রাওয়ালপিন্ডিতে চার পেসার নিয়ে মাঠে নেমেছিল পাকিস্তান। একাদশে ছিল না কোনো বিশেষজ্ঞ স্পিনার। অন্যদিকে বাংলাদেশের একাদশে ছিল তিন পেসার। সাকিবসহ দুই স্পিনার ছিলেন সফরকারীদের একাদশে। দুই দলের পরিকল্পনায় বেশ ফারাক ছিল। শেষ পর্যন্ত ঘরের মাঠে ব্যর্থ পাকিস্তান, সফল হয়েছে বাংলাদেশ।

রাওয়ালপিন্ডিতে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছিল পাকিস্তান। প্রথম ইনিংসে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৫৬৫ রান করে বাংলাদেশ, লিড পায় ১১৭ রানের। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৬ রানের বেশি করতে পারেনি স্বাগতিকরা। ৩০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়েই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, 'আমার মনে হয় না (ভুল করেছে)। আমি সবাই জানি পেস বোলিং ওদের শক্তির জায়গা। আমাদের শক্তি…গত কয়েক বছর আমরা পেস বোলিংয়ে ভালো করছি, পাশাপাশি স্পিন। আমার মনে হয় না ওরা উইকেট পড়তে ভুল করেছে। আমরা ভালো বোলিং করেছি। ওদের বোলাররাও ভালো বোলিং করেছে। তবে আমাদের ব্যাটসম্যানরাও খুবই ভালো ব্যাটিং করেছে, বিশেষ করে এই গরমে। আমাদের ওপেনারদের প্রথম ইনিংসের প্রথম ১২ ওভারের ব্যাটিংটা খুব ভালো ছিল।'

সাদমানের লড়াকু ৯৩ রানের পর মুশফিকের ১৯১ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে বাংলাদেশ পায় ৫৬৫ রানের বড় সংগ্রহ। সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজের ৭৭ রানের সঙ্গে লিটন দাসের ৭৮ বলে ৫৬ ও মুমিনুল হকের ৫০ রানে বাংলাদেশ ১১৭ রানের বড় লিড পায়। চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে পাকিস্তানের একটি উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশ নিজেদের কাজটা একটু এগিয়েই রেখেছিল। শান্ত জানিয়েছেন জেতার আত্মবিশ্বাস নিয়েই শেষদিন মাঠে নেমেছিলেন তারা।

শান্ত বলেন, 'হ্যাঁ, এটা দারুণ অনুভূতি। আজ সকালে যখন মাঠে এসেছিলাম, তখন আমরা ম্যাচটা জিততে পারব, এই বিশ্বাস করেছিলাম। কারণ আমরা ৯৪ রানে এগিয়ে ছিলাম। উইকেটও কঠিন মনে হচ্ছিল, স্পিনাররা ভালো সাহায্য পাচ্ছিল। পেসারদের বলও উঁচু-নিচু হচ্ছিল। আমরা বিশ্বাস করেছিলাম যদি ঠিক জায়গায় বল করি, তাহলে আমরা ওদের হারাতে পারব। সেটাই হয়েছে।'

রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের পঞ্চম ও শেষদিন। সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তান গুটিয়ে যায় ১৪৬ রানে। ফলে বাংলাদেশের সামনে দাঁড়ায় মাত্র ৩০ রানের মামুলি লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য কোনো উইকেট না হারিয়েই জিতে গেছে বাংলাদেশ। প্রথম টেস্টে জয়ের পর দ্বিতীয় টেস্টেও জয়ে চোখ শান্ত।

সেই লক্ষ্যের কথা জানিয়ে তিনি বলেছেন, 'পরের ম্যাচটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাচটা কিন্তু শেষ। এখন এই মুহূর্তটা উপভোগ করে পরের টেস্টের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। আমাদের চিন্তা করতে হবে কিভাবে পরের ম্যাচটা জিততে হবে। আমরা বিশ্বাস করি পরের ম্যাচটাও জিততে পারি। তবে এটা একটা প্রক্রিয়ার বিষয়। এখন কিভাবে জিততে পারবে তা নিয়ে না ভেবে কিভাবে সেশন ধরে ধরে খেলা যায়, তা নিয়ে ভাবতে হবে। শান্ত থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি সেশন নিয়ে চিন্তা করা গুরুত্বপূর্ণ।'

এইচজেএস