ব্রাজিল কোচ তিতে/ফাইল ছবি

শেষ মুহূর্তে কোপা আমেরিকা আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছিল ব্রাজিল। এরপর থেকে তাদের কাজটা কেমন ‘ভালো’ হচ্ছে, তার একটা আভাস মেলে অংশ নেওয়া বড় দলগুলোর কথা শুনলে। ব্রাজিল কোচ তিতে তো সমালোচনা করে একবার জরিমানারও শিকার হয়েছেন। তবে তাতেও তাকে দমিয়ে রাখা যায়নি। সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে আবারও মাঠের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন তিনি।

কনমেবল অবশ্য এমন সমালোচনার মধ্যেই শনিবার জানিয়েছে, কোপা আমেরিকার ফাইনালের ভেন্যু, মারাকানা স্টেডিয়ামের মাঠ সংস্কারের কাজ চলছে। ফাইনালের আগেই খেলার জন্য উপযুক্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে যাবে সেখানে। 

রিও ডি জেনিরোর সবচেয়ে বড় মাঠটাই ঠিক নেই, পিচের জীর্ণ অবস্থার কারণে বিখ্যাত মারাকানায় দেওয়া হয়নি গ্রুপ পর্বের খেলা। ফলে রিওর সব ম্যাচ চলে গেছে এস্তাদিও নিল্টন সান্তোসের দখলে। ২০১৬ সালে এই মাঠটা ব্যবহৃত হয়েছিল ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের খেলায়। এখন এ মাঠটা বোটাফোগোর ‘হোম’, যারা আবার নেমে গেছে ব্রাজিলের দ্বিতীয় বিভাগের লিগে!

মাঠের অবস্থা টিভি পর্দায় দেখলেও একটা আন্দাজ পেয়ে যেতে পারেন আপনি। জায়গায় জায়গায় দেবে গেছে, পাস দিলে হঠাতই বল যাচ্ছে থেমে। এ দুরাবস্থা শুধু নিল্টন সান্তোসেরই নয়, কুইয়াবার অ্যারেনা পান্তানালেও খেলা হচ্ছে গ্রুপ পর্বের, আরও একটা ম্যাচও বাকি। এমন জীর্ণ মাঠেই চলছে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর।

শিরোপা প্রত্যাশী ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, কিংবা চিলি; সব দলের মূল খেলোয়াড়রাই খেলেন ইউরোপের শীর্ষ পর্যায়ের লিগগুলোতে। বাকি দলগুলো থেকেও নেহায়েত কম খেলোয়াড় নেই আটলান্টিকের ওপারের লিগগুলোতে। সেখানকার উন্নতমানের মাঠে খেলে এসে কোপা আমেরিকায় এমন পিচে নামতে হলে স্বাভাবিকভাবেই পড়ে যায় খেলার মান। 

এর ফলে মাঠের দুরাবস্থা নিয়ে অভিযোগ ছিল শুরু থেকেই। লিওনেল মেসি, নেইমার, আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি; কারা বাদ থাকেননি এই মিছিলে? 
শেষমেশ যোগ দিয়েছিলেন তিতে, বলেছিলেন এ মাঠ ‘অগ্রহণযোগ্য’। তাতে গুণতে হয়েছিল পাঁচ হাজার ডলারের জরিমানাও। কিন্তু তাতেও তাকে দমিয়ে রাখা চলেনি। মারাকানায় যে ফাইনালের খেলা হবে, সে মাঠের অবস্থা নিয়েও তুলেছেন প্রশ্ন। 

বলেছেন, ‘নিল্টন সান্তোসের মাঠ নিয়ে কথা বললে আমি জরিমানার মুখে পড়ব। এটা আবারও হবে। মারাকানা ফাইনালের আগে খুব ভালো হয়ে যাবে না। সময়টা খুব কম। আপনি এটা লিখে নিতে পারেন।’ যদিও টুর্নামেন্ট কমিটি জানাচ্ছে, ফাইনালের আগেই ভালো চেহারায় ফিরবে মারাকানা।

গত ১৭ জুন নেইমার পেরুর বিপক্ষে গোল করেন। তার একটা ছবি ইনস্টাগ্রামে দিয়ে তিনি লিখেন, ‘এনগেনহাওয়ের ‘সুন্দর’ পিচে কালকের গোলটার উদযাপন করছি। দয়া করে মাঠটা ঠিক করুন।’ তার সঙ্গে সুর মিলিয়েছিলেন পেরুভিয়ান গোলরক্ষক পেদ্রো গালেসিও। বলেছিলেন, ‘ঠিকঠাক গোল কিকই নেওয়া যায় না এখানে, বল দেবে যায়।’ 

এর তিন দিন আগে চিলির বিপক্ষে ড্র করে মেসি বলেছিলেন, ‘মাঠটাও খুব একটা সাহায্য করেনি আমাদের।’ আর্জেন্টাইন কোচ স্ক্যালোনির কথা তো ছিল আরও চাঁচাছোলা। বলেছিলেন, ‘এটা এমন একটা মাঠ, যেটা অন্য কোনো খেলার জন্য ব্যবহার করা গেলেও, ফুটবলের জন্য এর ব্যবহার চলে না।’

কোপা আমেরিকার মাঠে এমন পরিস্থিতি নতুন কিছু নয় মোটেও। এর আগে গেল আসরে এই ব্রাজিলেই মাঠ নিয়ে ছিল বেশ অসন্তোষ। এর ভেতর দিয়েই আয়োজিত হয়েছিল দক্ষিণ আমেরিকার সর্বোচ্চ এই টুর্নামেন্ট।

এনইউ