মনোশক ও ডুয়েল সাসপেনশনের পারফরম্যান্সের পার্থক্য কী?

বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত বাড়ছে মোটরসাইকেলের জনপ্রিয়তা। অফিস-আদালতে যাতায়াত, দীর্ঘ ভ্রমণ কিংবা শখ— সব ক্ষেত্রেই বাইক হয়ে উঠছে নির্ভরযোগ্য বাহন। শহরের ব্যস্ত রাস্তায় দ্রুত চলাচল থেকে শুরু করে গ্রামের কাঁচা পথেও বাইক এখন অনেকের সঙ্গী।
তবে নতুন বাইক কেনার সময় অনেক রাইডারই দ্বিধায় পড়েন— মনোশক নাকি ডুয়েল সাসপেনশন নেবেন? দুই ধরনের সাসপেনশনের আলাদা বৈশিষ্ট্য ও সুবিধা রয়েছে। সঠিকভাবে না জানলে হয়তো নিজের প্রয়োজনের বাইকটি বেছে নিতে ভুল হতে পারে।
তাহলে চলুন সহজ ভাষায় দেখে নেওয়া যাক, এই দুই সাসপেনশনের পারফরম্যান্সের পার্থক্য এবং কোন পরিস্থিতিতে কোনটা বেশি কার্যকর।
মনোশক সাসপেনশন কী?
মনোশক মানে হলো বাইকের পেছনে একটাই শক অ্যাবজর্বার। এটি সাধারণত বাইকের মাঝ বরাবর থাকে এবং ফ্রেমের সঙ্গে ভালোভাবে যুক্ত থাকে। যেমন— ইয়ামাহা R15, হোন্ডা CBR, বাজাজ পালসার NS সিরিজে মনোশক ব্যবহার করা হয়।
এর সুবিধা, ভারসাম্য ভালো দেয় এবং বাইকের স্ট্যাবিলিটি ভালোমত ধরে রাখে। এছাড়াও বাঁক নেওয়া কিংবা কর্নারিংয়ের সময় বাইকের নিয়ন্ত্রণ রাখা সহজ হয়। এছাড়াও দীর্ঘ ভ্রমণে আরামদায়ক অভিজ্ঞতা দেয়, বিশেষ করে হাইওয়েতে। আর লুকে দেয় স্পোর্টি ভাব, ডিজাইনে থাকে আধুনিকতা।
তবে সুবিধার পাশাপাশি আবার অসুবিধার কথা না বললেই নয়। যেমন— রাস্তায় অতিরিক্ত গর্ত বা ব্রেকারে অনেক সময় ধাক্কা বেশি অনুভূত হয়। তবে একবার নষ্ট হলে কিংবা বসে গেলে মেরামত প্রায় অসম্ভবই বলা চলে। তাই এর রক্ষণাবেক্ষণ ও রিপ্লেসমেন্ট খরচও তুলনামূলক বেশি।
ডুয়েল সাসপেনশন কী?
ডুয়েল সাসপেনশনে বাইকের পেছনে দু’পাশে দুটি শক অ্যাবজর্বার থাকে। হোন্ডা CG125, হিরো Splendor, বাজাজ CT100- এই ধরনের কমিউটার সেগমেন্টের বাইকে এই ধরনের সাসপেনশন দেখা যায়।
এর সুবিধা হলো, খারাপ রাস্তায় ঝাঁকুনি কম লাগে, দেয় আরামদায়ক অভিজ্ঞতা। গ্রামের কাঁচা রাস্তা বা উঁচু-নিচু রাস্তায়ও ভালো কাজে দেয় এই ধরনের সাসপেনশন। এছাড়াও এর রক্ষণাবেক্ষণ কিংবা মেরামত খরচও কম।
ডুয়েল সাসপেনশনেরও অসুবিধাও রয়েছে বেশ। যেমন— হাইওয়েতে বা বেশি স্পিডে বাইক চালালে স্থিতিশীলতা মনোশকের মতো হয় না। ভারি লোডে কখনো কখনো ব্যালান্সের ঘাটতি দেখা দেয়।
কোনটা কার জন্য ভালো?
শহরের মসৃণ রাস্তায়, হাইওয়েতে চালাতে কিংবা স্পোর্টি লুক চাইলে মনোশক উপযোগী।
এদিকে, গ্রামাঞ্চল, উঁচু-নিচু বা ভাঙা রাস্তায় নিয়মিত চলাচল করে থাকলে ডুয়েল সাসপেনশনই উপযোগী।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের রাস্তায় এখনো দুই ধরনের বাইকই সমানভাবে চলছে। যারা স্টাইল ও হাইওয়ে পারফরম্যান্স চান তারা মনোশক বেছে নিচ্ছেন, আর যারা ব্যবহারিক সুবিধা, কম খরচ ও আরামকে অগ্রাধিকার দেন তারা ডুয়েল সাসপেনশনের বাইক নিচ্ছেন।
ডিএ