বাইক সার্ভিসিংয়ের সময় মালিকেরা যেসব ভুল করেন

নিত্যদিনের যাতায়াতে বাইক এখন অনেকের সঙ্গী। কিন্তু নিয়মিত যত্নের অভাবে বাইকের পারফরম্যান্স দ্রুত কমে যায়; তাই প্রয়োজন পড়ে নিয়মিত সার্ভিসিংয়ের। তাই সার্ভিসিং মানে শুধু বাইক ধোয়া নয়, বরং পুরো যান্ত্রিক অংশের যত্ন নেওয়া।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বেশিরভাগ মালিক কিছু সাধারণ ভুল করে থাকেন, যা এড়িয়ে চললে বাইকের আয়ু ও পারফরম্যান্স দুটোই বাড়ে।
সময়মতো সার্ভিস না করা
বাইক কেনার পর নতুন অবস্থায় ইউজার ম্যানুয়ালে নির্দিষ্ট একটি সময় উল্লেখ করে সার্ভিসিং এর ডেট দেওয়া হয়। অনেকে এটি মানেন না; অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময় বা কিলোমিটার পার হয়ে গেলেও সার্ভিসিং পিছিয়ে দেন। এর ফলে ইঞ্জিন অয়েল নষ্ট হয়ে যায়, ফিল্টার জ্যাম হয়, এবং ইঞ্জিনে বাড়তি চাপ পড়ে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, ইউজার ম্যানুয়াল মেনে অথবা প্রতি ২–৩ হাজার কিলোমিটার পর নিয়মিত সার্ভিস করানো উচিত।
ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তনে অবহেলা
“অয়েল তো এখনো ভালো আছে” ভেবে অনেকে পরিবর্তন দেরি করেন। কিন্তু পুরনো অয়েল ইঞ্জিনের অংশগুলোকে শুকিয়ে ফেলে, ফলে ঘর্ষণ বাড়ে ও ফুয়েল খরচ বেড়ে যায়। তাই সময়মতো মানসম্মত গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করা জরুরি।
নকল যন্ত্রাংশ ব্যবহার
অনেক মালিক খরচ বাঁচাতে সস্তা বা নকল পার্টস ব্যবহার করেন। এতে পার্টস দ্রুত নষ্ট হয়, বাইকের ভারসাম্য নষ্ট হয়, এমনকি দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ে। অনুমোদিত ডিলার থেকে আসল যন্ত্রাংশ নেওয়াই নিরাপদ বিকল্প।
আরও পড়ুন
বাইক ওয়াশকে সার্ভিসিং মনে করা
অনেকে বাইক ধোয়াকে সার্ভিসিং মনে করেন। কিন্তু এতে বাইকের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশ অযত্নে থেকে যায়। সার্ভিসিংয়ের সময় ব্রেক, ক্লাচ, ফিল্টার, চেইন, স্পার্ক প্লাগসহ সব অংশ পরীক্ষা করা জরুরি।
চেইন ও ব্রেক রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতি
চেইনে লুব্রিকেশন না দেওয়া বা ব্রেক প্যাড ক্ষয় হচ্ছে কিনা না দেখা—এ দুটোই বিপজ্জনক ভুল। এতে শব্দ হয়, কন্ট্রোল কমে, দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে। প্রতি সপ্তাহে একবার চেইন পরিষ্কার করে লুব্রিকেশন দিন এবং ব্রেকের অবস্থা খেয়াল রাখুন।
এয়ার ফিল্টার ও কুলিং সিস্টেম উপেক্ষা করা
এয়ার ফিল্টার বা কুল্যান্ট অনেকেই চেক করেন না। এতে ইঞ্জিন দ্রুত গরম হয়, জ্বালানি খরচ বেড়ে যায়, মাইলেজ কমে যায়। প্রতিটি সার্ভিসের সময় ফিল্টার পরিষ্কার বা বদলানো এবং কুল্যান্ট (ঠান্ডা হওয়ার তরল) লেভেল দেখা জরুরি।
ব্যাটারি ও ইলেকট্রিক লাইন চেক না করা
সার্ভিসিংয়ের সময় ব্যাটারির বিষয়টি অনেকে এড়িয়ে যান। এর ফলে হেডলাইট দুর্বল হয়, হর্ন বা সেলফ-স্টার্ট কাজ করে না। ব্যাটারির লাইন পরিষ্কার রাখা ও নিয়মিত চার্জ নিশ্চিত করা বাইকের পারফরম্যান্সে বড় ভূমিকা রাখে।
সবশেষ, বাইক শুধু পরিবহনের মাধ্যম নয়; এটা অনেকের প্রতিদিনের সঙ্গী। তাই নিয়মিত সার্ভিসিংয়ের সময় এসব ছোট ভুল এড়িয়ে চললে বাইকের কর্মক্ষমতা, নিরাপত্তা ও জ্বালানি সাশ্রয়— সব দিকেই উন্নতি আসে।
ডিএ