১০ মাস পর ফিরেই আফ্রিদির সমান বিব্রতকর রেকর্ড বাবরের
মাত্র ৯ রান করলেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক (৪২৩১ রান নিয়ে রোহিত শর্মা শীর্ষে) হওয়ার বিশ্বরেকর্ড গড়বেন বাবর আজম। কিন্তু তাকে মাঠে নামতেই অপেক্ষা করতে হলো ১০ মাস। গত বছরের ডিসেম্বরের পর গতকালই (মঙ্গলবার) প্রথম পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি একাদশে জায়গা পান সাবেক এই অধিনায়ক। তার এই প্রত্যাবর্তনে সমর্থকদের মাঝেও উন্মাদনা ছিল, কিন্তু তা হতাশায় রূপ নিতে বেশি সময় লাগেনি। বাবর ফিরেছেন ‘ডাক’ (শূন্য) নিয়ে।
রাওয়ালপিন্ডিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তান অধিনায়ক একাদশ নিয়ে কথা বলার সময় যখন বাবরের নামটি উল্লেখ করেন, তখন এই তারকা ব্যাটারের নামে শোরগোল ও স্লোগান চলছিল গ্যালারিতে। কিন্তু বাবরের ব্যাটিং দেখার অপেক্ষাটা দীর্ঘ হয়ে ওঠে সালমান আলি আগা টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ায়। আগে ব্যাট করতে নেমে সফরকারী প্রোটিয়ারা ৯ উইকেটে ১৯৪ রানের বড় পুঁজি গড়ে।
বিজ্ঞাপন
আফ্রিকান ব্যাটারদের বেশিরভাগই খেলেছেন ক্যামিও ইনিংস। কেবল ফিফটি (৪০ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায় ৬০) পেরোনো ইনিংস এসেছে ওপেনার রেজা হেনড্রিকসের ব্যাটে। এ ছাড়া এই ম্যাচ দিয়ে অবসর ভেঙে টি-টোয়েন্টিতে প্রত্যাবর্তন করা কুইন্টন ডি কক ১৩ বলে ২৩, অভিষিক্ত টনি ডি জর্জি ১৬ বলে ৩৩ এবং জর্জ লিন্ডে ২২ বলে ৩৬ রান করেন। পাকিস্তানের পক্ষে সবচেয়ে ইকোনমিক্যাল বোলিংয়ে ২৬ রানে ৩টি উইকেট নেন মোহাম্মদ নওয়াজ।
বিজ্ঞাপন
১৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় পাকিস্তান ধীরগতিতে আগাতে থাকে। তাতে অবশ্য দায়টা বেশি সাইম আইয়ুবের, অন্যপ্রান্তে স্ট্রাইক বাড়ানোর চেষ্টায় ছিলেন সাহিবজাদা ফারহান। যদিও তিনি আউট হয়ে যান ১৯ বলে ২৪ রানে। ভক্তদের অপেক্ষায় ইতি টেনে ওয়ানডাউনে ক্রিজে আসেন বাবর। কিন্তু করবিন বশের দ্বিতীয় বল তিনি মোকাবিলা করতে চাইলেন কভার অঞ্চল দিয়ে বিলাসী শটে। কিন্তু হেনড্রিকসের হাতে বল জমা পড়তেই থেমে রাওয়ালপিন্ডির গ্যালারি। ২ বলে ০ রানে আউট বাবর।
এ নিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অষ্টমবার ডাক নিয়ে ফিরলেন পাকিস্তানি এই তারকা। যা দেশটির হয়ে এই ফরম্যাটে তৃতীয় সর্বোচ্চ। বাবরের সমান ৮ বার শূন্য রানে আউট হওয়ার কীর্তি ছিল কিংবদন্তি শহীদ আফ্রিদির। বিব্রতকর সেই রেকর্ড এখন বাবরও ভাগাভাগি করে নিলেন। তবে পাকিস্তান দলে তাদের চেয়েও বেশি ডাক খাওয়ার রেকর্ড আছে। টি-টোয়েন্টিতে উমর আকমল সর্বোচ্চ ১০ এবং সাইম আইয়ুব ৯ বার আউট হয়েছেন শূন্য রানে।
বাবরের বিদায়ের পর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ। একে একে ফিরেছেন সালমান (৩), সাইম (৩৭), হাসান নওয়াজ (৩), উসমান খান (১২) ও ফাহিম আশরাফ (১)। ৮৯ রানে ৭ উইকেট হারিয়েই স্বাগতিকরা হারের পথ প্রশস্ত করে ফেলে। তবে তাদের হয়ে ব্যবধানটা কমিয়েছেন বোলিংয়ে নৈপুণ্য দেখানো নওয়াজ। ২০ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় তিনি ৩৬ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন। ফলে ১১ বল হাতে রেখে অলআউট হওয়ার আগে পাকিস্তানের স্কোরবোর্ডে ওঠে ১৩৯ রান।
প্রোটিয়াদের পক্ষে করবিন বশ সর্বোচ্চ ৪ এবং স্পিনার লিন্ডে ৩ উইকেট শিকার করেন। ৫৫ রানে জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে লিড নিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। যদিও পাকিস্তান প্রথমবার ম্যাচটিতে নেমেছিল গোলাপি জার্সি পরে। স্তন ক্যান্সার নিয়ে সচেতনতার অংশ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি। পরিসংখ্যান বলছে, এমন ‘পিংক ডে’ ম্যাচে বেশিরভাগ সময়ই ভাগ্য থাকে প্রোটিয়াদের পক্ষে।
এএইচএস