সারা বিশ্বের ক্রীড়া লেখক ও সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন এআইপিএস। গতকাল (মঙ্গলবার) মরক্কোর রাবাতে এআইপিএস অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৩৬ দেশ থেকে ২০৬৫টি প্রতিবেদন জমা পড়েছিল পুরস্কারের জন্য। নানা স্তরের যাচাই-বাছাই শেষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে (রাইটিং, অডিও, ভিডিও, ফটোগ্রাফি, ইয়ুথ) ২৭ জন চূড়ান্তভাবে পুরস্কৃত হন।

পাশাপাশি ক্রীড়াঙ্গন ও ক্রীড়া সাংবাদিকতার বিশেষ বিষয়গুলো তুলে ধরার জন্য আলাদা কয়েকটি ক্যাটাগরিতে বিশেষ স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।

একটি ক্যাটাগরিতে এই স্বীকৃতি পেয়েছেন ঢাকা পোস্টের সিনিয়র স্পোর্টস রিপোর্টার আরাফাত জোবায়ের। তার করা প্রতিবেদন  ‘ক্রীড়াঙ্গনে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’  ‘প্রমোটিং ডাইভারসিটি অ্যান্ড ইনক্লুশন’ হিসেবে বিশেষ স্বীকৃতি পেয়েছে।

বাংলাদেশের বৃহত্তর বাঙালি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে রয়েছে অনেক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস। দেশের অন্যসব ক্ষেত্রের মতো ক্রীড়াঙ্গনেও রয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিচরণ। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা পোস্টে ‘ক্রীড়াঙ্গনে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ শিরোনামে চার পর্বের প্রতিবেদন করেছিলেন আরাফাত জোবায়ের।

চার পর্বের প্রথমটিতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সঙ্গে ক্রিকেটের বিমুখতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কাছে ক্রিকেট খেলাকে এখনো পুরোপুরি পৌঁছে দিতে পারেনি ক্রিকেট বোর্ড- এটি উঠে এসেছে।

২য় পর্বে উঠে এসেছে ভাষা, সংস্কৃতি নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর খেলোয়াড়দের সাফল্যের গল্প। 

ক্রীড়াবিদরা অবসরের পর কোচ, কর্মকর্তা, বিচারক নানা ভূমিকায় থাকলেও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ক্রীড়াবিদরা খেলা ছাড়ার পর নিভৃতে থাকার বিষয়টি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তৃতীয় পর্বে।

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অবদান যেমন অনেক তেমনি রয়েছে অসীম সম্ভাবনাও। তথাপি সরকার/ক্রীড়া মন্ত্রণালায়/জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের বিশেষ পরিকল্পনা না থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে চতুর্থ ও শেষ পর্বে।

এআইপিএস তাদের মূল বৈশ্বিক অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের কিছুদিন পর মহাদেশভিত্তিক বিভিন্ন ক্যাটাগরির র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করে থাকে। এর আগে ২০২৩ সালে ওই র‌্যাঙ্কিংয়ে এশিয়ার ‘ইয়ুথ রাইটিং’ ক্যাটাগরিতে প্রথম এবং ২০২৪ সালে ‘বেস্ট রাইটিং কলাম’ ক্যাটাগরিতে দশম স্থান অর্জন করেছিলেন ঢাকা পোস্টের আরাফাত জোবায়ের।

এবার এআইপিএস অ্যাওয়ার্ডে বৈশ্বিক মঞ্চেই বিশেষ স্বীকৃতি পেলেন তিনি। ক্রীড়াঙ্গনে বৈষম্য, দুর্নীতি রোধ, নারী-পুরুষ সমতা, জলবায়ু, সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জসহ কয়েকটি বিষয়ের ওপর এআইপিএস এই বিশেষ স্বীকৃতি দিয়ে থাকে।

পুরস্কারের পাশাপাশি এই আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতিও জুরি বোর্ড, বিশেষজ্ঞ এবং এআইপিএস কার্যনিবার্হী কমিটির কয়েক স্তরের ভোটাভুটির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়। বৈশ্বিক এই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাংলাদেশের সাংবাদিকদের মধ্যে কেবল আরাফাত জোবায়েরই এই তালিকায় স্থান পেয়েছেন। 

এআইপিএস অ্যাওয়ার্ড উপলক্ষ্যে সারা বিশ্বের লেখক-সাংবাদিকদের মিলনমেলা বসেছিল মরক্কোর রাবাতে। সেখানে এআইপিএস-এর অধিভুক্ত সংগঠন বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির সভাপতি রেজওয়ান উজ-জামান (রাজীব) ও সাধারণ সম্পাদক সামন হোসেন উপস্থিত ছিলেন। 

এজেড/এফআই