মাবিয়াকে ঢাকায় রেখে সবাই উজবেকিস্তানে
উজবেকিস্তানে এশিয়ান ভারত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ সবচেয়ে বেশি জরুরি ছিল সাফে স্বর্ণজয়ী ভারত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্তের। এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিলে আসন্ন টোকিও অলিম্পিকে তার ওয়াইল্ড কার্ড পাওয়া অনেকটাই নিশ্চিত হতো। দেশে চলমান লকডাউনের জন্য আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকায় মাবিয়া উজবেকিস্তান যেতে না পারায় তার অলিম্পিক স্বপ্ন সংকটের মধ্যে।
মাবিয়া যেতে না পারলেও এই চ্যাম্পিয়নশিপে দুইজন অফিসিয়াল ও অন্য দুই জন ভারত্তোলক জিয়ারুল আলম এবং মনিরা কাজী ঠিকই গিয়েছেন। ১৪ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ হয়েছে। ১৩ এপ্রিল ভোর রাতেই উজবেকিস্তানের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন শাহরিয়া সুলতানা ও ফারুক সরকার। এশিয়ান ভারত্তোলনের সভার পাশাপাশি তারা বিচারকের দায়িত্বও পালন করছেন।
দেশের অন্যতম সেরা ভারত্তোলক মাবিয়ার ফ্লাইট ছিল ১৯ এপ্রিল। প্রথম পর্যায়ে লকডাউন ২১ এপ্রিল পর্যন্ত ছিল। ফলে মাবিয়া ১৯ এপ্রিলের ফ্লাইটে যেতে পারেননি। ৬১ কেজি ওজন শ্রেণিতে খেলার কথা ছিল তার। সেই ইভেন্ট ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। মাবিয়ার মতো পরিণতিই হতো এই টুর্নামেন্টে এন্ট্রি করা অন্য দুই ভারত্তোলক জিয়ারুল আলম ও মনিরা কাজীর। ভাগ্য অতি সুপ্রসন্ন থাকায় শেষ পর্যন্ত তারা উজবেকিস্তানের উদ্দেশে আজ বৃহস্পতিবার রওনা হয়েছেন তারা। বাকি সব কিছু স্বাভাবিক থাকলে আগামীকাল মনিরা কাজী ৮১ কেজি ওজন শ্রেণীতে লড়বেন আর জিয়ারুল পরশু দিন লড়বেন ১০২ কেজিতে।
বিজ্ঞাপন
১৯ এপ্রিল তার্কিশ এয়ারলাইন্সে মাবিয়ার সঙ্গে টিকিট ছিল মনিরা ও জিয়ারুলের। জিয়ারুল ও মনিরার ইভেন্ট পড়ে হওয়ায় তাদের টিকিট বদলে ২১ এপ্রিল করা হয়েছিল। এরপর আরেক দফা বদলে ২২ এপ্রিল করা হয় তাদের টিকিট। তিন দফা টিকিট বদলেও লাভ হতো না যদি রুট দুবাই না হতো। কারণ প্রবাসী কর্মজীবীদের জন্য সরকার পাঁচটি দেশে সম্প্রতি স্বাভাবিক ফ্লাইট শুরু করেছে। দুবাই এর মধ্যে অন্যতম। দুবাই ট্রানজিট হয়ে জিয়ারুল ও মনিরার উজবেকিস্তান পৌঁছানোর কথা।
এই চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ সবচেয়ে জরুরি ছিল মাবিয়ার। সেই মাবিয়ার পরিবর্তে অন্য সবাই গেলেন। নিজে যেতে না পারলেও সতীর্থরা যেতে পারায় খানিকটা সন্তষ্টির তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন এই ভারত্তোলক, ‘বাংলাদেশ থেকে তিন জনের এন্ট্রি করা হয়েছিল। আমি যেতে না পারলেও বাংলাদেশ থেকে অন্য দুই জন অংশগ্রহণ করছে এটা দেশের জন্যই ইতিবাচক হবে এশিয়ান ভারত্তোলনের কাছে।’
বিজ্ঞাপন
মনিরা ও জিয়ারুলের যাওয়ার পেছনে ফেডারেশনের চেয়ে তাদের সংস্থার উদ্যোগই বেশি ছিল বলে মনে করেন মাবিয়া, ‘তাদের সংস্থা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী খুবই আন্তরিক ছিল। সেনাবাহিনী ওদের খরচ নির্বাহ করছে। সেনাবাহিনীর অফিসাররা খুবই আন্তরিক চেষ্টা করেছে তাদের ভারত্তোলককে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে খেলানোর জন্য। শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছে।’
মাবিয়া খেলেন বাংলাদেশ আনসারের হয়ে। মাবিয়ার উজবেকিস্তান সফরের পেছনে আনসারের কোনো সাহায্য ছিল না।
এজেড/এটি/এমএইচ