স্টেডিয়ামের ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণে নজর ক্রীড়া মন্ত্রীর
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে নতুন মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন। গত সপ্তাহের রোববার প্রথম আনুষ্ঠানিক অফিস করেন। আজ পরের সপ্তাহের রোববারেই বসেন বিভিন্ন স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি নিয়ে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তারা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে নতুন মন্ত্রীকে স্টেডিয়ামগলোর সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে অবগত করেছেন।
ঘন্টা দেড়েক সভার পর নাজমুল হাসান পাপন ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে তার কক্ষে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন,‘ প্রতিবন্ধী স্টেডিয়ামের কাজ জুনের মধ্যে শেষ হবে। শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের কর্মকান্ড চলমান রয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সংশোধিত পরিকল্পনায় এই বছর ডিসেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা। এর মধ্যেই শেষ হবে।’
বিজ্ঞাপন
প্রায় প্রতিটি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১২৫ টি নির্মাণ কাজ শেষ। আরও অনেকগুলোর কাজ চলছে। মিনি স্টেডিয়ামের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে চিন্তিত নতুন ক্রীড়া মন্ত্রী, ‘স্টেডিয়ামগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ক্রীড়া মন্ত্রণালয়-পরিষদের সেই অর্থে বাজেট নেই। রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত প্রয়োজন। আমি এই বিষয়ে উর্ধ্বতন পর্যায়ে কথা বলব।’
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াও ব্যবহারের বিষয়েও জোর দিয়েছেন পাপন, ‘এই মাঠ ব্যবহার করবে কিভাবে সেটাও একটা বিষয়। সব সময় ব্যবহার হবে না টুর্নামেন্ট হলে। সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে কিনা তাও একটা কথা। আমি চাই মাঠগুলো সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকলে সবাই খেলার সুযোগ পাবে।’ শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজে ভূমি সংক্রান্ত কিছু বিষয় রয়েছে। অনেক জেলায় সরকারি জমি নেই, সেই সকল জায়গায় অধিগ্রহণ অথবা ক্রয় করতে হবে। এই বিষয়গুলো নিয়ে সামনে আরো বিস্তারিত পর্যালোচনা করবেন নতুন মন্ত্রী।
ক্রীড়াঙ্গনে অন্যতম প্রধানক্ষেত্র স্টেডিয়াম বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। সেই স্টেডিয়াম প্রায় চার বছর ধরে সংস্কার কাজ চলছে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম ইতোমধ্যে পাঁচ দশক পার করেছে। এরপরও আবার সেই স্টেডিয়ামে দেড়শ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম নিয়ে স্পেন সরকার একটি প্রস্তাব দিয়েছিল। সেই বিষয়টিও জানা ছিল পাপনের,‘ স্পেন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল এমনটি আমি শুনেছিলাম। কেন হয়নি সেই বিষয়টি আমার জানা নেই। যাই হোক এখন যেহেতু কাজ চলছে নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের প্রধান ব্যবহারকারী ফুটবল ফেডারেশন। ফুটবল ফেডারেশন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছে। এই বিষয়ে নতুন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আজ স্টেডিয়ামের ব্যাপারে আমি অবগত হয়েছি কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। ফেডারেশনের কাছ থেকেও শুনব। দু’টো পর্যালোচনা করে আগাব।’ পাপন নিজে স্টেডিয়াম পরিদর্শনের কথা জানিয়েছেন,‘ আমি বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম সহ প্রতিবন্ধী এবং মিনি স্টেডিয়ামও পরিদর্শন করতে চেয়েছি। ’
ক্রিকেট বোর্ড নিজস্ব অর্থায়পনে পূর্বাচলে স্টেডিয়াম নির্মাণ করছে। সেই স্টেডিয়ামের কাজও বেশ জোরেসরে চলার কথা জানান বিসিবি সভাপতি ও নতুন ক্রীড়া মন্ত্রী। পূর্বাচলে কয়েকটি ফেডারেশন খেলা ও অফিস পরিচালনা করবে। এই ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি বলে জানান ক্রীড়ামন্ত্রী, ‘দাবা, বিলিয়ার্ড, ভারত্তোলন সহ পাঁচটি ফেডারেশন সেখানে থাকার কথা রয়েছে। এই ফেডারেশনের পরিবর্তে অন্যরাও আসতে পারে। এখনো চূড়ান্ত হয়নি। যারাই আসবে তাদের মতো করে সব কিছু করে দেয়া হবে।’
পরশু দিন ফেডারেশনগুলোকে নিয়ে বসছেন ক্রীড়া মন্ত্রী। প্রতিটি ফেডারেশনকে একটি আর্থিক/কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। পাপন বাংলাদেশের শীর্ষ কর্পোরট প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। পাপন কয়েকবারের এমপি হলেও মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব এবারই প্রথম। তাই এই এক সপ্তাহকে তিনি শেখার স্তর হিসেবেই আখ্যায়িত করেছেন, ‘আমি এখনো লার্নিং স্টেজে রয়েছি।’
এজেড/জেএ