শ্বাসরুদ্ধকর লড়াই শেষে উইন্ডিজ হারল ১ রানে
ব্যাট হাতে আবারও ব্যর্থ গেইল/ক্রিকইনফো
যেন পেন্ডুলামের মতো দুলছিল ম্যাচটা। একবার এদিকে হেলে পড়ছিল, তো আরেকবার ওদিক। রুদ্ধশ্বাস এই লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত ফলাফলটা গেল দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে। উইন্ডিজ যদিও জয় পায়নি, চেষ্টাটাও কম করেনি। শেষ বলে ছক্কা মেরেও হেরেছে মাত্র এক রানে। এতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে পিছিয়ে পড়েছে ২-১ ব্যবধানে।
সিরিজের শুরুর ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার ছুঁড়ে দেওয়া ১৬০ রানের লক্ষ্য উইন্ডিজ পেরিয়ে গিয়েছিল মাত্র ১৫ ওভারেই। তৃতীয় ম্যাচে লক্ষ্যটা ছিল ১৬৮ রানের। প্রথম পাঁচ ওভারে যখন বিনা উইকেটেই তুলে ফেলেছিল ৪৮ রান, তখন প্রথম ম্যাচের পুনরাবৃত্তিকেই মনে হচ্ছিল ম্যাচের নিয়তি।
বিজ্ঞাপন
৫৫ রানে যখন প্রথম উইকেটের পতন হলো তখন থেকেই নাটকের শুরু। তাবরাইজ শামসির বাঁহাতি স্পিনে আগের ম্যাচেও যথেষ্ট ভুগেছে ক্যারিবীয়রা। সে ভোগান্তিটা এদিন হয়েছে আরও প্রকট। নিজের প্রথম ওভারে তাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমানায় ধরা পরেন এভিন লুইস। এরপর অবশ্য এইডেন মার্করাম ও জর্জ লিন্ড দুই ওভারে ৩০ রান দিয়ে চাপটা প্রায় সরিয়েই দিয়েছিলেন স্বাগতিকদের ওপর থেকে।
এ অবস্থায় লুঙ্গির শিকার হন হোল্ডার, ম্যাচের পেন্ডুলাম আবারও চলে আসে দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে। পরের ওভারে শামসি আসেন আবারও, তিন রানের বিনিময়ে তুলে নেন শিমরন হেটমায়ারকে। তারপরে বল করতে এসে রাবাদাও তুলে নেন উইকেট, ১ রান করে ফেরেন পোলার্ড। শামসির পরের ওভারে উইন্ডিজ উইকেট দেয়নি, কিন্তু রানও তুলতে পারেনি ৪টির বেশি।
বিজ্ঞাপন
তখন জিততে উইন্ডিজের চাই ছয় ওভারে ৫৮ রান। খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন আন্দ্রে রাসেল, রাবাদার ওভারে তুলেও নিয়েছিলেন ১০ রান। শামসি আসতেই যেন আবার ঢুকে গেলেন খোলসে। সে ওভারেও এল চার রান মাত্র। ফলে চার ওভারে লক্ষ্যটা দাঁড়ায় ৪৪ রানের।
শামসির ওভার শেষের প্রতীক্ষাতেই যেন ছিল ক্যারিবীয়রা। আনরিখ নরকিয়ার এক ওভারে ১৬ রানও তুলে নেয় তারা, রাসেলের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটাও অবশ্য যায় তাতে। লুঙ্গির পরের ওভারে আসে ৯ রান, তাতে শেষ দুই ওভারে তাদের প্রয়োজন ছিল ১৮ রানের।
বাজে দিন কাটানো নরকিয়া সেরা ওভারটা তুলে রেখেছিলেন সেই ওভারের জন্যেই। দিয়েছেন মোটে চার রান, বিপদজনক হতে থাকা নিকলাস পুরানকেও বোল্ড করে ফেরান সাজঘরে।
শেষ ওভারে ১৫ দরকার ছিল ক্যারিবীয়দের। ওভারটা রাবাদা শুরু করেন ওয়াইড দিয়ে, পরের বল ডট, দ্বিতীয় বলে ফুলটস দিয়ে হজম করলেন চার। তাতে সমীকরণটা এসে দাঁড়িয়েছিল চার বলে ১০। পরের বলে রান নিতে পারল না স্বাগতিক দলটি। এরপর চতুর্থ বলটা থেকে এল দুই রান। পঞ্চম বলে আবারও ডট। ফলে শেষ বলে ছক্কা মেরেও লাভ হয়নি উইন্ডিজের, ১ রানের হারই জুটেছে কপালে।
এর আগে রিজা হেনড্রিকসের সঙ্গে মিলে কুইন্টন ডি কক গড়ে তোলেন শক্ত ভিত। এরপর ১৭ রান করে হেনড্রিকস আউট হলেও সেই ভিতে দাঁড়িয়ে ডি কক করেন ৫১ বলে ৭২ রান। সঙ্গে এইডান মার্করাম (২৩) ও রাসি ফন ডার ডুসেম (৩২) তাকে দেন যোগ্য সঙ্গ। ফলে শেষ দিকে ছোটখাটো একটা বিপর্যয় ঘটলেও ১৬৭ রানের পুঁজি জমা করে স্কোরবোর্ডে। শেষ পর্যন্ত সেটাই যথেষ্ট হয়ে গিয়েছিল জয়ের জন্য।
এনইউ/এটি