সাবিনাদের ছাদখোলা বাসে সংবর্ধনার দিনটিই স্মরণীয় রাসেলের
আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় শপথ নেবেন নতুন মন্ত্রীগণ। শপথ নেবেন ২৫ মন্ত্রী এবং ১১ প্রতিমন্ত্রী। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের বর্তমান প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল অবশ্য গতকালের ঘোষিত মন্ত্রীবর্গের তালিকায় নেই। আজ সন্ধ্যায় নতুন মন্ত্রীদের শপথের সঙ্গেই তার মন্ত্রীত্বের সমাপ্তি ঘটবে।
মন্ত্রীত্বের শেষ দিনও ক্রীড়াঙ্গনে এসেছেন জাহিদ আহসান রাসেল। বঙ্গবন্ধু ক্রীড়া কল্যাণসেবী ট্রাস্টের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা এবং জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার কমিটির সভা করেছেন। এই দুই কর্মসূচির মাঝে গণমাধ্যমে নিজের পাঁচ বছরের কর্মসূচি তুলে ধরে সুখস্মৃতি ও অতৃপ্তির কথা বলেছেন।
বিজ্ঞাপন
গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে অনেক ঘটনাই ঘটেছেন। শত ঘটনার মধ্যে জাহিদ আহসান রাসেলের কাছে সবচেয়ে স্মরণীয় সাবিনাদের ছাদখোলা বাসে সংবর্ধনার দিনটি, ‘সাফ ফুটবলে সাবিনারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তারা ছাদখোলা বাস চেয়েছিল। সেটা এক দিনের মধ্যে তৈরি করে তাদের রাজসিক সংবর্ধনা দেয়া হয়েছিল। এই সাফল্যের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা এবং দেশের সবার মধ্যে আলোড়ন তৈরি হয়েছিল। এই দিনটি আমার কাছে বিশেষ স্মরণীয়।’
বিজ্ঞাপন
২০১৯ সালে জাহিদ আহসান রাসেল যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী দায়িত্ব নেন। ঐ বছর বাংলাদেশ সাফ গেমসে সর্বোচ্চ স্বর্ণপদক অর্জন করে। পরের বছর শুরুতেই দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশ অ-১৯ ক্রিকেটের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়। এরপরই করোনা ভাইরাসে অবরুদ্ধ ক্রীড়াঙ্গন। সেই সময় না থাকলে আরো একটু এগিয়ে যেতে পারতেন বলে ধারণা ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর, ‘করোনা ভাইরাসের কারণে অনেক দিন খেলাধুলা স্থগিত ছিল। অনেক কর্মকান্ড এগিয়ে নেয়া যেত। সেই সময়ের জন্য কাজগুলো পিছিয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন
করোনার সময় নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি ক্রীড়াঙ্গনে সবার পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন। গত পাঁচ বছরে ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট অনেক কিছুই করেছেন রাসেল, ‘কয়েক কোটি টাকা ক্রীড়াঙ্গনের নানা ব্যক্তিবর্গকে আমি দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু ক্রীড়া কল্যাণ ট্রাস্টে সীড মানি প্রদান করায় এত সহায়তা করা সম্ভব হয়েছে। ক্রীড়াঙ্গনে বঙ্গবন্ধু ক্রীড়া বৃত্তিও চালু করেছি।’
ক্রীড়াঙ্গনে পাঁচ বছরে রাসেলের যেমন সাফল্য রয়েছে আছে কিছু অপূর্ণতাও। সেই অপূর্ণতা সম্পর্কে বলেন, ‘অলিম্পিক ভিলেজ করার পথে অনেক দূর এগিয়ে ছিলাম। সেটা করতে পারলাম না শেষ পর্যন্ত। জাতীয় ক্রীড়ানীতিও অনেকটা এগিয়ে এনেছিলাম। আশা করি সামনে যিনি আসবেন তিনি এটা পূর্ণতা দেবেন।’
আজ সন্ধ্যার পর জানা যেতে পারে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কার হাতে যাচ্ছে। নতুন যেই আসুক তাকে সহায়তা করার আশাবাদ ব্যক্ত করে রাসেল বলেন, ‘ক্রীড়া আমার প্রাণ। মন্ত্রণালয়ে যিনিই আসুক আমার সহযোগিতা চাইলে অবশ্যই আমি দেব। তিনি যদি নাও চান, আমি যেচে গিয়েও দেব। ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়ন আমার প্রত্যাশা।’
গত সংসদে মন্ত্রীসভা ছিল ৪০ এর অধিক। আজ শপথ নিতে যাওয়া মন্ত্রীদের সংখ্যা ৩৬। সামনে মন্ত্রীসভার আকার আরো বাড়তে পারে এমনটাই শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন মাধ্যমে। ৩৬ জনের মধ্যে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী রাসেলের না থাকা এবং সামনে থাকার সম্ভাবনা নিয়ে বলেন, ‘মন্ত্রীসভা গঠনের সম্পূর্ণ এখতিয়ার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর। তিনি আমার উপর পাঁচ বছর আস্থা রেখেছেন এজন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। জনগণের ভোটে আমি খুব অল্প বয়সে চার বার এমপি হয়েছি। মন্ত্রীর বিষয়টি সম্পূর্ণ মাননীয় প্রধানন্ত্রীর উপর।’
গত পাঁচ বছরে তিনি ক্রীড়াঙ্গনের সবার কাছ থেকে আন্তরিক সহযোগিতা পেয়েছেন। তাই সকলের কাছে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন, ‘ক্রীড়াঙ্গনে অনেকেই রয়েছেন যাদের ক্রীড়াঙ্গনে সম্পৃক্ততা আমার বয়সের চেয়ে বেশি। সেই সকল ব্যক্তিগণ আমাকে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি আমি অবশ্যই কৃতজ্ঞ।’
এজেড/জেএ