ভারতের বাজারে টেসলা, বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা কতটুকু?

অবশেষে ভারতের বাজারে প্রথম গাড়ি লঞ্চ করল টেসলা। দেশটির বাজারে প্রথম গাড়ি হিসেবে টেসলা মডেল ওয়াই (Tesla Model Y) উন্মোচন করেছে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। এই ঘটনা বাংলাদেশে অফিসিয়ালি টেসলার আগমন নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, কবে নাগাদ বাংলাদেশে দেখা যাবে টেসলার শো-রুম?
এক প্রতিবেদনে ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, গত ১৫ জুলাই ভারতে টেসলার প্রথম শোরুমের উদ্বোধন হয়েছে এবং একইসঙ্গে কোম্পানি তাদের প্রথম গাড়ি মডেল ওয়াই বাজারে এনেছে। এই ইলেকট্রিক এসইউভিটি দুটি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাবে- রিয়ার হুইল ড্রাইভ (RWD) এবং লং রেঞ্জ রিয়ার হুইল ড্রাইভ (Long Range RWD)।
ইতিমধ্যেই গাড়িগুলির বুকিং গ্রহণ করা শুরু করে দিয়েছে কোম্পানিটি। ২০২৫ সালের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে গাড়ির ডেলিভারি শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গাড়িটি ক্রয় করার ক্ষেত্রে মোট ছয় ধরনের রঙের বিকল্পের সুবিধা পাবেন গ্রাহকরা। ভারতে টেসলার ফুল সেলফ ড্রাইভিং (FSD) প্যাকেজের সুবিধাও পাওয়া যাবে। এই প্যাকেজটি ক্রয় করতে হলে ভারতীয় মুদ্রায় বাড়তি ৬ লক্ষ টাকা খরচ করতে হবে।
রেঞ্জ ও পারফরম্যান্স
রিয়ার হুইল ড্রাইভ (RWD) সংস্করণ : একবার সম্পূর্ণ চার্জে এই সংস্করণটি ৫০০ কিলোমিটার রেঞ্জ দেবে। এর সর্বোচ্চ গতি ২০১ কিলোমিটার/ঘণ্টা। মাত্র ৫.৯ সেকেন্ডে এই ভ্যারিয়েন্টটি ০ থেকে ১০০ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতি অর্জন করতে সক্ষম। ভারতের বাজারে এই গাড়িটির দাম শুরু হচ্ছে ৬০ লক্ষ (ভারতীয় মুদ্রা) টাকা থেকে।
লং রেঞ্জ রিয়ার হুইল ড্রাইভ ভ্যারিয়েন্ট : একবার সম্পূর্ণ চার্জে এই গাড়িটি ৬২২ কিলোমিটার রেঞ্জ দেবে। এর সর্বোচ্চ গতিও ২০১ কিলোমিটার/ঘণ্টা। তবে এটি মাত্র ৫.৬ সেকেন্ডে ০ থেকে ১০০ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতি বাড়াতে সক্ষম। ভারতের বাজারে দাম করা হয়েছে প্রায় ৬৮ লক্ষ (ভারতীয় মুদ্রা) টাকা থেকে।
বাংলাদেশে টেসলার আগমন কতটা বাস্তবসম্মত?
ভারতে টেসলার আনুষ্ঠানিক প্রবেশ বাংলাদেশের ভোক্তাদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি করলেও, নিকট ভবিষ্যতে বাংলাদেশে এর আসার সম্ভাবনা নিয়ে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
উচ্চ আমদানি শুল্ক: বাংলাদেশে বিলাসবহুল গাড়ির ওপর উচ্চ আমদানি শুল্ক প্রযোজ্য। ইলেকট্রিক গাড়ির ক্ষেত্রে কিছু সুবিধা থাকলেও, টেসলার মতো প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের গাড়ির দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যেতে পারে।
চার্জিং অবকাঠামোর অভাব: ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য প্রয়োজনীয় চার্জিং স্টেশন বাংলাদেশে এখনো সেভাবে গড়ে ওঠেনি। টেসলার নিজস্ব সুপারচার্জার নেটওয়ার্ক স্থাপন করা ছাড়া এর ব্যবহারিক দিকটি কঠিন হবে।
বাজারের আকার ও প্রতিযোগিতা: বাংলাদেশের অটোমোবাইল বাজার এখনো টেসলার মতো একটি প্রিমিয়াম ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য ততটা প্রস্তুত নয়। এখানে মূলত জ্বালানি-চালিত গাড়ি ও সীমিত সংখ্যক স্থানীয়ভাবে সংযোজিত ইলেকট্রিক গাড়ির চাহিদা রয়েছে।
সার্ভিসিং ও রক্ষণাবেক্ষণ: টেসলার মতো অত্যাধুনিক গাড়ির জন্য বিশেষায়িত সার্ভিসিং সেন্টার ও প্রশিক্ষিত কর্মী প্রয়োজন, যা বাংলাদেশে সহজলভ্য নয়।
আপাতত, বাংলাদেশের গ্রাহকদের টেসলার জন্য আরও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এমজে