ছেলের সঙ্গে খেলছেন গ্র্যান্ডমাস্টার রিফাতও
বাংলাদেশের দাবার তৃতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার রিফাত বিন সাত্তার। আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত থাকার কারণে অনিয়মিতভাবে দাবা খেলতে হয় এই গ্র্যান্ডমাস্টারকে। জাতীয় এবং প্রিমিয়ার লিগ ছাড়া তেমন খেলেন না রিফাত। চলমান আন্তর্জাতিক রেটিং দাবায় অবশ্য খেলছেন এই গ্র্যান্ডমাস্টার।
আন্তর্জাতিক রেটিং দাবা টুর্নামেন্টে রিফাতের সঙ্গে খেলছেন তার ছেলে শায়ান আরীব রিফাত। মূলত ছেলের জন্যই এই টুর্নামেন্টে খেলা গ্র্যান্ডমাস্টারের, 'সাধারণত এমন টুর্নামেন্টে আমার খেলার সুযোগ হয়ে উঠে না কর্মব্যস্ততার জন্য। ছেলের পরীক্ষা শেষ দাবা টুর্নামেন্ট খেলতে চেয়েছে তাই অনেকটা ওর জন্যও খেলা বলা যায়।' আন্তর্জাতিক রেটিং দাবা টুর্নামেন্টে গ্র্যান্ডমাস্টার থেকে শুরু করে দাবা খেলতে আগ্রহী যে কেউ খেলতে পারেন।
বিজ্ঞাপন
রিফাতের সমসাময়িক দাবাড়– আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান। জিয়ার ছেলে তাহসিন তাজওয়ারের ছয় বছর বয়স থেকেই দাবায় হাতেখড়ি। জিয়ার ছেলে ফিদে মাস্টার হয়ে দাবার সর্বোচ্চ আসর অলিম্পিয়াডেও খেলেছে। নিজের ছেলেকে নিয়ে রিফাত অবশ্য এত দূর ভাবছেন না, 'আমার ছেলে একেবারে শখ থেকেই খেলে। যদি সে ভালো খেলতে থাকে এবং খেলতে চায় আমার কোনো বাধা নেই। আবার আমার তার প্রতি নির্দেশনা বা চাপও নেই বড় দাবাড় হতে হবে। সম্পূর্ণ তার ইচ্ছের উপর।’ সতীর্থ জিয়ার সঙ্গে নিজের পাথর্ক্য নিরুপণ করলেন এভাবে, 'জিয়ার পরিবার পুরোটাই দাবাময়। জিয়ার বাসায় দাবার কোচিং, নিজে খেলে আমার এর উল্টো। পেশা-পরিবারের পর দাবা।’
বিজ্ঞাপন
গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েও গ্র্যান্ডমাস্টারের ছেলে দাবায় এসেছে সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছে। বাবার হাতে সেভাবে হাতেখড়ি হয়নি তার, 'সত্যিকার অর্থে আমি তাকে কিছুই শেখাইনি। ভিডিও , অনলাইন এবং নিজে খেলে খেলেই সে শিখেছে।’ রিফাতের ছেলে শায়ান আরীব এর আগেও টুকটাক দাবা টুর্নামেন্ট খেলেছেন। এবারই প্রথম বাবা-ছেলে একসঙ্গে খেলছেন। তাই সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া আরীবের কাছেও এই টুর্নামেন্ট একটু ভিন্ন, 'বাবা ও আমি একই সঙ্গে প্রথমবারের মতো খেলছি, ভালোই লাগছে। দাবা মজা লাগলেও পড়াশোনাতেই বেশি সময় দেই।'
২০১২ সাল থেকে জিয়ার সঙ্গে দাবা খেলছেন তার পুত্র তাহসিন তাজওয়ার। চলমান রেটিং টুর্নামেন্টেও তারা খেলছেন। প্রথমবারের মতো দুই গ্র্যান্ডমাস্টার ও তাদের পরবর্তী প্রজন্ম একই টুর্নামেন্ট খেলছে। তাই জিয়ারও একটু ভিন্ন অনুভূতি, 'দাবায় দিনকে দিন দুই প্রজন্মের মেলবন্ধন হচ্ছে। এতে অন্যরাও দাবায় আকৃষ্ট হয়ে দাবার একটি সংস্কৃতি গড়ে উঠবে।’
বাংলাদেশের পাঁচ গ্র্যান্ডমাস্টারে মধ্যে জিয়াই দেশে-বিদেশে সবচেয়ে বেশি টুর্নামেন্ট খেলেন। জিয়ার প্রায় সমান প্রতিযোগিতায় অংশ নেন আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব। দুই জনই আবার কোচিংও করান। উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ অনিয়মিতভাবে খেলেন। নিয়াজ দাবার পাশাপাশি ব্যবসা সংক্রান্ত কাজও করেন। নিয়াজের চেয়ে আরো কম খেলা রিফাত আন্তর্জাতিক উন্নয়ন কর্মী। আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার আব্দুল্লাহ আল রাকিব করোনার সময় থেকে দাবা বিচ্ছিন্নতা। নারায়ণগঞ্জে পরিবারের সঙ্গেই থাকেন।
এজেড/এইচজেএস