টাটা ন্যানো : ১ লাখ টাকার গাড়ি, যা কাঁপিয়ে দিয়েছিল অটোমোবাইল শিল্পকে!

২০০৮ সালের ১০ জানুয়ারি, রতন টাটা বিশ্ববাসীকে একটি নতুন গাড়ির সঙ্গে দেখিয়েছিলেন এক বিশাল স্বপ্ন। শুধু ধনীরাই নয়, মধ্যবিত্ত এমনকি নিম্নবিত্তরাও গাড়ি কিনতে পারবেন— এই ধারণা নিয়ে বাজারে এসেছিল মাত্র এক লাখ টাকা (ভারতীয় মুদ্রায়) দামের টাটা ন্যানো।
এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ ১৭ বছর। এই সুদীর্ঘ যাত্রাপথ ন্যানোর জন্য খুব একটা মসৃণ হয়নি। তবে অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রি নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়েছিল। এন্ট্রি লেভেল সেগমেন্টে তখনও পর্যন্ত গাড়ির দাম থাকত এর দ্বিগুণেরও বেশি। আসলে মধ্যবিত্তদের হাতে গাড়ি তুলে দেওয়াই ছিল রতন টাটার স্বপ্ন, আর টাটা ন্যানোর হাত ধরেই সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।
কেন ভয় পেয়েছিল অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রি?
সস্তা দাম : টাটা ন্যানোর দাম ছিল ভারতীয় মুদ্রায় ১ লাখ টাকা, যা মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে ছিল। এটাই ছিল ন্যানোর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য। এতে অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিযোগিতা এক ধাক্কায় বেড়ে যায়, আর ভয় পেয়ে যায় গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থাগুলো।
বিপুল বুকিং: লঞ্চের আগেই ন্যানোর লাখো ইউনিট বুকিং হয়ে যায়, যা স্পষ্ট করে দেয় যে বাজারে সস্তা গাড়ির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
নয়া প্রযুক্তি: ন্যানোতে বেশ কিছু নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল, যার কারণেই অন্যান্য গাড়ির তুলনায় এর দাম ছিল অনেকটাই কম।
রতন টাটার স্বপ্ন: রতন টাটার স্বপ্ন ছিল, প্রত্যেক ভারতীয়র নিজস্ব গাড়ি থাকবে। ন্যানো ছিল সেই স্বপ্নের প্রতীক।
ন্যানোর সাফল্য এবং ব্যর্থতা
লঞ্চের পর ন্যানো নিয়ে যে বিপুল আগ্রহ তৈরি হয়েছিল, ধীরে ধীরে তা কমতে থাকে। ফোর হুইলার বিশেষজ্ঞরা বেশ কিছু প্রশ্নও তোলেন। ধীরে ধীরে উৎপাদন কমতে থাকে এবং একপর্যায়ে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
কোয়ালিটি ইস্যু: অনেকেই ন্যানোর গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।
ডিজাইন: ন্যানো আকারে ছোট ছিল। এই ডিজাইনও অনেকেই পছন্দ করেননি।
বাজারে বদল: সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের পছন্দও বদলে গিয়েছিল। ক্রেতারা ফিচার বেশি এমন গাড়ি কিনতে শুরু করেন।
প্রতিযোগিতা: অন্যান্য গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থাও এই সেগমেন্টে প্রবেশ করে, যার ফলে তুমুল প্রতিযোগিতার মুখে পড়ে যায় ন্যানো।
এমজে