প্রথম ইনিংস, প্রথম ডেলিভারি, মিচেল স্টার্ক এবং উইকেট!

অ্যাডিলেড টেস্টের প্রথম বলের গল্পটা ঠিক এমনই ছিল। যশস্বী জয়সওয়ালকে ইনিংসের প্রথম বলেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে স্বাগতিকদের ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছিলেন স্টার্ক। নীতিশ কুমারকে ফিরিয়ে ভারতীয় ইনিংসের শেষ পেরেকটাও ঠুকে দিলেন তিনি।

গোলাপি বলের টেস্টের প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার এই পেসারের তোপে দাঁড়াতে পারল না ভারত। নীতিশ কুমার রেড্ডির মান বাঁচানো ৫৪ বলে ৪২ রানের ইনিংসের পরও শেষ পর্যন্ত সফরকারীরা গুটিয়ে গেছে ১৮০ রানে। স্টার্ক একাই শিকার করেছেন ৬ উইকেট।

বল হাতে জ্বলে উঠার দিনে ক্যারিয়ার সেরা স্পেলটাই করলেন অস্ট্রেলিয়া পেসার। গোটা ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ভারতের বিপক্ষে পাঁচ বা ততোধিক উইকেট শিকার করলেন। 

দিবারাত্রীর এই টেস্ট ঘিরে উন্মাদনার কমতি ছিল না। বিশেষ করে গত সফরে এই অ্যাডিলেডেই দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৩৬ রানে অলআউটের লজ্জায় পড়েছিল ভারত। এবার অবশ্য কিছুটা আত্মবিশ্বাস নিয়েই অ্যাডিলেডে খেলতে নামার সুযোগ পায় সফরকারীরা।

এবারের বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজের প্রথম টেস্টের ভেন্যু ছিল পার্থে। প্যাট কামিন্সদের বিপক্ষে ২৯৫ রানের রেকর্ড জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে রয়েছে ভারত। সিরিজে সমতার লক্ষ্যে বল হাতে দারুণ শুরু করেছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া।

আজ (শুক্রবার) অ্যাডিলেড ওভালে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। এই ম্যাচ দিয়ে রোহিত দলে ফিরলেও ওপেনিংয়ে জয়সওয়ালের সঙ্গে ছিলেন কেএল রাহুল। কিন্তু প্রথম বলেই বিপর্যয়। এলবিডব্লু হয়ে ফেরেন জয়সওয়াল।

স্টার্কের ১৪০.৪ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে ছুটে আসা বল আঘাত হানে গিয়ে পায়ে। বলের সুইং বুঝতে পারেননি ভারতীয় ওপেনার। লেগ স্টাম্প বরাবর ধেয়ে আসা বল সোজা উইকেটের দিকে গিয়ে ঢোকে। ভেবেছিলেন বলটি বাইরে যাবে। লাইন ফস্কে এলবিডব্লিউ হন তিনি। 

শূন্য রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর ভারতের ইনিংসের হাল ধরেন রাহুল ও শুভমান গিল। কিন্তু ফের স্টার্কের অতিরিক্ত বাউন্সের শিকার হন রাহুল। কিছুক্ষণ পরে ফিরে যান কোহলিও। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরির পর এদিন তিনি আউট হলেন মাত্র ৭ রানে। ৮১ রানের মাথায় শুভমান গিলেরও উইকেট হারায় ভারত। অজি পেসারদের সামনে আবারও ভেঙে পড়ে ভারতীয় ব্যাটিং লাইন-আপ। প্রথম সেশনে একশো রান পেরোনোর আগেই ভারতের চার উইকেট পড়ে যায়। 

রাহুলকে ওপেনিংয়ের জায়গা ছেড়ে দিয়ে ছয় নম্বরে নেমেছিলেন অধিনায়ক রোহিত। কিন্তু ব্যাটিং অর্ডারে বদল আনার দিনে সাফল্য পেলেন না। স্কট বোলান্ডের বলে ৩ রান করে ফিরে যান তিনি। ঋষভ পন্তও প্যাট কামিন্সের আচমকা অতিরিক্ত বাউন্সে আউট হলেন।

শেষ পর্যন্ত ইনিংসের হাল ধরেন নীতীশ কুমার রেড্ডি। কিন্তু শেষের দিকে অজি পেসারদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করেন নীতীশ। ৫৪ বলে ৪২ রান করেন তিনি। ৩টি চার ও ৩টি ছয়ে সাজানো ছিল তার ইনিংস। ২২ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন অশ্বিন। শেষ পর্যন্ত ভারত থামে ১৮০ রানে। স্টার্কের ৬ উইকেট ছাড়াও দুটি করে শিকার করেছেন কামিন্স ও বোলান্ড। 

এফআই