ঘটনাবহুল ফেডারেশন কাপের ফাইনাল ম্যাচের ফলাফর আজ নিষ্পত্তি হয়নি। আলো স্বল্পতার জন্য অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধের পনের মিনিট খেলা হয়নি। সেই পনের মিনিট খেলা কবে, কখন হবে এটা বাফুফেকে আগামীকালকের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

ফেডারেশন কাপের বাইলজে ৭.১ নম্বর ধারায় ম্যাচ পরিত্যক্ত সম্পর্কে বলা রয়েছে। সেখানে উল্লেখ রয়েছে, নির্ধারিত সময় কিংবা অতিরিক্ত সময়ে খেলা কোনো কারণে রেফারি মাঠ ফেয়ার প্লে’র অনুপযোক্ত, আবহাওয়াগত কারণ, ফ্লাডলাইটসহ যে কোনো কারণে খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে পারে। এই অনুচ্ছেদেই রয়েছে যেখানে খেলা স্থগিত ঠিক সেখান থেকেই মাঠে অবস্থানরত খেলোয়াড়দের দিয়েই পুনরায় খেলা শুরু হবে। সেই ম্যাচ চলাকালে খেলোয়াড়দের নিষেধাজ্ঞা/কার্ড যা ছিল সকল কিছুই বলবৎ থাকবে। তবে পরিত্যক্ত ম্যাচটি কবে কখন শুরু হবে সেই দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে ফেডারেশন অথবা পেশাদার লিগ কমিটির উপর।

এই সম্পর্কে বাইলজে সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, পুনরায় খেলা শুরুর সময়, তারিখ (পরের দিন বিবেচনায় রেখে), স্থানের সিদ্ধান্ত বাফুফে অথবা পেশাদার লিগ কমিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। বাইলজের এই নির্দেশনা অনুযায়ী আগামীকাল পেশাদার লিগ কমিটি ফেডারেশন কাপ ফাইনালের অসমাপ্ত ম্যাচের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার চিন্তাভাবনা করছে। লিগ কমিটির একাধিক কর্মকর্তা এমনটি জানিয়েছেন।

ঘরোয়া ক্রিকেট ও হকিতে অনেক ম্যাচে আলোক স্বল্পতার ঘটনা ঘটেছে। পরের দিন খেলার রেকর্ডও আছে। ফুটবলে এ রকম ঘটনা নিকট অতীতে কখনো দেখা যায়নি। ফেডারেশন কাপ ফাইনাল বিশেষ পরিস্থিতিতে অসমাপ্তভাবে শেষ হওয়ায় দুই দল আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংস দুই রকম প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে।

বসুন্ধরা কিংসের ট্যাকনিক্যাল ডিরেক্টর বায়েজিদ জোবায়ের আলম নিপু রেফারির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, 'মাঠে আলোর ঘাটতি ছিল। রেফারি বিষয়টি বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।' কালবৈশাখী ঝড়ের জন্য খেলা এক ঘণ্টা দীর্ঘায়িত হয়েছে। ঝড়ের পর যখন পুনরায় খেলা শুরু হয় তখনই শঙ্কা ছিল নির্ধারিত ৯০ মিনিট অমীমাংসিত থাকলে অতিরিক্ত ৩০ মিনিট আলো স্বল্পতার মধ্যে পড়বে। সেই বিবেচনায় অতিরিক্ত সময়ের পুরো খেলাই পরের দিনের জন্য রাখা যেত বলে মত কিংসের কর্মকর্তা নিপুর, 'এটা বোঝা যাচ্ছিল অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটে গড়ালে আলোর সমস্যা হবে। ৯০ মিনিটের পরই এটা সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত ছিল অতিরিক্ত সময় আমরা আরেক দিন খেলব।'

অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের শেষ দিকে বসুন্ধরা কিংস দশ জনের দলে পরিণত হয়। আবাহনী এক জন বেশি থাকায় স্বাভাবিকভাবেই পরের অর্ধ খেলতে চেয়েছিল। আবাহনী ম্যানেজার সত্যজিৎ দাশ রুপু ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণার সময় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ম্যাচের পরে সাংবাদিকদের বলেছেন, 'খেলা বাইলজ অনুসারেই চলবে এবং রেফারির সিদ্ধান্তই ফুটবলে শেষ কথা। এখানে কোনো দলের কোনো কিছু বলার নেই। রেফারি যেটা সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই হবে।’

বাইলজ ও রেফারির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলেও পরের অর্ধ খেলার জন্য আলো ছিল বলে মনে করেন জাতীয় দলের সাবেক এই ফুটবলার, 'আমরা খেলার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। খেলার মতো আলোও ছিল।' বসুন্ধরা কিংসের ট্যাকনিক্যাল ডাইরেক্টর নিপুও বলেছেন, 'আবাহনী খেলতে চেয়েছিল।’

ম্যাচের উল্লেখযোগ্য ঘটনা-

ম্যাচ শুরু বিকেল পৌঁনে তিনটায়

রেফারি মিজানুর রহমানের অবসর

৫ মিনিট- কিংসের ল্যাসকানোর গোল
১৫ মিনিট-  ইব্রাহীমের গোলে আবাহনীর সমতা
৪২ মিনিট- বল দখলের লড়াইয়ে ফাউলে দুই দলের খেলোয়াড় ও ডাগ আউটে উত্তেজনা। দুই দলকে দু’টি করে চারটি হলুদ কার্ড

৪৭ মিনিট- কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে খেলা স্থগিত

ঝড়ের মধ্যে দর্শকদের মাঠে প্রবেশ। অস্থায়ী প্রেসবক্সের তাবু, ডাগ আউটের টেন্ট উধাও। প্লাস্টিকের চেয়ারে সাইড বেঞ্চ। এক ঘন্টা পর পুনরায় খেলা শুরু।

৯০ মিনিট শেষে- ১-১ গোলের ড্র

অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে খেলা গড়ায়। ১০৩ মিনিটে ফয়সাল আহমেদ ফাহিম সরাসরি লাল কার্ড দেখলে কিংস দশ জনের দলে পরিণত হয়।

অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের খেলা শেষে রেফারি দুই দলের সঙ্গে বৈঠক করেন। মিনিট দশেক আলোচনার পর
আলো স্বল্পতায় খেলা পরিত্যক্ত। 

ম্যাচের বাকি খেলার সিদ্ধান্ত লিগ কমিটির ওপর।

এজেড/এইচজেএস