এনসিএলে চ্যাম্পিয়ন হয়েও সেই ফাইনাল হার ভুলতে পারছেন না আকবর
আকবর আলির নেতৃত্বে চলতি বছরের অক্টোবরে জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল রংপুর বিভাগ। এর দুই মাসের মধ্যে এবার এনসিএল চারদিনের ক্রিকেটেও চ্যাম্পিয়ন রংপুর। গতকালই লাল বলের এনসিএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাতাস পাচ্ছিল রংপুর, হিসাব বাকি ছিল কেবল আজকের বিকেল পর্যন্ত।
আজ (মঙ্গলবার) সিলেট ও বরিশাল বিভাগের ম্যাচ ড্র হতেই রংপুরের শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যায়। গতকাল একদিন বাকি থাকতেই খুলনাকে ৭ উইকেটে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ওঠে রংপুর। সিলেট বরিশালকে হারাতে পারলে রংপুরকে ছাড়িয়ে টেবিল টপার হয়ে চ্যাম্পিয়ন বনে যেত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বরিশাল-সিলেটের ম্যাচটি ড্রতে শেষ হয়েছে। ফলে ৩১ পয়েন্ট পাওয়া রংপুর চ্যাম্পিয়ন, দুইয়ে থেকে আসর শেষ করা সিলেটের পয়েন্ট ২৮।
বিজ্ঞাপন
পরপর দুই চ্যাম্পিয়ন ট্রফি জিতে যাওয়া অধিনায়ক আকবর আলি নিজেও খুশি এমন অর্জনে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপে শুরুতে বলেন, 'আলহামদুলিল্লাহ, খুবই ভালো লাগছে। মাশাআল্লাহ গেল তিন মাস ধরে যে জিনিসটার জন্য কষ্ট করতেছিলাম সেটা পেয়েছি।'
গতকালও রাত পর্যন্ত তো নিশ্চিত ছিলেন না যে আপনারা শিরোপা জিতবেন। তো রাতে ঠিকমতো ঘুম হয়েছিল? এমন প্রশ্নের উত্তরে আকবর বললেন, 'হ্যাঁ ঘুম হয়েছিল। আমাদের কাজ যেটুকু সেটুকু আমরা করে রেখেছিলাম। আমাদের হাতে তো আর কিছু ছিল না। আমাদের কন্ট্রোলে কিছু ছিল না। আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই সবাই আসলে ফোন চেক করতেছিলাম কি হচ্ছে বরিশাল-সিলেট ম্যাচটাতে। বরিশালের প্রত্যেকটা রানের জন্য আমরা উৎসব করতেছিলাম, একইসঙ্গে সিলেট উইকেট হারালে আমরা আনন্দ করছিলাম।'
বিজ্ঞাপন
আকবর মানেই ট্রফি, অনেকটাই এমন ব্যাপার হয়ে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে। এটা কীভাবে দেখেন, 'না, এটা আসলে ভুল কথা। তবে ট্রফি জিততেছি এটা আলহামদুলিল্লাহ ভালো। প্রত্যেকটা ম্যাচেই তো আসলে জেতার জন্য খেলি। সে কারণে প্রত্যেকটা টুর্নামেন্ট জিতলে অবশ্যই ভালো লাগে। একটা লক্ষ্য থাকেই শুরুর আগে।'
'খুব বেশি কষ্ট করা লাগেনি আসলে। আমাদের যারা সিনিয়র আছে তারা অনেক হেল্পফুল অনেক কো-অপারেটিভ। এ বিষয়গুলো খুব বোঝে, প্রত্যেকটা সিদ্ধান্তকে তারা ভালোভাবে সম্মান করে। আমার যখনই হেল্প লাগে আমি তাদের থেকে হেল্প নিই।'-যোগ করেন তিনি।
সবশেষ ম্যাচে তিনে নেমেই সেঞ্চুরি করেছিলেন ইকবাল হোসেন। তরুণ এই ক্রিকেটারের পাশে থাকছেন আকবর, 'ইকবাল খুবই ভালো ব্যাটার। অনেক প্রমিজিং একজন ক্রিকেটার। সে যে একজন ইয়াং প্লেয়ার এটা বুঝতে দেয়নি। আমাদের রংপুর বিভাগে প্রত্যেকটা ইয়ং ক্রিকেটারকে সেই জায়গাটা দেয়া আছে। তাদের যদি কখনো কোনো সময় দরকার হয় আমরা আছি তারা জানাবে। সব সিনিয়ররা আছেন।'
মুকিদুল মুগ্ধ হয়েছেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়। তাকে নিয়ে আকবর বলেন, 'উনি ভিন্ন টাইপের একজন বোলার। তিনি যখন ফর্মে থাকেন তাকে খেলা আমার মনে হয় যে বাংলাদেশের সবচেয়ে কঠিন বোলারদের একজন সে। পেস বোলার যেহেতু ইনজুরি তো থাকেই। তিনি কাজ করতেছেন আশা করি আরো শক্তিশালি হয়ে ফিরবেন।'
এই জয়েও এশিয়া কাপের ফাইনালে সুপার ওভারের হার ভুলতে পারছেন না আকবর। তিনি বলেন, 'দেখেন ওটা মন খারাপের জায়গা, ওটা আছেই। আমার মনে হয় প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের এই কথা যখন মনে পড়বে সবারই মন খারাপ হয়। সবার একটু আফসোস হবেই আর সারাজীবন এটা থাকবে। আপনি যখন ভালো কিছু অর্জন করবেন তখন যেমন সারাজীবন মনে থাকে, তো ওই ফাইনাল হারের আফসোসটাও সারাজীবন থাকবে। এভাবেই আগাতে হবে আর কি।'
বিপিএলে রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের হয়ে খেলবেন আকবর। এ নিয়ে বলেন, 'আমি এখনো কোনো কিছু ভাবিনি যে কীভাবে কি করব বিপিএলে। কোচের সাথে অধিনায়কের সাথে কথা বলতে হবে আগে, তারা কীভাবে চাচ্ছে আমাকে। তাদের সাথে কথা বলার পরে আসলে বলতে পারব। এনসিএল শেষ হয়েছে এখন বিশ্রাম নিতে চাই কয়েকদিন।'
এসএইচ/এইচজেএস