টার্কিশ এয়ারলাইন্সের প্রথম বাংলাদেশি ক্যাপ্টেন বদরুদ্দোজা আশরাফী
মায়ের ইচ্ছা ছিল ছেলেকে ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার বানাবেন। তবে শখের বসে বিমান বাহিনীতে জিডি পাইলট (জেনারেল ডিউটি পাইলট) হিসেবে যোগ দেন ছেলেটি। এরপর একের পর এক ধাপ পেরিয়ে নিজেকে চিনিয়েছেন বিশ্ব দরবারে। তিনি বাংলাদেশের ছেলে এস এম বদরুদ্দোজা আশরাফী। বর্তমানে তিনি তুরস্কের রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠান টার্কিশ এয়ারলাইন্সের ক্যাপ্টেন হিসেবে কর্মরত আছেন।
টার্কিশ এয়ারলাইন্সের ৯০ বছরের ইতিহাসে বদরুদ্দোজা আশরাফী প্রথম বাংলাদেশি ক্যাপ্টেন। এ বছরের মে মাসে তাকে ক্যাপ্টেন হিসেবে পদোন্নতি দেয় এয়ারলাইন্সটি।
বদরুদ্দোজা আশরাফীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিনি মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল থেকে এসএসসি ও নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। ছাত্র হিসেবে ছিলেন যথেষ্ট মেধাবী। ছোটবেলা থেকে তার মায়ের ইচ্ছা ছিল ছেলেকে ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার বানাবেন। কিন্তু শখের বশে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে জিডি পাইলট হিসেবে যোগ দেন তিনি।
কর্মজীবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে তিনি একজন প্রতিভাবান কর্মকর্তা ও চৌকস ট্রান্সপোর্ট পাইলট হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বিমান বাহিনীতে ১৫ বছর চাকরি শেষে স্কোয়াড্রন লিডার হিসেবে স্বেচ্ছায় অবসর নেন। এরপর বেসামরিক বিমানের পাইলট হিসেবে নতুন কর্মজীবন শুরু করেন।
প্রথমে ফার্স্ট অফিসার হিসেবে দেশের একটি বেসরকারি এয়ারলাইন্সে যোগদান করেন তিনি। সেখানে কিছুদিন কাজ করার পর ২০১৯ সালে প্রথম চেষ্টায় টার্কিশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং-৭৩৭ এর প্রথম বাংলাদেশি ফার্স্ট অফিসার হিসেবে নির্বাচিত হন। একই সময়ে বাংলাদেশ বিমানেও পাইলট হিসেবে যোগদানের জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন। কিন্তু বাংলাদেশ বিমানে যোগ না দিয়ে ফার্স্ট অফিসার হিসেবে টার্কিশ এয়ারলাইন্সে যোগ দেন। চার বছর ফার্স্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকার পর চলতি মে মাসে ক্যাপ্টেন হিসেবে পদোন্নতি পান।
টার্কিশ এয়ারলাইন্স বিশ্বের জ্যেষ্ঠতম এয়ারলাইন্সগুলোর মধ্যে একটি। যার ৯০ বছরের বিমান চলাচলের ইতিহাস রয়েছে ও বিভিন্ন দেশে ফ্লাইট চলাচলের বিবেচনায় বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এয়ারলাইন্স এটি।
সেই এয়ারলাইন্সের প্রথম বাংলাদেশি ক্যাপ্টেন হয়ে কেমন লাগছে? ঢাকা পোস্টের সঙ্গে নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে বদরুদ্দোজা আশরাফী বলেন, আমি যখন যেখানে কাজ করেছি অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করেছি। কাজকে ভালোবেসে আনন্দের সঙ্গে কাজ করেছি। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের পরিচয় বহন করার আনন্দ অনেক বেশি। প্রথম বাংলাদেশি ক্যাপ্টেন হিসেবে টার্কিশ এয়ারলাইন্সে চাকরি করা অত্যন্ত গর্বের ও আনন্দের।
এআর/কেএ