ব্যাডমিন্টন নির্বাচন: তারকা ক্রীড়াবিদ বনাম ফোরাম
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে সকাল থেকেই ভিড়। ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেয়ার জন্য দুই পক্ষই উপস্থিত। জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্রীড়াবিদ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জোবায়েদুর রহমান রানার নেতৃত্বাধীন প্যানেল ২১ টি ও অন্য দিকে জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদ ২৭ টি মনোনয়ন জমা দিয়েছে।
কার্যনির্বাহী কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক দু’টি, কোষাধ্যক্ষ, সহ-সভাপতি চারটি ও নির্বাহী সদস্য ১৬ টি পদ রয়েছে। ফুটবল, ক্রিকেট বাদে সকল ফেডারেশনের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু সাধারণ সম্পাদক পদ। সেই সাধারণ সম্পাদক পদে জোবায়েদুর রহমান রানা, আমির হোসেন বাহার ও আলমগীর হোসেনের মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। তিন জনেরই আবার সহ-সভাপতি পদে মনোনয়ন জমা পড়েছে।
বিজ্ঞাপন
গতকাল দফায় দফায় এক প্যানেল করার চেষ্টা করা হলেও শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। দুই পক্ষই দুই বিষয়ে অনড় থাকায় দুই প্যানেল থেকে আজ মনোনয়ন জমা পড়েছে। তবে ১৮ মে প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত অবশ্য আলোচনার সুযোগ দেখছে উভয় পক্ষই।
বিজ্ঞাপন
ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের নির্বাচনে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কোটায় কাউন্সিলর হয়েছিলেন ফুটবল লিগের চ্যাম্পিয়ন দল বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান। দেশের অন্যতম শীর্ষ গ্রুপ বসুন্ধরার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে সহ-সভাপতি করতে চেয়েছিল দুই প্যানেলই। সমঝোতার প্যানেল না হওয়ায় তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি।
জোবায়েদুর রহমান রানার নেতৃত্বাধীন প্যানেল তারকাখচিত। ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম কিংবদন্তী কামরুন নাহার ডানা, মরিয়ম তারেক, সাবেক চ্যাম্পিয়ন রাসেল কবির সুমন, আন্তর্জাতিক আম্পায়ার ইসমাইল যথাক্রমে সহ-সভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক ও কোষাধক্ষ্য প্রার্থী। অন্য দিকে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের নেতৃত্বাধীন প্যানেলে তারকা ক্রীড়াবিদ সেই অর্থে নেই। সামগ্রিকভাবে ক্রীড়াঙ্গনে তাদের পরিচিতিও খুব কম। এরপরও ভোটের ব্যালটে তাদের জয়ের সম্ভাবনাই বেশি। কারণ ৯৮ ভোটের মধ্যে ৬৯ টি জেলা-বিভাগের। ক্রীড়াঙ্গনের নির্বাচনগুলো জেলা ও ক্রীড়া সংগঠক পরিষদই জয়-পরাজয়ের চাবিকাঠি হিসেবে কাজ করছে। ব্যাডমিন্টনও এর ব্যতিক্রম নয়।
এরপরও ভোটারদের উপর আস্থা রাখতে চান সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী জোবায়েদুর রহমান রানা, 'আপনারা যদি দু’টি প্যানেল বিশ্লেষণ করেন তাহলে দেখতে পাবেন ব্যাডমিন্টনের প্রকৃত এবং যোগ্য লোকরা কোথায় বেশি। ব্যাডমিন্টনের উন্নয়নের জন্য আশা করি ভোটাররা সেটা বিবেচনা করবে।' ক্রীড়াঙ্গনের বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর কামরুন নাহার ডানা সহ-সভাপতি প্রার্থী হয়েও বাস্তব সত্য বিষয় আবার সামনে এনেছেন, 'ক্রীড়াঙ্গনে নির্বাচন গুটিকয়েক লোক নিয়ন্ত্রণ করে। খেলাধূলার মান উন্নয়নের জন্য এই চক্র ভাঙা প্রয়োজন।’
জোবায়েদুর রহমান রানার প্যানেলের সমর্থক হিসেবে এসেছিলেন সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার সানোয়ার হোসেন। বাংলাদেশ বিমানে কর্মরত এই ক্রীড়াবিদের ব্যাডমিন্টনের প্রতিও রয়েছে গভীর ভালোবাসা, 'আমি একজন ক্রিকেটার হলেও ফুটবল আমার প্রিয় খেলা। ব্যাডমিন্টনও যথেষ্ট পছন্দ করি। এই খেলাটির উন্নয়নের স্বার্থে রানা ভাই, ডানা আপা, সুমনদের সমর্থন করছি। তারা ফেডারেশনে আসতে পারলে খেলাটির চিত্র বদলাবে।'
সানোয়ার ক্রিকেটার হলেও কর্পোরেট ও ব্যক্তি পর্যায়ে ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট আয়োজন করেন। এক মেয়াদ আগে ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের কাউন্সিলরও ছিলেন নিজ জেলা ময়মনসিংহ থেকে। জোবায়েদুর রানারা মনোনয়ন জমা দেয়ার পর ফোরাম তাদের প্যানেল জমা দেয়। নির্বাচন কমিশনে মনোনয়ন জমা দেয়ার পর ফোরামের দুই সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আমির হোসেন বাহার ও আলমগীর হোসেন গণমাধ্যমে নিজেদের লক্ষ্য ও প্রস্ততির কথা জানিয়েছেন। বরগুনা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক আলমগীর সাধারণ সম্পাদক হলে সবাইকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে চেয়েছেন। অন্যদিকে আমির হোসেন বাহার তার আগের সাধারণ সম্পাদকের অভিজ্ঞতার আলোকে ফেডারেশনেক এগিয়ে নেয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তার দুই জন প্রার্থী হলেও এই প্যানেলের চাবিকাঠি অন্যদের হাতে।
এজেড/এইচজেএস