মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তনের সঠিক পদ্ধতি জেনে নিন

ইঞ্জিন অয়েল মোটরসাইকেলের জন্য ঘুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। প্রতিটি মোটরসাইকেলের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণের ইঞ্জিন অয়েল যেমন প্রয়োজন তেমনই নির্দিষ্ট দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার পর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করাটাও খুবই প্রয়োজন।
মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন অয়েল নিয়মিত পরিবর্তন করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ নিয়মিত মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন না করলে ইঞ্জিনের অভ্যন্তরে ঘর্ষণ বেড়ে যায়, ফলে যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে। এতে ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হয়ে যেতে পারে এবং শব্দ বেড়ে যায়, যা চালকের জন্য অস্বস্তিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ।
সময়মতো ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন না করলে বাইকের মাইলেজ কমে যায় এবং জ্বালানির খরচও বেড়ে যায়। এছাড়াও দীর্ঘদিন ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন না করলে ইঞ্জিনের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে, যা খরচের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই ইঞ্জিন সচল ও দীর্ঘস্থায়ী রাখতে নিয়মিত ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন অপরিহার্য।
চলুন জেনে নেয়া যাক মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তনের নিয়মাবলি-
মোটরসাইকেলের ভালো পারফরম্যান্স ও ইঞ্জিনের দীর্ঘস্থায়ী নিশ্চিত করতে নিয়মিত ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করা উচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত নতুন মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে প্রথম ৫০০-১০০০ কিলোমিটার চালানোর পরই প্রথমবার ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করা উচিত। এরপর নিয়মিতভাবে প্রতি ২,০০০ থেকে ৩,০০০ কিলোমিটার ব্যবধানে ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করার পরামর্শ দেন।

তবে ব্যবহৃত ইঞ্জিন অয়েল ও বাইকের মডেল ভেদে এই সময়ের তারতম্য হতে পারে। বিশেষ করে দীর্ঘ ভ্রমণ, অতিরিক্ত গরম কিংবা ধুলাবালিযুক্ত পরিবেশে চলাচলের ক্ষেত্রে ইঞ্জিন অয়েল দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়, তাই এসব পরিস্থিতিতে আরও সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
সময়মতো ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন না করলে ইঞ্জিনে অতিরিক্ত ঘর্ষণ, গরম হওয়া ও ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। তাই ব্যবহারকারীদের উচিত মোটরসাইকেলের ম্যানুয়াল অনুযায়ী ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তনের সময়সূচি মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি।
মোটরসাইকেলে কম বা বেশি ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করলে যেসব সমস্যা হতে পারে
প্রতিটি মোটরসাইকেলের তার নির্দিষ্ট পরিমাণের ইঞ্জিন অয়েল প্রয়োজন। এই নির্দিষ্ট পরিমাণ ইঞ্জিন অয়েল মোটরসাইকেল নির্মাণ প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে নির্ধারণ করে থাকে। যা ব্যবহার করলে মোটরসাইকেল থেকে ভালো পারফরমেন্স, স্মুথনেস, এবং ভালো মাইলেজ পাওয়া যাবে।
এজন্য সঠিক পরিমাণের ইঞ্জিন অয়েল মোটরসাইকেলে ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেই পরিমাপটা মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান তাদের ইউজার ম্যানুয়ালে উল্লেখ করে থাকে।

তবে অনেকেই এই পরিমাণ সম্পর্কে সঠিক জানেন না। এর কারণে, অনেকেই মেকানিকের কথা মত ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করে থাকেন, যার ফলে অনেক সময় মোটরসাইকেলে সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।
নির্ধারিতর চেয়ে কম বা বেশি ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করলে, ইঞ্জিনে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ইঞ্জিনের দীর্ঘস্থায়ীত্ব কমিয়ে দেয়, স্মুথনেস কমিয়ে দেয় এবং ভাইব্রেশন বেড়ে যায়। পাশাপাশি ইঞ্জিন অতিরিক্ত হিট ইস্যু দেখা দিতে পারে। এছাড়া ইঞ্জিন অয়েল ওভারফ্লো হয়ে এয়ার ফিলটার চেম্বারে যেতে পারে। এসবের কারণে অনেক সময় নানান সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন ও মাইলেজও কমে যায়।
আপনার বাইকে কম ইঞ্জিন অয়েল থাকলে আপনি কখনই বাইক থেকে আশানুরূপ পারফর্মেন্স পাবেন না, বাইকের স্মুথনেস কমে যাবে, প্রয়োজনের চেয়ে অধিক কম থাকলে বাইক ধাক্কা দিতে পারে এবং বাইকের স্টার্ট বন্ধ হতে পারে, ইঞ্জিন ওভারহিটের জন্য এমনটি হয়ে থাকে। এমনকি ইঞ্জিন সিস করতে পারে,ফলে সারাতে বড় ধরনের খরচের মুখে পড়তে হয়।
এসকল কিছু হয়ে থাকে, মোটরসাইকেলে ইঞ্জিন অয়েল কম বা বেশি থাকলে, এসকল সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে আপনার মোটরসাইকেলের জন্য নির্ধারিত পরিমাণের ও নির্দিষ্ট গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করুন, এতে করে আপনার মোটরসাইকেল রাইডের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না এবং ইঞ্জিনের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পাবে।
এমবি/এনএইচ
