বাকি যাত্রীদের বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি টার্কিশ এয়ারলাইন্স
মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত সন্দেহে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এক তুর্কি নাগরিককে মহাখালীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।
এদিকে ওই যাত্রী টার্কিশ এয়ারলাইন্সের যেই ফ্লাইটে বাংলাদেশে আসেন সেটিতে তিনিসহ মোট ২১৬ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে মনিটরিং করছে টার্কিশ এয়ারলাইন্স।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওই ব্যক্তি আদৌ মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়। যে ফ্লাইটটিতে ওই ব্যক্তি ঢাকায় এসেছেন সেটিতে মোট ২১৬ জন যাত্রী ছিলেন। আমরা সেই ফ্লাইটের যাত্রীদের নামের তালিকা, ফোন নম্বর ও যোগাযোগের অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করেছি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যদি এগুলো চাওয়া হয় তাহলে আমরা সেগুলো তাদের দেব। এছাড়াও যদি ওই যাত্রীর মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয় সেক্ষেত্রে অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী ফ্লাইটের অন্যান্য যাত্রীদেরও নির্দেশনা দেওয়া হবে।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ওই যাত্রীর বিষয়ে টার্কিশ এয়ারলাইন্স তুরস্কের দুইজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছে। তারা জানিয়েছেন, এটা এক ধরনের দাদ রোগ। তুরস্কে অনেকের মধ্যেই এই রোগ রয়েছে। তাছাড়া ওই ব্যক্তির হাত, পা এবং মাথায় চুলের নিচে এই দাদের মতো চিহ্ন দেখা গেছে। মাঙ্কিপক্স সাধারণত মাথার চুলের নিচের হওয়ার কথা নয়।
এদিকে মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত সন্দেহে থাকা ওই ব্যক্তিকে মহাখালীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে রাখা হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক ডা. মিজানুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, একজন রোগীকে আমাদের এখানে ভর্তি করা হয়েছে। আইইডিসিআর এসে তার শরীরের নমুনা নিয়ে গেছে। পিসিআর টেস্ট পরীক্ষার ফলাফল শেষে নিশ্চিতভাবে জানা যাবে তার শরীরে 'মাঙ্কিপক্স' সংক্রমণ আছে কি না।
'মাঙ্কিপক্স' সংক্রমণ শনাক্ত হলে ওই ব্যক্তিকে এ হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে কোন প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে ডা. মিজানুর রহমান বলেন, মহাখালীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালকে এ ধরনের বিশেষ রোগীদের জন্য ডেডিকেটেড করা হয়েছে। এখানে ১০টি বেডের আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা আছে। এ ধরনের রোগে এখন পর্যন্ত আমাদের এখানে কোনো রোগী আসেননি। তবে কোনো রোগী যদি আক্রান্ত হন তাহলে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে।
উল্লেখ্য, মাঙ্কিপক্স এক ধরনের ভাইরাল ইনফেকশন, যে ভাইরাস পশ্চিম আফ্রিকা ও মধ্য আফ্রিকার জঙ্গলের ছোট আকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী ও ইঁদুর জাতীয় প্রাণীর মধ্যে থাকে।
গত ৭ মে যুক্তরাজ্যে নাইজেরিয়া ফেরত এক ব্যক্তির দেহে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস শনাক্ত হয়। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে।
অল্প সময়ের মধ্যে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে মাঙ্কিপক্সের বিস্তার বিজ্ঞানী, সরকার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ভাবনায় ফেলেছে। বড় আকারে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও করছেন অনেকে। তবে বিজ্ঞানীরা এ কথাও বলছেন যে, আমাদের এখনই খুব বেশি চিন্তা করার দরকার নেই।
এআর/এসকেডি