ইস্ট বেঙ্গল সম্মাননা : মিশ্র অনুভূতি রুমির
ইস্ট বেঙ্গলের জার্সিতে রিজভি করিম রুমি। ছবি-সংগৃহীত
ভারতের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ইস্ট বেঙ্গল ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের চার ফুটবলারকে সম্মাননা দিয়েছে। আসলাম,গাউস সশরীরে এবং প্রয়াত মোনেম মুন্নার পক্ষে তার পরিবার সম্মাননা গ্রহণ করেছেন। ইস্ট বেঙ্গলে খেলা বাংলাদেশের আরেক সাবেক ফুটবলার রিজভি করিম রুমি নিজেও অনুপস্থিত ছিলেন; ছিলেন না তার পরিবারের কেউ।
গত দুই যুগের বেশি সময় রুমি কানাডাতেই স্থায়ী। সুদূর কানাডা থেকে ভারতে এসে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি রুমি। কানাডা থেকে তাই খানিকটা আফসোস ঝরলই রুমির কন্ঠে, ‘সামাজিক মাধ্যমে আসলাম ভাইদের ছবি দেখছি। আমিও এমন একটি সম্মাননার অংশ ভেবে ভালো লাগছে। পরক্ষণেই আবার আফসোস লাগছে যেতে পারলাম না।’
বিজ্ঞাপন
ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের সম্মাননার তালিকায় তিনি রয়েছেন বিষয়টি জেনেছেন হারুনুর রশীদের (আবহানীর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক) স্ত্রীর মাধ্যমে,‘ভাবী আমাকে ফোন করে বললেন আমিও সম্মাননা পাব। এরপরও ক্লাব থেকেও বলেছে কিন্তু আমার সময় বের করা সম্ভব হয়নি।’ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব রুমির সম্মাননা স্মারক হারুনুর রশিদের কাছেই হস্তান্তর করেছে। রুমি দেশে আসলে হারুনের পরিবার সেটা প্রদান করবে।
আফসোস থাকলেও আরেক দিক থেকে যারপরনাই খুশি রুমি,‘মুন্না ভাই আমার দীর্ঘদিনের রুমমেট ছিলেন। আবাহনী ক্লাব ও জাতীয় দল উভয় ক্ষেত্রে তার সঙ্গে আমি রুমমেট ছিলাম। মুন্না ভাইয়ের মতো খেলোয়াড় এই সম্মাননা পেয়েছে এতেই আমি বড় খুশি।’ বাংলাদেশের আরেক কিংবদন্তি শেখ আসলামের প্রশংসাও ঝরল রুমির কন্ঠে,‘আসলাম ভাই তো কিংবদন্তি। আসলাম ভাইয়ের খেলা দেখেই তো ফুটবলার হওয়া। তিনি আমার শৈশবের হিরো।’
বিজ্ঞাপন
কাজী সালাউদ্দিন ১৯৮৪ সালে ফুটবলের বুট জোড়া তুলে নেন। সালাউদ্দিনের অবসর নেওয়ার দিনই প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগে অভিষেক হয় রুমির। দিনের প্রথম ম্যাচটি ছিল আবাহনী-মোহামেডানের। দ্বিতীয় ম্যাচে সাধারণ বীমার হয়ে নেমেছিলেন রুমি। বছর তিনেকের মধ্যে আবাহনীতে নাম লেখান রুমি। এরপর আর পেছন ফেরে তাকাতে হয়নি।
প্রায় এক দশক আবাহনী ও জাতীয় দলে একটানা খেলেছেন। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে আন্তর্জাতিক অনেক গোল রয়েছে তার। গোলের পাশাপাশি স্টাইলিশ ফুটবলার হিসেবে বাড়তি জনপ্রিয়তা ছিল রুমির। এ সকল কিছুই প্রকৃতি প্রদত্ত বলে ধারণা তার,‘আসলাম ভাই কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে রপ্ত করেছেন। দলীয় অনুশীলনের পরও ঘন্টার পর ঘন্টা অনুশীলন করেছেন। এতে আমরাও অনেকটা লজ্জিত হলাম তিনি এত পরিশ্রম করছেন আর আমরা কি করি। সেই পরিশ্রমের ফসল তিনি পেয়েছেন। অন্য দিকে আমি একেবারেই প্রকৃতি প্রদত্ত। তেমন পরিশ্রম ছিল না আবার এখনকার মতো ফুটবল একাডেমী বা বিশেষ প্রশিক্ষণও ছিল না।’
বাংলাদেশের অন্যতম তারকা ফুটবলার রিজভি করিম রুমি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক অর্জনও রয়েছে তার। এরপরও এখনো পাননি জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার। এ নিয়ে খানিকটা আক্ষেপ থাকলেও অতৃপ্তি নন রুমি,‘এই পুরস্কার কিভাবে কারা পাচ্ছে এটা সবারই কম বেশি জানা। এত দিন আগে খেলা ছেড়েছি মানুষ এখনো ভালোবাসে, মনে করে সেটাই আমার কাছে পুরস্কারের চেয়ে বেশি’।
রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি না আসলেও ফুটবল ফেডারেশন, আবাহনী, মোহামেডানের মতো ক্লাব কিংবদন্তি ক্রীড়াবিদদের সম্মাননা জানায় না। এ নিয়ে রুমির মন্তব্য,‘ আসলে সব কিছুই সংস্কৃতির বিষয়। আমরা দেশে মূল্যায়িত হওয়ার আগে ইস্ট বেঙ্গল মূল্যায়ন করল।’
এজেড/এফআই