মেট্রো থেকে ফ্যান জোন : সমর্থকে মুখরিত চারপাশ
এত দিন খা খা করা মেট্রো স্টেশনগুলোতে প্রাণ ফিরেছে। ইউরোপিয়ান, লাতিন আমেরিকান সমর্থকদের গানে মুখরিত কাতারের মেট্রো স্টেশনগুলো। কাতার বিশ্বকাপ দেখতে আসা আফ্রিকান সমর্থকরাও উপভোগ করছেন অন্য মহাদেশের এই প্রাণ চাঞ্চল্য।
আর্জেন্টিনা-সৌদি আরবের ঐতিহাসিক ম্যাচ দেখার পর ইউরোপিয়ান অনেক দর্শকই ছুটেছেন তিউনিসিয়া-ডেনমার্ক দেখতে আবার কেউ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের খেলাও দেখেছেন। এক স্টেডিয়াম থেকে আরেক স্টেডিয়ামে বেশি দূরত্ব না হওয়ায় নির্বিঘ্নেই সমর্থকরা যাতায়াত করছেন। একই শহরে হওয়ায় সমর্থকদের মতো সাংবাদিকরাও একাধিক ম্যাচ কাভারের সুযোগ পাচ্ছেন। এ দিক থেকেও কাতার বিশ্বকাপ অনন্য।
বিজ্ঞাপন
২০ নভেম্বর বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে। গতকাল থেকেই প্রথম দিনে চারটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। একই শহরে এক দিনে এত ম্যাচ হওয়ার রেকর্ড বিশ্বকাপ ফুটবল ইতিহাসে আর নেই। ছোট্ট শহর, এতোজনবল সবারই শঙ্কা ছিল। সেই শঙ্কার বদলে এখন উপভোগ্যই হচ্ছে কাতারের সুন্দর ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে।
মেট্রো থেকে নেমে অনেক স্টেডিয়াম কয়েক মিনিট হাঁটা দূরত্ব। আবার কিছু স্টেডিয়াম মেট্রো থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার দুরে অবস্থান। আল বায়াত, জয়নব, স্টেডিয়ামের দূরত্ব অনেক মেট্রো স্টেশন থেকে। এজন্যও ব্যবস্থা রেখেছে কাতার। মেট্রো স্টেশন থেকে নামার পরেই অপেক্ষামান বাসের সারি। সমর্থকরা কিছুক্ষণ লাইনে অপেক্ষার পরই মিলছে কাঙ্খিত স্টেডিয়ামের বাস। খেলা দেখে ফেরার সময়ও একই ব্যবস্থা। বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষ্যে স্বাগতিক কাতার হায়া কার্ড সিস্টেম করেছে। যার মাধ্যমে দর্শকদের যাতায়াতে কোনো খরচ নেই।
বিজ্ঞাপন
গতকাল চার ম্যাচে চার স্টেডিয়ামে প্রায় তিন লাখের বেশি সমর্থক খেলা দেখেছেন। এর বাইরেও লক্ষাধিক দর্শক রয়েছে। ছোট্ট এই শহরে এত ফুটবল সমর্থকদের চাপ সওয়া নিয়ে প্রশ্ন ছিল অনেক। এখন পর্যন্ত কাতার সেটি দারুণভাবেই সামাল দিয়েছে।
বিশ্বকাপ ফুটবলের অন্যতম অনুষঙ্গ অ্যালকোহল। স্টেডিয়ামে বিয়ার নিষিদ্ধ হয়েছে দিন দুয়েক আগে। বিয়ার নিষিদ্ধ হওয়ায় অনেক সমালোচনা হলেও স্টেডিয়ামে দর্শকদের উপস্থিতি ও উৎসবের কোনো কমতি নেই। প্রায় প্রতিটি স্টেডিয়ামই কানায় কানায় পরিপূর্ণ। স্টেডিয়াম প্রাঙ্গনে বিয়ার না থাকলেও কর্নিশ ফ্যান জোনে রয়েছে অ্যালকোহল। কর্নিশ চত্বরে অ্যালকোহলে চুমুকের পাশাপাশি বড় পর্দায় খেলা উপভোগ করছেন সমর্থকরা।
বিশ্বকাপ উপভোগ করতে নানা ভাষাভাষী লোক আসে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে। এই বিশ্বকাপে কাজ করা ভলান্টিয়ার, নিরাপত্তা কর্মী সহ সকল পর্যায়ের প্রায় সকলেই ইংরেজীতে অত্যন্ত দক্ষ। আরবীর পাশাপাশি ইংরেজী জানা লোকদেরই নিয়োগ দিয়েছে কাতার। স্টেডিয়ামের সিকিউরিটি, মেট্রোর গাইড, ভলান্টিয়ার সকল ক্ষেত্রেই প্রবাসী। কাতারের নাগরিক তেমন চোখে পড়েনি।
এজেড/এটি