এশিয়া কাপ : টিম প্রিভিউ
এবার খেলতে নয়, জিততে আসছে আফগানিস্তান
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর পর্দা উঠছে এবারের এশিয়া কাপের। সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থাকায় ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে হবে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের এই লড়াই। যেখানে লড়বে মোট ৮ দল। আইসিসির পূর্ণ সদস্য হওয়ায় সরাসরি সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। এ ছাড়া ২০২৪ এসিসি প্রিমিয়ার কাপ খেলে এশিয়া কাপের টিকিট পেয়েছে নেপাল, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও হংকং।
এশিয়া কাপে অংশ নেওয়া দলগুলো নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে ঢাকা পোস্ট। আজ প্রথম পর্বে থাকছে আফগানিস্তানের এশিয়া কাপ স্কোয়াড নিয়ে কাটা-ছেঁড়া।
বিজ্ঞাপন
বছর কয়েক আগেও এসিসির আসরে খেলতে পারাটাই ছিল আফগানিস্তানের জন্য বড় পাওয়া। মোহাম্মদ নবি-রশিদ খানদের হাত ধরে সেই চিত্র বদলে দিয়েছে আফগানরা। অল্প সময়েই পরিবর্তন এসেছে দেশটির ক্রিকেট কাঠামোতে। ফলে উঠে এসেছে বেশ কয়েকজন তারকা ক্রিকেটার। আল্লা গাজানফার, নূর আহমেদ কিংবা রহমানুল্লাহ গুরবাজদের মতো তরুণরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরেও বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে এখন হট কেক! তবে দেশটির সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন রশিদ খান।
লেগ স্পিনারদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠা আফগানিস্তান এখন ক্রিকেটে 'উন্নয়নশীল' থেকে এখন 'উন্নত' দেশের তালিকায় নাম লেখানোর অপেক্ষায় আছে। ইতোমধ্যে একাধিক বড় আসরে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে তারা। সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বড় আসরে চমক দেয় আফগানিস্তান। আর ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলে ক্রিকেট মোড়লদের সহজে ছাড় না দেওয়ার বার্তা দেয় আফগানরা। সাম্প্রতিক ফর্ম আর স্কোয়াডের শক্তিমত্তা সবমিলিয়ে এবারের এশিয়া কাপ তাদের জন্য শুধুই অংশগ্রহণের প্রাপ্তিতে ঢেঁকুর তোলার নয়, প্রথম শিরোপার মিশন!
বিজ্ঞাপন
এশিয়া কাপের সবগুলো ম্যাচই হবে দুবাই ও আবুধাবিতে। এই দুই ম্যাঠের উইকেটেই বাড়তি সুবিধা পান স্পিনাররা। আর এবারের আসরের অন্যতম শক্তিশালী স্পিন ইউনিট আফগানিস্তানের। রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, আল্লা গাজানফার, নূর আহমেদ, মোহাম্মদ নবি, শরফুদ্দিন আশরাফদের নিয়ে স্পিন বিভাগ যে কোনো প্রতিপক্ষের জন্যই হুমকিস্বরূপ। বিশেষ করে রশিদের লেগ স্পিন এবং গাজানফারের রহস্য স্পিনের উত্তর খুঁজতে বেশ কাঠখড় পুড়াতে হবে ব্যাটারদের!
বোলিং নিয়ে স্বস্তিতে থাকলেও ব্যাটিং নিয়ে কিছুটা হলেও দুশ্চিন্তায় থাকবে আফগান টিম ম্যানেজমেন্ট। বিশেষ করে মিডল অর্ডার। টপ অর্ডারে রহমানুল্লাহ গুরবাজ-ইব্রাহিম জাদরানের মতো ব্যাটাররা থাকলেও মিডল অর্ডারে ভরসা রাখার মতো তেমন কেউই নেই। ফলে টপ অর্ডার নির্ভর ব্যাটিং ইউনিট নিয়েই মাঠে নামতে হবে তাদের। কোনো ম্যাচে টপ অর্ডার ব্যর্থ হলে বড় পরীক্ষা দিতে হবে আজমতউল্লাহ ওমরজাই-করিম জানাতদের। তবে লোয়ার মিডল অর্ডারে মোহাম্মদ নবি-রশিদ খানের অভিজ্ঞতা কিছুটা ভরসা যোগাচ্ছে।
ওপেনিংয়ে আফগানদের অন্যতম ভরসার নাম গুরবাজ। আফগানিস্তানের ব্যাটিংয়ের শুরুটা এই হার্ডহিটার ব্যাটারের ওপর অনেকটাই নির্ভর করবে। গুরবাজ ব্যর্থ হলে গুরু দায়িত্ব পড়বে তিনে নামা ইব্রাহিম জাদরানের ওপর। এই অভিজ্ঞ ব্যাটার কিছুটা ধীরগতিতে রান তুললেও বেশ ধারাবাহিক। সঙ্গে লম্বা ইনিংস খেলার অভ্যাসও আছে তার। তবে ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে বড় শটও খেলতে পারেন। গুরবাজের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করতে দেখা যাবে সাদিকুল্লাহ অটলকে। এই তরুণ ওপেনার বেশ সম্ভাবনাময়। এশিয়া কাপের মতো আসর তার জন্য হতে পারে জাত চেনানোর মঞ্চ। টপ অর্ডারে ব্যাক-আপ হিসেবে আছেন ২০ বছর বয়সী মোহাম্মদ ইশরাক।
মিডল অর্ডারে আজমতউল্লাহ ওমরজাই, দারউইশ রাসুলি, মোহাম্মদ নবিরা। তাদের মধ্যে আজমতউল্লাহ ও নবির কাঁধে বাড়তি দায়িত্ব থাকবে। লোয়ার মিডল অর্ডারে কার্যকরী হতে পারেন রশিদ খান। বিশেষ করে ইনিংসের শেষের দিকে দ্রুত রান তুলতে পারেন তিনি।
বোলিংয়ে বেশ কিছু বিকল্প আছে আফগানদের হাতে। বিশেষ করে স্পিন বিভাগে। রশিদ, গাজানফার, মুজিবকে দেখা যেতে পারে প্রথম একাদশে। একই সঙ্গে অলরাউন্ডার হিসেবে থাকবেন নবি। তাদের বিকল্প হিসেবে নূর আহমেদ, শরফুদ্দিন আশরাফরা আছেন। পেস বিভাগের নেতৃত্বে থাকবেন ফজল হক ফারুকি। বাঁহাতি এই পেসারের সঙ্গে আছেন নাভিন উল হক, আজমতউল্লাহ, গুলবাদিন ও ফরিদ আহমেদ।
আফগানিস্তানের এশিয়া কাপ স্কোয়াড
রশিদ খান (অধিনায়ক), রহমানুল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, দারউইশ রাসুলি, সেদিকুল্লাহ অটল, আজমাতউল্লাহ ওমরজাই, করিম জানাত, মোহাম্মদ নবি, গুলবাদিন নাইব, শরফুদ্দিন আশরাফ, মোহাম্মদ ইশাক, মুজিব উর রহমান, আল্লা গাজানফার, নূর আহমেদ, ফরিদ মালিক, নাভিন উল হক এবং ফজলহক ফারুকি।
এইচজেএস/এফআই