ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছে বাংলাদেশ। প্রায় সাড়ে ১০ মাস পর মাঠের লড়াইয়ে টাইগাররা। ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। যেখানে ৩ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ক্যারিবীয়দের ধবলধোলাই করার পর এবার মিশন টেস্ট সিরিজ। সাদা পোশাকে ২ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রামে মুখোমুখি হবে দুই দল। ম্যাচ শুরু সকাল সাড়ে ৯টায়।

ঘরের মাঠে বরাবরই শক্তিশালী দল বাংলাদেশ। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে টাইগারদের যত অর্জন, তার সিংহভাগই এসেছে নিজেদের মাঠে। ৫ দিনের ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ম্যাচ খেলেছে ১১৯টি, যেখানে ১৪ জয়ের সঙ্গে ১৬টি ম্যাচ পয়েন্ট ভাগাভাগিতে শেষ করেছে। ঘরের মাঠের পরিসংখ্যান ইতিবাচকই বটে, ৬৩ ম্যাচে ১০ জয়ের সঙ্গে আছে ১৬টি ড্র।

উইন্ডিজের সঙ্গে এযাবৎ ১৬ দেখায় মোটে চারটি জয় আছে টাইগারদের। হারের পাল্লায় ১০ ম্যাচ। তবে দুই দলের সবশেষ টেস্ট সিরিজে প্রাপ্তি কথা বলছে বাংলাদেশের হয়ে। ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে সফরকারীদের বড় ব্যবধানে পরাজিত করে বাংলাদেশ। 

এবার তো তুলনামূলক খর্বশক্তির দল নিয়ে এসেছে উইন্ডিজ। মূল দলের একাধিক ক্রিকেটার আসেননি বাংলাদেশ সফরে। তবে ছাড় দিতে নারাজ স্বাগতিকরা। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পূর্ণ ১২০ পয়েন্টে চোখ মুমিনুল হকদের। এজন্য বুধবার শুরু হওয়া ম্যাচে সেরা একাদশই নামাবে বাংলাদেশ।

তারপরেও ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন অধিনায়ক মুমিনুলের সামনে। ২-০ সিরিজ জিতবে তো টাইগাররা? 

বেশ মজা করে উত্তর দিলেন মুমিনুল, ‘আপনি কি আশা করছেন?’

সাগরিকার এই ম্যাচে আধিক্য থাকবে স্পিনারদের। সেখানে নিয়মিত স্পিনার দেখা যেতে পারে চারটি। একমাত্র পেসার হিসেবে আবু জায়েদ রাহীর পাল্লা ভারি। ছেড়ে কথা বলবে না উইন্ডিজও। স্পিনের সঙ্গে পেস আক্রমণে আস্থা আছে তাদের। তবে ক্যারিবীয় অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখছেন দুই দলের সবশেষ সিরিজটিকে। সেখানে হারলেও সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজদের বিপক্ষে খেলা পূর্বের অভিজ্ঞতা কাজে দেবে বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবার ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে ব্র্যাথওয়েট বলেন, ‘আমরা এখানে সবশেষ সিরিজ হেরেছি। যেটা আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। আমি তাদের (সাকিব-মিরাজ) বিপক্ষে আগেও খেলেছি। তবে আমাদের বেশ কয়েকজন তাদের মোকাবিলা করেনি। আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখেছি এবং একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে বলব, আমাদের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে।’

এক নজরে দুই দলের সম্ভাব্য একাদশ:

বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, সাদমান ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাইম হাসান ও আবু জায়েদ রাহী।

উইন্ডিজ: ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট (অধিনায়ক), জন ক্যাম্পবেল, জার্মেইন ব্ল্যাকউড, এনক্রুমা বোনার, রাকিম কর্নওয়েল, জশুয়া ডি সিলভা, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল, আলজারি জোসেফ, কাইল মায়ার্স, কেমার রোচ ও জোমেল ওয়ারিক্যান।

মুখোমুখি দেখায় দুই দলের পরিসংখ্যান-

ইনিংস সর্বোচ্চ স্কোর:  

উইন্ডিজ: ৬৪৮/৯ ডি: (২০১২ খুলনা)
বাংলাদেশ ৫৫৬/১০ (২০১২ ঢাকা)

ইনিংস সর্বনিম্ন স্কোর:  

বাংলাদেশ: ৪৩/১০ (২০১৮ নর্থ সাউন্ড)
উইন্ডিজ: ১১১/১০ (২০১৮ ঢাকা)

ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান:

শিবনারায়ণ চন্দরপল ৮৯৭ (১৪ ইনিংস)
তামিম ইকবাল ৭৫০ (২০ ইনিংস)

ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস:

রামনরেশ সারওয়ান ২৬১* (২০০৪ কিংস্টন)
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৩৬ (২০১৮ ঢাকা)

এক সিরিজে সর্বোচ্চ রান:

শিবনারায়ণ চন্দরপল ৩৫৪ (২ ম্যাচ)
নাসির হোসেন ২৬৩ (২ ম্যাচ)

সর্বোচ্চ গড়:

শিবনারায়ণ চন্দরপল ১৪৯.৫০
সাকিব আল হাসান ৪৩.৮২

সর্বোচ্চ শতক:

শিবনারায়ণ চন্দরপল ৪টি
বাংলাদেশের ৯ ক্রিকেটারের ১টি করে

সর্বোচ্চ অর্ধশতক:

শিবনারায়ণ চন্দরপল ৭টি
সাকিব আল হাসান ৭টি

সর্বোচ্চ উইকেট:

সাকিব আল হাসান ৪৬টি (১৮ ইনিংস)
কেমার রোচ ৩৩টি (১৪ ইনিংস)

এক সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট:

জেসন হোল্ডার ১৬ উইকেট (২ ম্যাচ)
মেহেদি হাসান মিরাজ ১৫ উইকেট (২ ম্যাচ)

ইনিংসে সেরা বোলিং:

মেহেদি হাসান মিরাজ ৭/৫৮ (২০১৮ সাল)
জার্মেইন লওসন ৬/৩ (২০০২ সাল)

ম্যাচে সেরা বোলিং:

মেহেদী হাসান মিরাজ ১২/১১৭ (২০১৮ সাল)
জেসন হোল্ডার ১১/১০৩ (২০১৮ সাল)

টিআইএস