নিজেদের প্রাপ্য টাকাই ক্রিকেট বোর্ডের কাছে চেয়েছিলেন তারা। কিন্তু সেটাই যেন কাল হয়ে দাঁড়াল। টাকা চাওয়ার অপরাধে বোর্ডের কাছ থেকে চাকরি হারিয়ে হারিয়েছেন। ক্যারিয়ার শেষ হয়েছে। অনেককেই দেশ পর্যন্ত ত্যাগ করতে হয়েছে। ভিনদেশে, ভিন্ন পেশায় কী করবেন তা এখন অজানা। অথচ এক বছর আগেও তারা ছিলেন আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলের তারকা। 

দুঃখজনক এই ঘটনা ঘটেছে ওমান জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে। ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল মধ্যপ্রাচের উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশটি। ম্যাচ না জিতলেও টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের জন্য আইসিসি ১৩ থেকে ২০তম স্থানে থাকা দলগুলোকে ২ লাখ ২৫ হাজার মার্কিন ডলার পেয়েছিল তারা।

আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার ২১ দিনের মধ্যে প্রাইজমানির অর্থ সংশ্লিষ্ট বোর্ডের মাধ্যমে খেলোয়াড়দের কাছে পৌঁছানোর কথা। তবে বিশ্বকাপের প্রায় ১ বছর পেরিয়ে গেলেও ওমান ক্রিকেট বোর্ড এখনো সেই অর্থ খেলোয়াড়দের দেয়নি।

আর এই টাকা চাইতে গিয়েই বিপর্যয় নেমেছে ওমান জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের। ইএসপিএন ক্রিকইনফোর এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তাদের এই মর্মান্তি পরিণতির খবর। ওমান দলের ওপেনার কাশ্যপ প্রজাপতি বলেন, 'এই ঘটনার কারণে আমাদের জীবন, ক্যারিয়ার, সব এলোমেলো হয়ে গেছে। দল থেকে বাদ পড়েছি, চুক্তি বাতিল হয়েছে, কেউ কেউ ওমান ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। বোর্ড তো টাকা দেয়ইনি, আইসিসিও নিশ্চিত করতে পারছে না আমরা সেটা পাবো কিনা!'

আইসিসির সহযোগী এই দেশের খেলোয়াড়দের দাবি, ২০২১ সালের বিশ্বকাপেও তারা জানতেন না বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের জন্য কোনো প্রাইজমানি বরাদ্দ থাকে। ২০২৪ বিশ্বকাপে খেলার পর বিদেশি দলগুলোর খেলোয়াড়দের কাছ থেকেই প্রথম জানতে পারেন বিষয়টি। 

বোর্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার কারণে অনেকে স্কোয়াড থেকেই বাদ পড়েছেন। ইমার্জিং এশিয়া কাপে খেলতে অস্বীকৃতি জানালে কিছু খেলোয়াড়কে হোটেল ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়। 

ওমানের হয়ে খেলা ফাইয়াজ বাট বলেন, 'এই ঘটনায় আমার ক্যারিয়ার শেষ। এখন ওমানে নেই, চাকরিও নেই। খেলোয়াড় হিসেবে আমি শেষ হয়ে গেছি।'

ওমানে ক্রিকেটারদের কোনো ইউনিয়ন না থাকায় তারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের সংগঠন ‘ওয়ার্ল্ড ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সহায়তা নেন। সংগঠনটি জানায়, কেবল ওমান নয়, আরও কয়েকটি অ্যাসোসিয়েট সদস্য বোর্ড খেলোয়াড়দের পুরো অর্থ দেয়নি। কেউ কেউ ২০% থেকে ৭০% পর্যন্ত দিয়েছে।

জেএ