৩০ এপ্রিল প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় লেগ শুরুর ব্যাপারে লিগ কমিটির সভাতেই আপত্তি জানিয়েছিল ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। এই দুই ক্লাবের সঙ্গে রয়েছে আরও দুই ক্লাব মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র ও উত্তর বারিধারা। এই চার ক্লাবের মধ্যে উত্তর বারিধারা বাদে বাকি ৩ ক্লাব ইতোমধ্যে ফেডারেশনে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে তারা ৩০ এপ্রিল থেকে খেলতে পারবে না। লকডাউন শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ পর লিগ শুরু করার অনুরোধ ব্রাদার্স ইউনিয়ন, আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের। 

চার ক্লাবই পয়েন্ট তালিকার সবচেয়ে নিচে অবস্থান করছে।  প্রিমিয়ার লিগ থেকে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে নামবে ২ দল। এই চার ক্লাবের মধ্যেই ২ ক্লাব অবনমিত হবে সেটাই অনুমেয়। রেলিগেশন লড়াইটা এই চার ক্লাবের মধ্যেই। মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে মাঠের বাইরে এই চার ক্লাব এখন একে অন্যের পরম বন্ধু। সপ্তাহ খানেক লিগ পেছানোর জন্য এই চার ক্লাব কর্তারা প্রতিনিয়ত নিজেদের মধ্যে পরিকল্পনা ও আলোচনা করে যাচ্ছেন। লিগ যখনই শুরু হোক শেষ হলে খুব বড় বেশি চমক না ঘটলে এই চার দলের মধ্যে ২ দলই প্রিমিয়ার লিগের নিচের স্তরে নেমে যাবে। 

ব্রাদার্স ইউনিয়নের অন্যতম পরিচালক আমের খান ফুটবলাঙ্গনের অন্যতম বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। নিজের দায় ও ব্যর্থতা স্বীকার করেই বলছেন, ‘আমরা ক্যাম্প, অনুশীলন চালাতে পারেনি এটা আমাদের ব্যর্থতা ও সীমাবদ্ধতা অবশ্যই। পয়েন্ট না পেলে রেলিগেশনে যাব সমস্যা নেই। ফুটবলের স্বার্থেই লিগ কয়েকদিন পরে শুরু করার অনুরোধ জানাচ্ছি । প্রান্তিক ক্লাবগুলোকে নিয়ে ফেডারেশনের এ রকম সিদ্ধান্ত কাম্য না।’ তিনি এবার নিজেও ফেডারেশনের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। 

আজ (শনিবার) সকালে ফেডারেশনকে চিঠি দিয়েছে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী বলেন, ‘আমরাও খেলার পক্ষে। আমাদের দাবি হচ্ছে লকডাউন খোলার সাতদিন পর খেলা শুরু হোক।’ ব্রাদার্স ইউনিয়ন চিঠি দিয়েছে গতকাল। তাদেরও একই সুর, ‘৬ মে থেকে খেলা শুরুর দাবি জানিয়েছি আমরা। লকডাউনের মধ্যে খেলোয়াড়দের ক্যাম্পে আসা কঠিন এর পর আবার করোনা টেস্টের বিষয় জড়িত। ফলে আমাদের পক্ষে ৩০ এপ্রিল থেকে খেলা সম্ভব নয়।’

দুই ক্লাবই দ্বিতীয় লেগের মধ্যবর্তী দলবদলে ২৫ জন ফুটবলার নিবন্ধন করিয়েছে। এই ফুটবলারদের জন্য খানিকটা সময় প্রয়োজন মনে করেন ব্রাদার্স ও আরামবাগের কর্মকর্তা, ‘নতুন ফুটবলারের জার্সি তৈরি করা যাচ্ছে না লকডাউনের মধ্যে। এদের অনুশীলন করে দলের সাথে মানিয়ে নেওয়ার বিষয় রয়েছে।’

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম নিজেদের অসহায়ত্ব তুলে ধরলেন, ‘লকডাউনের মধ্যে আমাদের ক্যাম্প চালিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য ছিল না। প্রিমিয়ার লিগে টিকে থাকতে আমরা দ্বিতীয় লেগে বিদেশি নিয়েছি। ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত ফ্লাইট বন্ধ। বিদেশি ছাড়া খেলতে পারব না ফেডারেশনকে সেটি জানিয়েছি।’ উত্তর বারিধারারও আজ ফেডারেশনে চিঠি দেয়ার কথা। 

৩০ এপ্রিল থেকে প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় লেগ শুরু করার পরিকল্পনা করছে বাফুফে। খসড়া সূচিসহ লিগ আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ফেডারেশন। ১৩ ক্লাবের মধ্যে ৭-৮ ক্লাব লকডাউনের মধ্যে অনুশীলন ক্যাম্প চালিয়েছে। 

প্রকৃত অর্থে ১৩ দল নিয়ে প্রিমিয়ার লিগ খেলার অবস্থায় বাংলাদেশ এখনো আসেনি। চার ক্লাবের বর্তমান চিত্র এর বড় উদাহরণ। বছর ঘুরে একই চিত্র থাকে। চিত্রনাট্যে পুরনো ২-১ ক্লাবের সঙ্গে নতুন ২-১ ক্লাব যোগ দেয়। 

দল          পয়েন্ট    অবস্থান 
বারিধারা         দশম
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ   ৯  একাদশ 
ব্রাদার্স                  ৫   দ্বাদশ 
আরামবাগ             ত্রয়োদশ 

এজেড/এটি