ঘড়ির কাঁটা তখন দুটা ছুঁই-ছুঁই। কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঠিক সেই সময় প্রবেশ করছিলেন লিওনেল মেসিরা। ৩৬ বছরের শিরোপা ঘুচানোর মিশন নিয়ে এই কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্প শুরু করেছিল আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপ শেষে কাপ নিয়েই কাতারে নিজেদের আবাসে ফিরেছেন মেসিরা।

মেসিদের চ্যাম্পিয়ন রাতটা কেটেছে মূলত কাতার বিশ্ববিদ্যালয়েই। ছাদ খোলা বাসে লুসাইল ও দোহার কয়েকটি সড়ক ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে আসেন। শরীরে ক্লান্তি থাকলেও ঐতিহাসিক রাতে সব কিছু ছিল উধাও। নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন মেসিরা।

বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা রাতে হলের বাইরে ঘুরাঘুরি করতে পারেন। কাতার বিশ্ববিদ্যালয় রাত ১২ টার পর হোস্টেলের বাইরে যাওয়া নিষেধ। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বারান্দায় দাঁড়িয়ে আবার কেউ জানালার ফাঁক দিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের দেখার চেষ্টা করেছেন। যদিও সেটা চেষ্টাই ছিল মাত্র; বাংলাদেশের শিক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম চ্যাম্পিয়নদের রাতের বর্ণনা করলেন এভাবে,‘নিয়ম-শৃঙ্খলার জন্য আমরা হোস্টেলের বাইরে যেতে পারিনি। ভেতর থেকে বাইরে যাতে দেখা না যায় এজন্য মেসিরা উঠার আগেই জানালার পাশে আরেকটি স্তর করা হয়েছে।’ 

সরাসরি চ্যাম্পিয়নদের দেখার সুযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীই পায়নি। তবে অল্প কয়েকজন সৌভাগ্যবান পেয়েছেন। যারা ভলান্টিয়ার হিসেবে আর্জেন্টিনার ক্যাম্পে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন। তাদের মাধ্যমে মেসিদের উৎসবের আমেজ শুনেছেন অন্য শিক্ষার্থীরা। সারা রাতই মেসিরা নাচ-গানে উৎসব করেছেন। মেসিদের উৎসব ও তাদের কাছ থেকে দেখার সুযোগ না হলেও অনেক শিক্ষার্থীই নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। রাতের আঁধার কেটে ভোরের আলো ফুটে উঠার খানিক আগেই মেসিরা কাতার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। স্থানীয় সময় ভোরেই বুয়েন্স আয়ার্সের বিমান ধরেছেন।

একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। সেই কাতার বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আসল এবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দল। লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকেই পুরো বিশ্বকাপ খেলেছেন এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠেই তারা নিজেদের ভুল-ত্রুটি শুধরানোর পাশাপাশি জয়ের পরিকল্পনা একেছিলেন।

লুসাইল স্টেডিয়াম থেকে খুব কাছেই কাতার বিশ্ববিদ্যালয়। আর্জেন্টিনার সাত ম্যাচের পাঁচটিই খেলেছে কাতার বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন লুসাইল স্টেডিয়ামে। চ্যাম্পিয়ন হয়েই মাঠেই উৎসব করেছেন মেসিরা। সেই উৎসব কাতারে অবস্থান করা অনেকেই দেখার সুযোগ পাননি। তাই লুসাইল সিটিসহ দোহার অনেক সড়কে লাখো সমর্থক ছিলেন। 

এজেড/এটি