আগামীকাল (শুক্রবার) থেকে শুরু হচ্ছে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল টুর্নামেন্ট। আজ সকালে টুর্নামেন্ট পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কা তিন দলের কোচই বাংলাদেশকে সমীহ করেছেন। 

ভুটানের কোচ থানকা মায়া ঘালি সম্মেলনের শুরুতে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান এশিয়া কাপে প্রথমবারের মতো জায়গা করে নেওয়ায়। লঙ্কান কোচ শ্রীনাথা কুমারা সরাসরি বাংলাদেশকে এই টুর্নামেন্টের ফেভারিট ও শিরোপার দাবিদার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সফরকারী তিন দলের মধ্যে নেপালই শুধু শিরোপার আশা ব্যক্ত করলেও বাংলাদেশের প্রতি সমীহ প্রকাশ করেছেন কোচ ইয়াম প্রসাদ গুরুং। 

নেপাল এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে দুর্দান্ত লড়াই করেছে। টাইব্রেকারে তারা হেরে যাওয়ায় এশিয়ান কাপে খেলতে পারছে না। নেপাল সিনিয়র দলে খেলা কাউকে অ-২০ স্কোয়াডে রাখেনি। নেপালের কোচ প্রসাদ গুরুং বলেন, ‘আমাদের এই দলে সিনিয়র দলের কেউ নেই। এখান থেকে খেলে খেলোয়াড়রা প্রস্তুত হয়ে জাতীয় দলে যাবে।’

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক আফিদা খন্দকার অ-২০ দলেরও অধিনায়ক। বাংলাদেশ যখন বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন দেখছে, সেখানে জাতীয় দলের অধিনায়কই আবার সাফে বয়সভিত্তিক দলে নেতৃত্বে। এ নিয়ে আফিদা বলেন, ‘আমরা এশিয়া কাপ খেলব, এজন্য সাফকে ছোট করে দেখার কিছু নেই। আমরা দক্ষিণ এশিয়ার লোক, সাফ খেলব।’ আফিদার চেয়ে আরেকটু দৃঢ় কণ্ঠে কোচ পিটার বাটলার বলেন, ‘অন্য দল সিনিয়র খেলোয়াড় নিয়েছে কি নেয়নি এটা তাদের ব্যাপার। আমরা আমাদের দলের উন্নতির প্রয়োজনে নিয়েছি।’

চার জাতি সাফ অ-২০ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। স্বাগতিক দলের পর সিনিয়র দলের সাতজন ফুটবলার রয়েছেন বয়সভিত্তিক দলে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ পরিষ্কার ফেভারিট। তাই আগামীকাল প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের বিপক্ষে রক্ষণাত্মক কৌশলে খেলবে বলে জানান কোচ শ্রীনাথা, ‘সত্যিকার অর্থে আমাদের বাংলাদেশের বিপক্ষে আক্রমণাত্মক খেলার সামর্থ্য নেই। আমাদের দলের অনেক খেলোয়াড় অ-১৮ বয়সী। অভিজ্ঞতার জন্যই আমাদের এই টুর্নামেন্টে আসা।’ লঙ্কান পুরুষ ফুটবল দলে প্রবাসী ফুটবলার রয়েছেন অনেকে। নারী ফুটবল দলে সেরকম কেউ নেই অবশ্য। 

ভুটানে নারী ফুটবল লিগ চলছে। অ-২০ দলে থাকা প্রত্যেক ফুটবলারই লিগে খেলছেন। বাংলাদেশের ১০ জন সিনিয়র ফুটবলার ভুটান লিগে খেলছেন। সংবাদ সম্মেলনে আসা দলটির অধিনায়ক শেদু তেশরিং বলেন, ‘বাংলাদেশের মারিয়া মান্ডার সঙ্গে আমার খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সে খুব ভালো গতিশীল খেলোয়াড়।’ শ্রীলঙ্কার মতো ভুটানও মূলত অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য এসেছে। 

এক সময় দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলে ভারত ও নেপাল শ্রেষ্ঠত্বের জন্য লড়ত। এই টুর্নামেন্টে ভারত না থাকায় বাংলাদেশ-নেপাল লড়াই হবে। টুর্নামেন্টের ফরম্যাট অনুযায়ী কোনো ফাইনাল নেই। সবাই সবার সঙ্গে দুটি করে ম্যাচ খেলবে। ছয় ম্যাচ শেষে যারা পয়েন্টের শীর্ষে থাকবে তারাই চ্যাম্পিয়ন। 

নেপাল মাস দেড়েকের প্রস্তুতি নিলেও শিরোপায় নজর কোচ প্রসাদ গুরুংয়ের, ‘আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। বাংলাদেশ অবশ্যই কঠিন প্রতিপক্ষ, এরপরও আমরা আশাবাদী। এবার ঘাসের মাঠে খেলা হচ্ছে, বিগত সময়ে বাংলাদেশে টার্ফে (কমলাপুর স্টেডিয়াম) হয়েছিল।’

বাংলাদেশ দলের কোচ ও অধিনায়ক দুই জনই চ্যাম্পিয়ন শিরোপা ধরে রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। জাতীয় দলে গোলের কাজটি করতেন শামসুন্নাহার, ঋতুপর্ণা ও তহুরা। জুনিয়র দলে তারা না থাকায় গোলের জন্য সাগরিকাদের ওপর ভরসা কোচ বাটলারের। 

এজেড/এএইচএস