ট্রাফিক পুলিশের গুলিতে এক তরুণ নিহতের ঘটনায় উত্তপ্ত গোটা ফ্রান্স। পরবর্তীতে দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর পুলিশ ৯০০ জনকে আটক করে। সহিংসতা মোকাবিলায় বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব হয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপে। সহিংসতা থামিয়ে তিনি শান্তির ডাক দিয়েছেন।

গত মঙ্গলবার (২৭ জুন) ফ্রান্সের নঁতে শহরে গাড়ির ভেতর নাহেল এল নামের ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপরই শুরু হয় বিক্ষোভ। যা গত চার রাত ধরে অব্যাহত রয়েছে। গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, দোকানপাটে ভাঙচুর করেছেন বিক্ষোভকারীরা। কেউ কেউ আবার লুটপাটেও অংশ নিয়েছেন। এদিন রাতে এক হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়। চারদিন ধরে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করা হলেও এটি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।

আরও পড়ুন >> আর্জেন্টিনার ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফ্রান্সের

এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ মানুষদের উদ্দেশে ফ্রান্স অধিনায়ক এমবাপে টুইটারে লিখেছেন, ‘ফ্রান্সের সব মানুষের মতো আমরাও কিশোর নাহেলের মৃত্যুতে স্তব্ধ। প্রথমত, তার পরিবারের জন্য আমাদের সমবেদনা। অবশ্যই এ ধরনের অগ্রহণযোগ্য মৃত্যুতে আমরা সংবেদশীল না হয়ে পারি না। এ ঘটনার পর আমরা জনসাধারণের ক্ষোভের প্রকাশ দেখতে পাচ্ছি, যার ভিত্তিও আমরা বুঝতে পারছি। তবে ক্ষোভ প্রকাশের এই ধরনকে আমরা অনুমোদন দিতে পারি না। শ্রমজীবী শ্রেণির আশপাশ থেকে উঠে আসা আমাদের অনেকেই এই বেদনা ও কষ্টের সঙ্গে পরিচিত।’

তবে সহিংসতা কোনো সমাধান নয় উল্লেখ করে সবাইকে শান্ত ও সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়েছেন এই তরুণ তারকা, ‘সহিংসতা কোনো কিছুই সমাধান করতে পারে না। বিশেষ করে যখন এটা তাদের বিরুদ্ধেই যায়, যারা এটি প্রকাশ করে। তাদের পরিবার, কাছের মানুষ ও স্বজনেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আপনারা যা ধ্বংস করছেন, তা আপনাদেরই সম্পদ। তীব্র উদ্বেগপূর্ণ এ পরিস্থিতিতে আমরা চুপ থাকতে পারি না। আমাদের নাগরিক বিবেক ডাক দিচ্ছে শান্তির, সচেতনতা ও দায়বদ্ধতার।’

আরও পড়ুন >> নিয়ন্ত্রণের বাইরে ফ্রান্সের বিক্ষোভ

এর আগে নাহেলের মৃত্যুর পরও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে নিজের সমবেদনার কথা জানিয়েছিলেন এমবাপে। বর্তমানে মাঠের বাইরে ছুটি কাটানো তারকাকে স্বাভাবিকভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনা অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। অবশ্য তাদের দেশে এমন ঘটনা নতুন নয়। গত বছরও ট্রাফিক চেকে পুলিশের গুলিতে রেকর্ড ১৩ জন মারা যায়। আর চলতি বছর এ ধরনের দ্বিতীয় ঘটনা ছিল নাহেলের মৃত্যু। তাই তো সাধারণ মানুষ এবার বেশি বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।

এএইচএস