সালমার এলিট হওয়ার সংগ্রাম
গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। এর মধ্যেও দেশের শীর্ষ স্থানীয় রেফারিরা এসেছিলেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। ফিফা সহকারি রেফারি সালমা আক্তারের ফিটনেস টেস্ট দেখতেই তাদের আগমন। এএফসি’র এলিট কোর্স এবং আগামী বছরের ফিফার ফিটনেস একবারেই হয়ে গেল। ফিটনেস পরীক্ষা তিনটি ধাপে হয়েছে, সবগুলোই নির্দিষ্ট সময়ের আগে শেষ করেছেন ভালোভাবে। আগামীবারও ফিফা সহকারি রেফারি ব্যাজ পাচ্ছেন সালমা। এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষা। এএফসি’র এলিটে থাকতে পারবেন কি না জানা যাবে কিছু দিন পর।
বিকেল পাঁচটায় শুরু হয় সালমার ফিটনেস পরীক্ষার প্রথম পর্ব। প্রথমে মার্কার দিয়ে স্প্রিন্টের মতো পরীক্ষা ছিল। যেটা রেফারিং টেস্টে বলা হয় কোডা। ১১ সেকেন্ডের মধ্যে এই পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হয় সেটা সালাম ১০ সেকেন্ডের কিছু বেশি সময়ে শেষ করেছেন।
এই পর্ব শেষ হওয়ার তিন মিনিটের মধ্যে সরাসরি স্প্রিন্ট পর্ব। ৩০ মিটার স্প্রিন্ট পাঁচ বার দিতে হয়েছে। ৩০ মিটার স্প্রিন্ট নূন্যতম ৫.১০ সেকেন্ডের মধ্যে দিতে হবে। সালমা সর্বোচ্চ ৪.৯ সেকেন্ড সময় নিয়েছেন একবার। এর চেয়ে কম সময়েও করেছেন।
দ্বিতীয় পর্ব শেষ হওয়ার আট মিনিটের মধ্যে রানিং। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের ৪০০ মিটারের অ্যাথলেটিক ট্র্যাক অন্তত ১০ বার প্রদক্ষীণ করতে হবে। সাধারণভাবে দৌড় নয়। ৭৫ মিটার রানিং ১৭ সেকেন্ড আবার ২৫ মিটার ওয়াকিং ২২ সেকেন্ড। এভাবে করে ন্যূনতম ১০ চক্কর দেওয়ার নিয়ম। সালমা ১২ টি চক্কর দিয়েছেন। এই ১২ চক্করের সময় মাত্র একটি সতর্কতা ছিল। দুইটির বেশি সতর্কতা থাকলে টেস্ট বাতিল হয়। তৃতীয় ধাপও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করেছেন।
বাফুফের রেফারিজ ফিটনেস ইন্সট্রাকটর সুজিত ব্যানার্জি চন্দন সালমার তিন টাইমিংয়ে বেশ সন্তুষ্ট, ‘প্রতিটি পর্বে সে দারুণ টাইমিং করেছে। আরেকটু সময় ও প্রস্তুতি পেলে আরও ভালো টাইমিং করতো।’ গতবার ফিফা ফিটনেস টেস্টে সালমা ১৫ চক্কর দিয়েছিলেন। যা বাংলাদেশের রেফারিংয়ে বিশাল ব্যাপার ছিল।
বিজ্ঞাপন
বাফুফের হেড অফ রেফারিজ আজাদ রহমান বলেন, ‘আমরা আজকের পরীক্ষার সম্পূর্ণ ফুটেজ এএফসিতে পাঠাব। পাশাপাশি সেই দিনের ম্যাচের ফুটেজও দেব। এএফসি’র তাত্ত্বিক কোর্সে তারা ভালো করেছে। আশা করি এই টাইমিং ও ভিডিও ফুটেজে এএফসি ইতিবাচক কিছুই বলবে।’ এএফসি’র এলিট কোর্সে প্রবেশ করতে পারলে সালমা এশিয়ার নারী ফুটবলের শীর্ষ স্তরের ম্যাচ পরিচালনা করতে পারবেন।
এএফসি’র এলিট কোর্সে সুযোগ পাওয়া অনেক প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ। তবে আগামী বছর ফিফা নারী সহকারি রেফারি হিসেবে সালমা থাকছেন এটা প্রায় নিশ্চিত, ‘সে ফিটনেস টেস্টে উত্তীর্ণ হয়েছে। আমরা ফিফাতে এই রিপোর্ট দেব। ফিফা এই ব্যাপারে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে’-বলেন আজাদ রহমান।
সালমার ফিটনেস টেস্টের সময় উপস্থিত ছিলেন দীর্ঘদিন এএফসি’র এলিট প্যানেলে থাকা রেফারি তৈয়ব হাসান। সালমার টাইমিং ও ফিটনেসের প্রশংসা করলেন সাবেক এই ফিফা রেফারি, ‘রেফারিংয়ের জন্য ফিটনেস হচ্ছে পাসপোর্ট। সে অত্যন্ত ফিট এবং দারুণ টাইমিংয়ের সাথে পরীক্ষায় ভালো করছে।’
এজেড/এমএইচ
বিজ্ঞাপন