পুরুষশূন্য স্টেডিয়াম, ইরানে বিচিত্র অভিজ্ঞতা দ্রুততম মানবীর
শিরিন আক্তার। ফাইল ছবি
বাংলাদেশের দ্রুততম মানবী শিরিন আক্তার গত এক দশকে দেশের বাইরে অনেক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। আজ ইরানের তেহরানে এশিয়ান ইনডোর অ্যাথলেটিক্সে একেবারেই ভিন্ন এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলেন তিনি।
জাতীয়-আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় নারী-পুরুষ ইভেন্ট সমানতালে চলে। পুরুষদের একটি ইভেন্ট শেষ হওয়ার পরপরই শুরু হয় নারীদের ইভেন্ট। নারী-পুরুষ অ্যাথলেট, কর্মকর্তা কোচ এক সঙ্গেই অবস্থান করেন স্টেডিয়ামে। ইসলামী প্রজাতন্ত্রের দেশ ইরানে এশিয়ান ইনডোর অ্যাথলেটিক্স আয়োজন হচ্ছে একটু ব্যতিক্রমভাবে।
বিজ্ঞাপন
নারীদের ইভেন্টগুলো অনুষ্ঠিত হচ্ছে সকালে আর পুরুষদের বিকেলে। নারীদের ইভেন্টের সময় কোনো পুরুষ গ্যালারিতেও থাকতে পারেন না। ইরানের তেহরান থেকে এমনটাই জানালেন বাংলাদেশের দ্রুততম মানবী, ‘এটা আসলে আমাদের ভিন্ন এক ধরনের অভিজ্ঞতা। নারীদের ইভেন্টের সকল কিছুই নারীরা করছেন- ফটো ফিনিশিং, জাজিং থেকে শুরু থেকে সব কিছুর তত্ত্বাবধায়ক নারীরা। কোনো পুরুষ থাকেন না নারীদের ইভেন্টের সময়।’
বাংলাদেশ দলের দলনেতা ও টিম অফিসিয়াল দুই জনই পুরুষ। শিরিনের ইভেন্টের সময় তারা মূল স্টেডিয়ামের বাইরে অপেক্ষমান ছিলেন। স্টেডিয়ামের বাইরে থেকে অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টু বলেন, ‘শিরিন স্টেডিয়ামে পৌঁছানোর পর আমরা বাইরে অপেক্ষা করছি। নারীদের ইভেন্টের সময় পুরুষদের প্রবেশাধিকার নেই। আমাদের মতো অন্য দেশের পুরুষ কোচ, অফিসিয়ালরাও বাইরে অবস্থান করছেন। নারীদের খেলায় লাইভ বা ভিডিও হচ্ছে না।’
বিজ্ঞাপন
ইভেন্টের সময় কোচ-অফিসিয়ালদের নানা ভূমিকা থাকে। বাংলাদেশি কাউকে না পেলেও নিজের পারফরম্যান্সে কোনো প্রভাব পড়েনি বলে জানালেন শিরিন, ‘বাংলাদেশের কেউ থাকলে একটু উৎসাহ বা উদ্দীপনা পেতাম। তবে বাংলাদেশি কেউ না থাকায় অবশ্য আমার পারফরম্যান্সে কোনো সমস্যা হয়নি।’
৬০ মিটার স্প্রিন্টে শিরিন ৭.৮৬ সেকেন্ড সময় নিয়েছেন। তিনি সামগ্রিকভাবে ১৩ তম হয়েছেন। ফাইনালে উঠতে না পারায় খানিকটা আফসোস রয়েছে তার, ‘গত আসরে সেমিফাইনাল ছিল। এবার সরাসরি ফাইনাল থাকায় বাদ পড়ে গেলাম। সেমিফাইনাল থাকলে আবার খেলার সুযোগ পেতাম। তবে টাইমিং এবং অংশগ্রহণ করতে পারায় সন্তুষ্ট।’
ইরানের তেহরান থেকে ঢাকায় যোগাযোগ সমস্যায় পড়ছে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল। গতকাল ৪০০ মিটার স্প্রিন্টে জহির রায়হানের ফলাফল দেশে অবহিত করতে গলদঘর্ম হতে হয়েছে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের, ‘স্টেডিয়ামে গতকাল একেবারে নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়নি। যা আসলে অবিশ্বাস্য মনে হলেও প্রকৃত অর্থে সত্যি। স্টেডিয়াম থেকে দেড় ঘণ্টা দূরত্বে হোটেলে পৌঁছে ইন্টারনেট পাওয়া গেছে।’
গতকাল এই সমস্যায় পড়ায় কাল রাত থেকেই বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের কর্মকর্তারা নানা উদ্যোগ নিয়েছেন, ‘কালকের ঘটনার পর আমরা আবার পুনরায় সিম, ভিপিএনসহ অনেক কিছুই করছি কানেকটেড থাকার জন্য’-বলেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। এতে অবশ্য পরিস্থিতি খানিকটা উন্নতি হয়েছে। আজ সকালে দেশে অনেকের সঙ্গে এই মাধ্যমে কথা বলতে পেরেছেন তেহরান থেকে। বিকেলে ইমরান, জহিরদের খেলার সময় কেমন পরিস্থিতি হয় সেটাই দেখার বিষয়।
এজেড/এফআই