আরচ্যারির স্টেডিয়াম গেল ফুটবলের দখলে, বিস্মিত কোচ
ছবি: সংগৃহীত
শেষ কয়েক বছরে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল খেলা আরচ্যারি। এর উঠে আসার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল পৃথক নিজস্ব স্টেডিয়ামের। কিন্তু সেটিই এবার হাতছাড়া হলো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলের কাছে। যার ফলে যারপরনাই বিস্মিত আরচ্যারি দলের কোচ মার্টিন ফ্রেডরিক।
আরচ্যারি বাংলাদেশে অপ্রচলিত ও তুলনামূলক কম জনপ্রিয় খেলা ছিল। সেই আরচ্যারি গত চার বছরে দেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খেলা হয়ে উঠেছে। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন আরচ্যার শ্যামলী রায়। ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে ওয়াইল্ড কার্ড নয় নিজ যোগ্যতাতেই বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেছেন রোমান সানা। ব্যক্তিগত অর্জনের পাশাাপশি দলীয় সাফল্যেও আরচ্যারি অন্য ডিসিপ্লিনকে টেক্কা দিচ্ছে । গত বছর সাফ গেমসে ১০ ইভেন্টের ১০টিতেই স্বর্ণ জিতেছে আরচ্যারি।
বিজ্ঞাপন
রোমান সানার অলিম্পিকে অংশগ্রহণ নিশ্চিত, সাফ গেমসের সাফল্যের পেছনে নেপথ্যে কারিগর জার্মান কোচ ফ্রেডরিক মার্টিন। তার নিরলস পরিশ্রম ও অনুশীলনে বাংলাদেশের আরচ্যারি গত তিন বছরে অনেক উন্নতি করেছে। মার্টিনের পরিকল্পনা ও অনুশীলনের পেছনে আরেকটি বিষয় জড়িত ছিল আরচ্যারি উন্নয়নের। সেটা হচ্ছে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ স্টেডিয়াম শুধু আরচ্যারির জন্য বরাদ্দ পাওয়া।
সেই টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ স্টেডিয়ামে এখন ফুটবল ফেডারেশন লিগের জন্য ব্যবহার করবে। এ জন্য খুবই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন আরচ্যারের জার্মান কোচ ফ্রেডরিক মার্টিন, ‘আমরা এই ভেন্যুতে দারুণভাবে অনুশীলন করছিলাম। সামনে আমাদের অলিম্পিক গেমস। অলিম্পিক গেমসের আগে যেখানে আমাদের সুযোগ-সুবিধা আরো বাড়ানো প্রয়োজন। সেখানে ভেন্যু অন্যদের নিয়ন্ত্রণে থাকা খুবই কষ্টকর।’
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে মোট ১৫৬ ম্যাচ। টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ স্টেডিয়ামে হোম ভেন্যু করবে উত্তর বারিধারা ক্লাব। উত্তর বারিধারা ক্লাবের ১২ টি হোম ম্যাচেই শুধু টঙ্গীর স্টেডিয়ামে হবে। ফুটবল ফেডারেশন আরচ্যারি ফেডারেশনকে আশ্বস্ত করেছে শুধু মাত্র ১২টি দিন তারা এই মাঠ ব্যবহার করবে। এবং আরচ্যারি ফেডারেশনেক আগে থেকেই সূচি জানিয়ে দেবে।
মাত্র ১২ দিন হলেও এর প্রভাব অনেক দেখছেন মার্টিন, ‘আসলে এটা কোনোভাবেই ফুটবল উপযোগী স্টেডিয়াম নয়। আমাদের স্টোর,জিম রুম হয়তো তারা ড্রেসিংরুম হিসেবে ব্যবহৃত করবে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ মালামাল নষ্ট হওয়ার ঝুকি থাকবে। পাশাপাশি আমার অনুশীলন পরিকল্পনাতেও অনেক সমস্যা হবে।’
আরচ্যারির জন্য অনেক সমস্যা হবে এরপরও বাধ্য হয়ে মেনে নিয়েছেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজিবউদ্দিন আহমেদ চপল।
ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আমাদেরকে ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে সমন্বয় করতে বলেছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মানলাম আর কি!
কাজী রাজিবউদ্দিন আহমেদ চপল, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আরচ্যারি ফেডারেশন
ফুটবল ফেডারেশন অনেকটা জোর খাটিয়ে ভেন্যু নিয়ে বেশ তৃপ্তই। বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগের ভাষ্য, ‘করোনার মধ্যে আমাদের ঢাকার আশেপাশে ভেন্যু দরকার ছিল। আরচ্যারি ফেডারেশনকে ধন্যবাদ আমাদের সহায়তা করার জন্য। আরচ্যারিকে গুরুত্ব দিয়েই আমরা এই ভেন্যু ব্যবহার করব।’
টঙ্গীর শহীদ আহসানউল্লাহ স্টেডিয়ামের আয়তন ছোট। কর্ণার করলে বল ঢাকা-ময়মনিসংহ মহাসড়কেও পড়তে পারে! ফুটবল ফেডারেশন নিজেদের উদ্যোগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে ভেন্যু তৈরির জন্য। বাফুফে নির্বাহী সদস্য ও টঙ্গীর কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম নুরু এটি দেখভাল করছেন।
এজেড/এনইউ