ফিল্ডার থাকে। আমি নেট অনুশীলনে নতুন বলে বল করেছি এবং যথাসম্ভব ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। এটাই আমাকে অনেক বেশি কার্যকর করে তুলেছে। বাইরে বল ফেলার মতো ভুলের সুযোগ এখানে নেই, তাই আমি উইকেট লক্ষ্য করে বল করেছি। আমরা জানতাম শিশির এখানে ভূমিকা রাখবে, তাই আমি পাওয়ার প্লেতে বল করতে চেয়েছি। আমরা মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম। আমি চেয়েছি ব্যাটসম্যানদের খুব বেশি জায়গা না দেওয়ার এবং ঠিকঠাক জায়গায় বল করার।

শুধু বোলিংয়েই না, ব্যাট হাতেও এদিন ভূমিকা রেখেছেন মুজিব। ১৬ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় করেছেন ২৮ রান। ব্যাটিংয়ের কৃতিত্বটা অবশ্য ম্যানেজমেন্টকেই দিয়েছেন এই আফগান তারকা, ‘ব্যাটিংয়ের কৃতিত্ব ম্যানেজমেন্টকে দিতে হবে। তারা আমাদের আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। আমি চেয়েছি লোয়ার অর্ডারে নিজের অবদান রাখার। সেই ২৫-৩০ রান দলকে সাহায্য করেছে। আমি চাই এটা চালিয়ে যেতে।’

এসএইচ/জেএ