পড়াশোনাটা বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) হয়ে। পরে ২০১১ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ট্রেইনার হিসেবে কাজ শুরু করেন ইয়াকুব চৌধুরি ডালিম। ২০১২ সালে গাজী ট্যাংকের হয়ে (বর্তমানে লিজেন্ড অব রুপগঞ্জ) প্রিমিয়ার লিগে প্রথম ট্রেইনার হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। তখন দেশের ক্লাব ক্রিকেটে ট্রেইনার প্রথার তেমন প্রচলন ছিল না। এদিক থেকে ডালিমই প্রথম।

এরপর ২০১৩ সালে তিনি যোগ দেন মোহামেডানে, এখনও ওই ক্লাবটির সঙ্গেই কাজ করছেন ডালিম। চলতি বছরের মার্চে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) চলাকালে তিনি হঠাৎই আলোচনায় আসেন। খেলার মাঝেই মাঠে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তামিম ইকবাল। ওই সময় তাকে ২২ মিনিট ধরে সিপিআর দেন ডালিম। যা হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক চিকিৎসায় সবচেয়ে কার্যকর। সেই ডালিম উন্নত কোচিংয়ের জন্য এখন জার্মানিতে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে তিনি ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন প্রশিক্ষণ, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য ও কোচিংয়ে আগ্রহের কথা। 

ইয়াকুব চৌধুরি ডালিম বলেন, ‘স্পোর্টস সায়েন্সের ওপর একটা স্কলারশিপ নিয়ে আমি জার্মানিতে ট্রেনিংয়ে এসেছি। স্ট্রেন্থ অ্যান্ড কন্ডিশনের ওপর। এটা আসলে আমার নিজ উদ্যোগেই করা, এখন পর্যন্ত সবই নিজের। বিসিবিকে বলেছি যে এই সময়ের বেতনটা যেন না কর্তন করে। আমি প্রতি মাসে বেতনটা যেন পাই। সেজন্য আবেদন করে রেখেছি।’

চলমান এই প্রশিক্ষণের শুরু ও শেষের বিষয়ে তিনি জানান, ‘স্বাভাবিক ছুটি নিয়েই এসেছি। প্রথম তিন মাস অনলাইনে করেছি, যা গত মে মাস থেকে শুরু হয়েছিল। এরপর এখানে আসি আগস্টের শুরুতে। ২ তারিখ থেকে সরাসরি ক্লাস শুরু হয়েছে, যা চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। ওই সময় পর্যন্ত এখানে থাকব। পরে ৩০ ডিসেম্বরে পর্যন্ত এই কোর্স চলবে, সেই সময়টা আবার অনলাইনে।’

খেলোয়াড়দের ইনজুরিতে থাকাকালীন অবস্থা, আবার আগের জায়গায় ফেরাসহ বিভিন্ন বিষয়ে জার্মানিতে বিস্তারিত শিখছেন বলে জানান ডালিম, ‘আমরা যারা বিসিবির স্ট্রেন্থ অ্যান্ড কন্ডিশনাল কোচ, এরকম ইনফরমেশন বা পড়াশোনা আগে কখনও পাইনি। আমার স্পোর্টস ব্যকগ্রাউন্ড থাকা সত্ত্বেও। এখানে এসে সবকিছু অনেক ভালোভাবে পাচ্ছি। বায়োম্যাকানিক, ফিজিওলজি কীভাবে কাজ করে মানব শরীরে। ইনজুরি কোন অবস্থায় আছে, সেটার কীভাবে রিকভার করা যায় এবং এরপর পারফরম্যান্স ঠিকঠাক রাখার বিষয়গুলো বুঝতেছি।’

জাতীয় দলের হয়ে লম্বা সময় ধরে কাজ করার ইচ্ছা আছে ডালিমের, ‘স্পোর্টস মেডিসিনটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ, এখানে নিজের উন্নতি নিয়ে অনেক কাজ করার রয়েছে। আমরা যারা বিদেশে থেকে এই কোর্সগুলো নিয়ে কাজ করছি, তাদের এই কোর্স শেষে আসলে নিজের ভালোটা নিজে বুঝতে পারি। ভবিষ্যতে অবশ্যই জাতীয় দলের হয়ে লম্বা সময়ের জন্য কাজ করতে চাই। মানে সেখানে আর্থিক অনেক বিষয় রয়েছে যা আসলেই একটা চ্যালেঞ্জ, আমি চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি।’

ডালিমের সেলফিতে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ক্রিকেটাররা

ইতোমধ্যে বিদেশি ক্লাব এবং একটি দেশ থেকেও কাজ করার প্রস্তাব পেয়েছেন এই বাংলাদেশি ট্রেইনার, ‘নিজেকে আন্তর্জাতিক মানের স্টেন্থ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ বানানোর চ্যালেঞ্জ নিয়েছি। ইতোমধ্যে কয়েকটি ক্লাব ও একটি দেশ আমাকে অফার করেছে। মালয়েশিয়া ক্রিকেটে কোচ হিসেবে অফার পেয়েছি। এ ছাড়া জার্মানিতে দুয়েকটা ক্লাবের সঙ্গে কথা হচ্ছে, ওরা হয়তো কাজ করার সুযোগ দেবে। কোর্সটা কমপ্লিট করলে বিভিন্ন ফ্রাঞ্চাইজি লিগেও কাজ করার অফার আসবে, সেটা নিয়েও কথা হয়েছে।’

এসএইচ/এএইচএস