উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
রিয়াল-আর্সেনালের শুভসূচনা, জুভেন্তাস-ডর্টমুন্ডের রুদ্ধশ্বাস লড়াই
ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতা উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নতুন মৌসুম শুরু হয়েছে। প্রথম দিন মাঠে নেমে শুভসূচনা করেছে রিয়াল মাদ্রিদ ও আর্সেনালের মতো জায়ান্ট ক্লাবগুলো। এদিকে, রোমাঞ্চকর লড়াই উপহার দিয়েছে জুভেন্তাস ও বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। দুই দলের ৮ গোলের রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষ হয়েছে ৪-৪ সমতায়।
রিয়াল মাদ্রিদ ২ : ১ অলিম্পিক মার্শেই
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে স্বাগতিক রিয়ালকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে ফরাসি ক্লাব মার্শেই। ৪৩ শতাংশ বল দখলে রেখে ২৮টি শট নেয় লস ব্লাঙ্কোসরা। এর মধ্যে তারা ১৫টি শট লক্ষ্যে রাখতে পারে। বোঝাই যাচ্ছে মার্শেই গোলরক্ষক জেরোনিমো রুলিকে কতটা পরীক্ষা দিতে হয়েছে। তবে রিয়ালের দুটি গোলই হয়েছে কিলিয়ান এমবাপের নেওয়া পেনাল্টিতে। এ ছাড়া ৭২ মিনিটে গোলরক্ষককে ঢুস মেরে লাল কার্ড দেখেন রিয়ালের তারকা ডিফেন্ডার দানি কারভাহাল।
বিজ্ঞাপন
১৫ শট নিয়ে ৫টি লক্ষ্যে রাখতে পারা মার্শেই প্রথম রিয়ালের জালে বল পৌঁছায়। গ্রিনউডের কাছ থেকে বল পেয়ে জোরালো শটে বার্নাব্যু শিবিরে স্তব্ধতা নামান টিম উইয়াহ। এর আগে ম্যাচের মাত্র পঞ্চম মিনিটেই ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছাড়েন রিয়ালের সেন্টারব্যাক ট্রেন্ট আলেকজান্ডার আর্নল্ড। তার বদলি নামা কারভাহালই পরে লাল কার্ড দেখেছেন। মুহুমুর্হু আক্রমণ সত্ত্বেও ওপেন শটে গোল পায়নি রিয়াল। ২৮ ও ৮১ মিনিটে পাওয়া দুটি গোলই হয়েছে পেনাল্টিতে। দু’বারই স্পট কিকে সফল হয়ে এমবাপে ম্যাচসেরা হয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
আর্সেনাল ২ : ০ অ্যাথলেটিক বিলবাও
ঘরের মাঠ সান মামেসে ইংলিশ জায়ান্ট আর্সেনালকে আতিথ্য দিতে নেমে হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে স্প্যানিশ ক্লাব অ্যাথলেটিক বিলবাও। অবশ্য ম্যাচের দুটি গোলই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। ডেডলক ভাঙা গোলটি আসে ৭২ মিনিটে। গানারদের পক্ষে দুটি গোলই করেছেন দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামা গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লি ও লিয়েন্দ্রো ট্রোসার্ড। ম্যাচের ৬২ শতাংশ পজেশনের পাশাপাশি আর্সেনাল ১১ শটের মধ্যে ৬টি লক্ষ্যে রাখতে পারে।
প্রথমার্ধে সতীর্থের সঙ্গে সংঘর্ষে মাথায় রক্ত ঝরে ভিক্টর গিয়োকেরেসের। এরপর ব্যান্ডেজ নিয়ে খেলেছেন ৬৫ মিনিট পর্যন্ত। তার বদলি নামা ট্রোসার্ড ৭২ মিনিটে লাফিয়ে ফ্লিক করে চমৎকার এক পাস দেন মার্টিনেল্লিকে। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ক্ষিপ্রতার সঙ্গে বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেছেন। ৮৭ মিনিটে স্কোরশিটে নাম তোলেন ট্রোসার্ডও। এবার তাকে বল বাড়িয়ে যেন আগের অ্যাসিস্ট শোধ করলেন মার্টিনেল্লি। তার কাট-ব্যাকে পাওয়া বল দুজনের মাঝ দিয়ে জালে জড়ান বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড।
জুভেন্তাস ৪ : ৪ বরুসিয়া ডর্টমুন্ড
তুরিনের অ্যালিয়াঞ্জ স্টেডিয়ামে স্বাগতিক জুভেন্তাসের ভিত প্রায় নড়িয়ে দিচ্ছিল বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। ৭০ মিনিটের আগপর্যন্ত লড়াই ছিল প্রায় সমান তালে। জুভরা লিড নেওয়ার কিছুক্ষণ বাদেই সমতায় ফেরে ডর্টমুন্ড। তবে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে তারা এগিয়ে ছিল ৪-২ ব্যবধানে। এরপর যোগ করা সময়ে অবিশ্বাস্য দুই গোলে ইতালিয়ান ক্লাবটি জার্মান জায়ান্টদের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে।
অথচ ৮ গোলের ম্যাচটিতে প্রথমার্ধ ছিল গোলশূন্য সমতায়। ৫২ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে জার্মান ফরোয়ার্ড করিম আদিয়েমি প্রথম ডেডলক ভাঙেন। ৬৩তম মিনিটে জুভদের দুর্দান্ত গোলে সমতায় ফেরান কেনান ইলদিজ। ৬৫তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে আরেকটি জোরালো শটে গোল করে ডর্টমুন্ডকে ফের এগিয়ে দেন ফেলিক্স কালু এনমেচা। ৬৭ মিনিটে জুভদের আবারও সমতায় ফেরান দুসান ভ্লাহোমিচ। ৭৪ মিনিটে ইয়ান কৌতো এবং ৮৬ মিনিটে পেনাল্টিতে রামি বেন্সেইবানি ডর্টমুন্ডদের ৪-২ গোলে এগিয়ে দেন।
৯০ মিনিট শেষে খেলা গড়ায় যোগ করা সময়ে। যার চতুর্থ সতীর্থের পাসে ছুটে গিয়ে ভ্লাহোভিচ কাছ থেকে নেওয়া শটে বল জালে পাঠান। মিনিট দুয়েক পর এই সার্বিয়ান ফরোয়ার্ডের ক্রসে হেডে বল জালে পাঠান লয়েড কেলি। পানি খুঁজে পেয়ে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে জুভেন্তাস শিবির। শেষ বাঁশি বাজার আগমুহূর্তে করা সেই গোলটি জুভদের হার থেকে বাঁচায়।
এএইচএস