এটিএম কার্ড ক্লোনিং থেকে কীভাবে নিরাপদ থাকবেন
আজকাল এটিএম কার্ড ক্লোনিং প্রতারণা অনেক বেড়ে গেছে, যার শিকার হচ্ছেন সাধারণ কার্ড ব্যবহারকারীরা। সাইবার অপরাধীরা আপনার ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের সমস্ত তথ্য কপি করে একটি ডুপ্লিকেট কার্ড তৈরি করে। এরপর তারা আপনার অনুমোদন ছাড়াই সেই কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটা করে। এই তথ্য সাধারণত স্কিমার (Skimmer) নামক ডিভাইস, অনলাইন স্ক্যাম বা ম্যালওয়্যার ব্যবহার করে চুরি করা হয়।
নিচে আপনার কার্ড কীভাবে সুরক্ষিত রাখবেন, সে বিষয়ে সহজ পরামর্শ দেওয়া হলো।
বিজ্ঞাপন
আসলটির মতোই কাজ করে জাল কার্ড
অনেকে বুঝতেই পারেন না যে, তাদের বিবরণ চুরি হয়েছে। যতক্ষণ না তারা অপ্রত্যাশিতভাবে টাকা কাটা বা সন্দেহজনক লেনদেন দেখেন। এই অপরাধকে জটিল করে তোলে ক্লোন করা কার্ডটি কতটা আসল দেখায়; এটি আসলটির মতোই কাজ করে।
বিজ্ঞাপন
আসলে কাজ করে কার্ড ক্লোনিং প্রতারণা
এ ক্ষেত্রে প্রতারকরা আপনার কার্ডের তথ্য সংগ্রহ করে। স্কিমিং ডিভাইসগুলি প্রায়শই এটিএম বা পেমেন্ট মেশিনে লাগানো হয়। পরে আপনি সোয়াইপ করলে চৌম্বকীয় স্ট্রাইপ থেকে কার্ডের তথ্য ক্যাপচার করে ওই ডিভাইস। কেউ কেউ আপনার পিন রেকর্ড করার জন্য লুকানো ক্যামেরাও ব্যবহার করেন। রেস্তোরাঁ বা পেট্রোল পাম্পগুলিতে আপনার কার্ডের বিবরণ কপি করার জন্য একটি গোপন স্কিমারে অতিরিক্ত সোয়াইপ যথেষ্ট।
এই বিষয়গুলো মনে রাখুন
চিপ-ভিত্তিক কার্ডগুলোর তুলনায় চৌম্বকীয় স্ট্রাইপযুক্ত কার্ডগুলো ক্লোন করা সহজ। কারণ এগুলো ডেটা সংরক্ষণ করে যা ফটোকপি করা যায়। চিপ কার্ডগুলোর সাহায্যে প্রতিটি লেনদেন একটি নতুন কোড তৈরি করে, যা ক্লোনিংকে আরও কঠিন করে তোলে।
প্রতারকরা কোন কৌশলে ক্লোনিং করে
অনলাইন ফিশিং : প্রতারকরা ভুয়া ইমেল বা ওয়েবসাইট ব্যবহার করে আপনার কার্ডের বিবরণ জানতে চায়। এই তথ্য পরে অনলাইন কেনাকাটায় অপব্যবহার করা হয়।
ডিজিটাল ক্লোনিং : আপনার কার্ডের চুরি করা বিবরণ কোনো ফিজিক্যাল কার্ড তৈরি না করেই সরাসরি অনলাইন পেমেন্টের জন্য ব্যবহার করা হয়।
এটিএম স্কিমিং : এটিএম মেশিনে গোপনে বসানো ছোট ডিভাইস (স্কিমার) ব্যবহার করে আপনার কার্ডের বিবরণ এবং পিন চুরি করা হয়।
রেস্তোরাঁয় স্কিমিং : রেস্তোরাঁয় পেমেন্টের সময় আপনার কার্ডটি গোপনে দুবার সোয়াইপ করা হতে পারে—একবার পেমেন্টের জন্য, আর একবার স্কিমার ডিভাইসে ডেটা চুরির জন্য।
জালিয়াতি বুঝতে পারা : সাধারণত, যখন কার্ডহোল্ডাররা কোনো অজানা লেনদেনের এসএমএস অ্যালার্ট পান বা অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব হতে দেখেন, তখনই তারা জালিয়াতির বিষয়টি বুঝতে পারেন।
নিজেকে রক্ষা করার কৌশল
১. অনলাইন পেমেন্টের জন্য ভার্চুয়াল কার্ড ব্যবহার : অনলাইন কেনাকাটার জন্য অস্থায়ী ভার্চুয়াল কার্ড ব্যবহার করুন। এগুলো নিরাপদ, কারণ প্রতিটি ব্যবহারের পর কার্ডের বিবরণ পরিবর্তন হয়ে যায়।
২. এটিএম ও দোকানে সতর্ক থাকুন : অপরিচিত বা ক্ষতিগ্রস্ত মেশিনে কার্ড সোয়াইপ করা থেকে বিরত থাকুন। লেনদেনের সময় মেশিনের দিকে সতর্ক নজর রাখুন।
৩. এসএমএস ও ইমেল অ্যালার্ট চালু রাখুন : আপনার প্রতিটি লেনদেনের জন্য যেন সাথে সাথে এসএমএস বা ইমেল অ্যালার্ট আসে, সেই ব্যবস্থা চালু রাখুন। এতে কোনো সন্দেহজনক লেনদেন হলে আপনি দ্রুত জানতে পারবেন।
৪. পিন ঢেকে রাখুন : এটিএম বা পস (PoS) মেশিনে পিন দেওয়ার সময় সবসময় কীপ্যাডটি হাত দিয়ে বা অন্য কিছু দিয়ে ঢেকে রাখুন।
৫. চিপ-ভিত্তিক কার্ড ব্যবহার করুন : আপনার কার্ড যদি চৌম্বকীয় স্ট্রাইপের হয়, তবে সেটি পরিবর্তন করে একটি চিপ-ভিত্তিক কার্ড ব্যবহার করুন, যা তুলনামূলকভাবে বেশি সুরক্ষিত।
এমএন