ফিসফাস আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল। লা বম্বোনেরায় ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে ইঙ্গিত দিয়ে বোমাটা ফাটালেন আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি, আর্জেন্টিনা থেকে মেসির ‘বিদায়’ শব্দটা উচ্চারণ করে। তাতেই গুঞ্জন টা ঘনীভূত হলো আরও। ‘আর্জেন্টিনার মাটিতে শেষ ম্যাচ খেলতে চলেছেন মেসি?’ আর্জেন্টিনা তো বটেই, আর্জেন্টাইন সংবাদ মাধ্যমের বাইরেও ঘুরপাক খেতে শুরু করল এমন প্রশ্ন।

তবে এরপরই জানা গেল, স্ক্যালোনি মোটেও তা বোঝাতে চাননি। বরং তিনি বলতে চেয়েছেন, বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে শেষ ম্যাচ মেসির, আর্জেন্টিনারও। যে আগুন জ্বালানো হয়ে গেছে আগে, তা কি আর পরের কথাতে থামে? থামলোও না। বরং তাতে আরও ঘি ঢাললেন আনহেল ডি মারিয়া। গোল করে- মেসিকে দিয়ে করিয়ে রাঙালেন ম্যাচটা। শেষে জানালেন, ‘নিশ্চিতভাবেই আর্জেন্টিনার মাটিতে এটা আমার শেষ ম্যাচ।’ তার মানে দাঁড়াচ্ছে, বিশ্বকাপের পরই জাতীয় দলের জার্সিকে বিদায় জানানোর মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন তিনি। 

ডি মারিয়া বলেই দিলেন। তার দীর্ঘ দিনের সতীর্থ, যার সঙ্গে প্রায় একই সময়ে বেড়ে ওঠা, সেই লিওনেল মেসিও কি সতীর্থের সঙ্গেই বিদায় বলবেন? মেসি অবশ্য উত্তরটা দিলেন কৌশলী সুরে। বললেন, ‘বিশ্বকাপের পর অনেক কিছু নিয়ে ভাবতে বসবো আমি, সেটা নির্ভর করছে বিশ্বকাপের ভালো খারাপের ওপর। আশা করছি ভালো কিছুই হবে।’ 

খারাপ করলে আরেকটা বিশ্বকাপ, কিংবা কোপা আমেরিকার জন্য থাকবেন জাতীয় দলে? নাকি ‘ভালো’ করলে জাতীয় দলের সঙ্গে খেলা চালিয়ে যাবেন আরও কিছু দিন, তার কথায় ইঙ্গিত মিলল না কিছুরই।

তবে যা-ই হোক, বিশ্বকাপই যদি হয়ে যায় মেসির শেষ, তাহলে আর্জেন্টিনার মাটিতে শেষ ম্যাচটা খেলেই ফেলেছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ঘরের মাটিতে আর ম্যাচ নেই আলবিসেলেস্তেদের। চলতি আন্তর্জাতিক ফুটবলের বিরতির পর আর্জেন্টিনা দল আবার খেলবে আগামী জুন মাসে। ১ জুন ওয়েম্বলিতে ইতালির বিপক্ষে ‘ফিনালিসিমায়’ খেলবেন মেসিরা। এর বাইরে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ব্রাজিলের বিপক্ষে স্থগিত ম্যাচটাও আছে। তবে সেটা হবে দক্ষিণ আমেরিকারই বাইরে।

এছাড়াও সেপ্টেম্বরের উইন্ডোতে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে বেশ কিছু প্রীতি ম্যাচ খেলবেন মেসিরা। তবে তার সবকটা ম্যাচই হবে ইউরোপ কিংবা এশিয়ায়। এমন ইঙ্গিতই মিলছে এখন পর্যন্ত। সব মিলিয়ে দেশের মাটিতে চলতি বছর আর নিজেদের মাটিতে ম্যাচ খেলছে না আর্জেন্টিনা এটা প্রায় নিশ্চিতই।

মেসি যদি বিশ্বকাপের পর বিদায় বলেই দেন, তাহলে এটাই হয়ে গেছে ঘরের মাটিতে আকাশি সাদা জার্সিতে তার শেষ ম্যাচ। তবে মেসি বিশ্বকাপ দিয়ে বিদায় নেন কিনা সেটাই এখন প্রশ্ন।