হকি নির্বাচন : শুরুতেই কাউন্সিলর জটিলতা
বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন আসন্ন। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। এরপর নির্বাচন কমিশন থেকে হকি ফেডারেশনকে কাউন্সিলরের তালিকা প্রদান করতে বলা হয়। তবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে তালিকা প্রেরণ করতে সম্প্রতি আরও কয়েকদিন সময় চেয়েছে হকি ফেডারেশন। সেই প্রেক্ষিতে কাউন্সিলর প্রেরণের সময়সীমা ২১ মে পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।
আসন্ন নির্বাচনের কাউন্সিলরশিপ নিয়ে নানা অভাব-অভিযোগ ক্রীড়াঙ্গনে আলোচিত হচ্ছে। ময়মনসিংহ বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ান বলেন, ‘কাউন্সিলরশিপের চিঠি সব সময় বিভাগের সাধারণ সম্পাদক পেয়ে থাকেন। কিন্তু এবার আমি চিঠি পাইনি।’
বিজ্ঞাপন
সাধারণ সম্পাদক চিঠি না পেলেও তার সংস্থা থেকে ইতোমধ্যে নাম পাঠানো হয়েছে বলে জানতে পেরেছেন। এর প্রেক্ষিতে আগামী রোববার ময়মনসিংহ বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা হকি ফেডারেশনকে চিঠি দেবে। ময়মনসিংহ বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক চিঠি পাননি, অন্যদিকে পটুয়াখালী জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাউন্সিলরে পরিবর্তন আনছে বলে জানা গেছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্ভরশীল এক সূত্র নিশ্চিত করেছে, কাউন্সিলরশিপ পরিবর্তন করে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের সম্মতিতে সাবেক খেলোয়াড় মাকসুদের নাম পাঠানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন >> ৩২ বছর পর প্রথম বিভাগে ঢাকা ইয়াংস্টার
বিজ্ঞাপন
জেলা-বিভাগের চেয়ে ঢাকার ক্লাব পর্যায়ে কাউন্সিলরশিপ নিয়ে সমস্যা আরও প্রকট। বিশেষ করে ঢাকা ইউনাইটেড, শান্তিনগর, কম্বাইন্ড, মুক্ত বিহঙ্গের কাউন্সিলরশিপের বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করেছে। এই ক্লাবগুলো থেকে দুটি করে নাম আসছে কাউন্সিলর হিসেবে। তার মধ্যে ফেডারেশন ঢাকা ইউনাইটেড ও কম্বাইন্ড ক্লাবের কাছে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত নম্বর ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর চেয়েছে। জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোর নির্বাচনে ক্লাবের কাছে কখনোই এই বিষয়গুলো চাওয়া হয়নি বিধায় বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে ক্রীড়াঙ্গনে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এই ক্লাবগুলোতে হকির যারা প্রকৃত সংগঠক তারা কাউন্সিলর হতে পারছেন না। তারা বঞ্চিত হলে আইনি পথে হাটতে পারেন।
হকি ফেডারেশনের আসন্ন নির্বাচনে কাউন্সিলরশিপ সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে। আসন্ন কমিটিতে বর্তমান পদধারীদের অনেকেরই না থাকার সম্ভাবনা দেখা গেছে। কারণ কাউন্সিলরশিপ জোগাড়ে ব্যর্থ হয়েছেন অনেকে। বর্তমান কমিটির যুগ্ম সম্পাদক গতবার ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কাউন্সিলর ছিলেন। এবার সেখান থেকেও তিনি কাউন্সিলর হতে পারেননি। আম্পায়ার্স বোর্ড থেকেও হতে পারবেন, এমন আশাও করতে পারছেন না তিনি। নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য হকির সাবেক সুপারস্টার রফিকুল ইসলাম কামাল গতবার দ্বিতীয় বিভাগ ক্লাবের কাউন্সিলর পেয়েছিলেন। এবারও কোনো ক্লাব কিংবা জেলা থেকে কাউন্সিলরশিপ পাননি। ফলে তারও কমিটিতে থাকা এখন সঙ্কটের মুখে।
আরও পড়ুন >> হকিতে ইতিহাসসেরা প্রস্তুতির দাবি!
ক্লাব, জেলা ও সংস্থা থেকে কাউন্সিলরশিপ না পেয়ে, এখন সবার আশা-ভরসা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পাঁচ কাউন্সিলরের ওপর। সেখানেও একটা অলিখিত সমঝোতা হয়েছে বলে জানা গেছে। পাঁচ কাউন্সিলর ভাগাভাগি হতে পারে তিন ক্লাব আবাহনী, মোহামেডান এবং উষার মধ্যে। সেক্ষেত্রে আবাহনী কোটায় জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্রীড়াবিদ এহসান রানা এনএসসি কোটায় কাউন্সিলর হতে পারেন। গতবার তিনি নিজ জেলা ময়মনসিংহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাউন্সিলর ছিলেন।
কয়েকটিতে জটিলতা থাকলেও, অনেক সংস্থার কাউন্সিলরশিপ ইতোমধ্যে ফেডারেশনে জমা পড়েছে। মোহামেডান ক্লাবের কাউন্সিলর হয়েছেন সাবেক খেলোয়াড় ও ম্যানেজার আরিফুল হক প্রিন্স, ঢাকা জেলা থেকে তারিকুজ্জামান নান্নু, ওয়ারী থেকে নাজিরুল ইসলাম নাজু, আজাদ স্পোর্টিংয়ের মজিবুর রহমানসহ অনেকের নাম কাউন্সিলর হিসেবে নিজ নিজ সংস্থা থেকে ফেডারেশনে পাঠানো হয়েছে।
এজেড/এএইচএস