ঘরোয়া টুর্নামেন্টকে বলা যায় একটি দেশের ক্রিকেটের মেরুদণ্ড। বিশেষ করে জাতীয় লিগ থেকেই মূলত তৈরি হয় বিভিন্ন ফরম্যাটের পাইপলাইন। বাংলাদেশেও নিয়মিত জাতীয় লিগ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেশের আটটি বিভাগীয় দল নিয়ে আয়োজিত হয় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের আসর। চার দিনের ম্যাচের পাশাপাশি এখন শুরু হয়েছে এনসিএল টি-টোয়েন্টিও।

স্বাভাবিকভাবেই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ৮ দলের ১২০ ক্রিকেটারের অংশগ্রহণে বিশাল এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের খরচ অনেক বেড়েছে। প্রথম জাতীয় লিগ ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তখন খরচের চিত্র কেমন ছিল সেটা পুরোপুরি জানা যায়নি। জাতীয় এক দৈনিক জানিয়েছে, ২০১২ সালের তুলনায় বিগত ১৩ বছরে জাতীয় লিগের একটি আসর আয়োজনের ক্ষেত্রে বিসিবির খরচ ১০ কোটি টাকার মতো বেড়েছে।

২০১২ সালের জাতীয় লিগে বিসিবির মোট খরচ হয়েছিল প্রায় ৪ কোটি টাকা। অন্যদিকে সর্বশেষ ২০২৪-২৫ মৌসুমে ১৪ কোটি টাকার ওপরে খরচ করেছে দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। গত মৌসুমে শুধু ক্রিকেটারদের থাকা, খাওয়া আর দৈনিক ভাতা বাবদই প্রতিদিন প্রায় ১১ লাখ টাকা করে খরচ হয়েছে।

এর বাইরে লিগ শুরুর আগে অংশগ্রহণকারী আটটি দলকে প্রস্তুতি ফি হিসেবে সাড়ে ৯ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে আলাদা করে ম্যাচের জার্সি সরবরাহ করে বিসিবি। এবারের এনসিএল টি-টোয়েন্টি এবং চার দিনের আসর মিলিয়ে মোট খরচ যে আরও বাড়বে তা নিশ্চিত।

এবার খেলোয়াড়দের দৈনিক ভাতা ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ হাজার টাকা করেছে বিসিবি। এছাড়া টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ম্যাচ ফি ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। চার দিনের ম্যাচের ম্যাচ ফি গতবারই ৬০ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।

এর বাইরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা ১০০ জন ক্রিকেটার বিসিবি থেকে মাসিক বেতন পান। যেটিও এবার বাড়ানো হয়েছে। ‘এ’ শ্রেণির ক্রিকেটারদের বেতন ২৫ হাজার টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। ‘বি’ শ্রেণির বেতন ৩০ হাজার থেকে বেড়ে ৩৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। সবচেয়ে ওপরের অর্থাৎ ‘সি’ শ্রেণির ক্রিকেটাররা আগে ৩৫ হাজার টাকা পেলেও এখন ৪০ হাজার টাকা বেতন পান।

এই বেতন অবশ্য জাতীয় লিগের বাজেটের বাইরে। এখানেই শেষ নয়। গতবার জাতীয় লিগে চার দিনের ম্যাচের চ্যাম্পিয়ন দল ৩০ লাখ ও রানার্সআপ দল ১৫ লাখ টাকা করে পেয়েছে। টি-টোয়েন্টির চ্যাম্পিয়নের পুরস্কার ১৫ লাখ টাকা ও রানার্সআপের সাড়ে ৭ লাখ টাকা। এবার পুরস্কারের অঙ্ক বাড়বে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

চার দিনের ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচকে ৩০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়, টি-টোয়েন্টিতে যা ২০ হাজার টাকা। চার দিনের ম্যাচ জিতলে উইনিং বোনাস হিসেবে ৮০ হাজার টাকা দেয় বিসিবি। টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য উইনিং বোনাস নেই। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়, সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ১ লাখ টাকা করে পুরস্কার পান।

কোটি কোটি টাকা খরচ করলেও জাতীয় লিগের পৃষ্ঠপোষকদের কাছ থেকে খুব বেশি অর্থ পায় না বিসিবি। বোর্ডের একটি সূত্র জানিয়েছে, জাতীয় লিগে স্পনসর থাকলেও এই বাবদ মোট খরচের মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ  উঠে আসে। বাকি সব খরচ বহন করে বিসিবি। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে ২৭তম জাতীয় লিগের টি-টোয়েন্টি পর্ব। অক্টোবরের মাঝামাঝি চারদিনের আসর শুরু হওয়ার কথা।

এএল