বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ জাতীয় দল যখন একের পর এক হতাশা উপহার দিয়েছে, তখনই দারুণ সম্ভাবনার সামনে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। ঘরের মাঠে মালদ্বীপের বিপক্ষে দারুণ এক জয় বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে একগুচ্ছ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ। আগামী তিন বছরে ফিফা বিশ্বকাপ এবং এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব মিলিয়ে অন্তত ১২ টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

পরবর্তী বছরগুলোতে জামাল ভূঁইয়াদের প্রতিপক্ষও বেশ শক্তিশালী। বিশ্বকাপের প্রাক-বাছাইয়ের ২য় রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়া, ফিলিস্তিন এবং লেবাননের বিপক্ষে খেলতে নামবে তারা। সেখান থেকে ছিটকে গেলেও আছে বড় ম্যাচের সুযোগ। 

আছে লম্বা সূচির জটিলতা

প্রিলিমিনারি কোয়ালিফাইং রাউন্ড টু 

বিশ্বকাপ প্রাক-বাছাইয়ের এটিই শেষ ধাপ। এখানে আছে মোট ৯ গ্রুপ। সবশেষ গ্রুপেই অস্ট্রেলিয়া, ফিলিস্তিন এবং লেবাননের সঙ্গে আছে বাংলাদেশের নাম। গ্রুপ-এ থেকে গ্রুপ আই এই ৯টি গ্রুপের শীর্ষ দুটি করে দল মিলিয়ে মোট ১৮টি দল বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের পরবর্তী রাউন্ডে যাবে। আর এই ১৮টি দল সরাসরি ২০২৭ সালের এশিয়ান কাপের টিকিট পাবে। বাদ পড়া ১৮টি দলের বিশ্বকাপ স্বপ্নের ইতি ঘটবে সেখানেই।

বাংলাদেশের ফুটবল সামর্থ্য এবং বাস্তবতা মিলিয়ে বলতেই হচ্ছে, এখান থেকে শীর্ষ দুইয়ে থাকা বেশ কঠিন। তবে যদি কোন অঘটন দেখানো সম্ভব হয়, তবে বিশ্বকাপের মূল বাছাইপর্বে চলে যাবে তারা। 

প্রাক বাছাইয়ে বাংলাদেশের গ্রুপ

বিশ্বকাপ বাছাই

দ্বিতীয় রাউন্ডের বিজয়ী ১৮টি দলকে তিন গ্রুপে ভাগ করা হবে। আবার এখানে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে রাউন্ড রবিন লিগ অনুষ্ঠিত হবে। তিনটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুটি করে দল অর্থাৎ মোট ৬টি দল ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে।

গ্রুপের তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে থাকা দলগুলো যাবে প্লে-অফে। আর প্রতি গ্রুপের শেষ দুই দল বিশ্বকাপ স্বপ্ন শেষ করে শুধুমাত্র এশিয়ান কাপের কোয়ালিফাইং নিয়ে ব্যস্ত থাকবে।

এশিয়ান প্লে-অফ 

বিশ্বকাপ বাছাইয়ের গ্রুপ থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে থাকা ৬টি দল আবারও দুই গ্রুপে হয়ে সিঙ্গেল রাউন্ড রবিন ফরম্যাটে একে অপরের মোকাবেলা করবে। এই পর্বে প্রতিটি দল মাত্র দুটি করে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। দুই গ্রুপের বিজয়ী দুটি দল ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট পাবে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দুটি দল আন্ত:মহাদেশী প্লে-অফে খেলতে যাবে।

আন্ত:মহাদেশীয় প্লে-অফ:

এখানে খেলতে আসা দলগুলোর সামনে বিশ্বকাপে খেলার শেষ সুযোগ থাকবে। অন্য মহাদেশীয় দলগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে এশিয়ান প্রতিনিধিদের মূল পর্বেও টিকিট কাটতে হবে। যদিও কোন মহাদেশীয় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে এশিয়া খেলবে সেটা এখনো নিশ্চিত হয়নি।

এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের চূড়ান্ত রাউন্ড (শুধুমাত্র এশিয়ান কাপ)

প্রাক বাছাইয়ের রাউন্ড টু তে বাংলাদেশ বাদ পড়লে সরাসরি এখানে খেলতে দেখা যাবে তাদের। বাস্তবতার নিরিখে অস্ট্রেলিয়া-ফিলিস্তিনদের গ্রুপ থেকে এখানেই দেখা যেতে পারে জামাল ভূঁইয়াদের। 

এই পর্বে আসার জন্য প্রিলিমিনারি যৌথ বাছাইপর্বে রাউন্ড ওয়ানে পরাজিত হওয়া ১১ দলের মধ্যে সর্বোচ্চ র‌্যাঙ্কধারী দলটি বাদে বাকি ১০টি দল পাঁচটি হোম অ্যান্ড এ্যাওয়ে ম্যাচে একে অপরের সাথে লড়বে। বাংলাদেশের কাছে হেরে যাওয়া মালদ্বীপকেও দেখা যাবে এখানে। জয়ী পাঁচটি দল এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের চূড়ান্ত রাউন্ডে উত্তীর্ন হবে।

প্লে-অফের পাঁচ বিজয়ী ও সর্বোচ্চ র‌্যাঙ্কধারী দলটির সাথে বিশ্বকাপ প্রিলিমিনারি যৌথ বাছাইপর্বের রাউন্ড টুয়ে বাদ পড়া ১৮টি দল অর্থাৎ সর্বমোট ২৪টি দল এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের চূড়ান্ত রাউন্ডে খেলবে। ২৪টি দলকে ৬টি গ্রুপে বিভক্ত করা হবে। প্রতি গ্রুপের শীর্ষ দলগুলো ২০২৭ এশিয়ান কাপে খেলবে।

এই পর্বেও খেলা হবে হোম এন্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে। যার অর্থ, চার দলের গ্রুপে তিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ৬টি ম্যাচ খেলতে পারবে বাংলাদেশ। সুযোগ থাকবে এশিয়ান কাপে খেলারও। 

জেএ