মধ্যপ্রাচ্যের এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বাড়ানোর প্রস্তাবে বেবিচকের না
মধ্যপ্রাচ্যের এয়ারলাইন্সগুলোর ঢাকায় ফ্লাইট বাড়ানো ও ফিফথ ফ্রিডমের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
মঙ্গলবার বেবিচক সদর দপ্তরে বাংলাদেশ ও ইউএইর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বিমান চলাচল বিষয়ে দুই দিনব্যাপী আলোচনার শেষ দিনে বিষয়টি জানানো হয়।
আলোচনায় দুই দেশের বিমান চলাচল চুক্তির আওতায় যোগাযোগ বৃদ্ধি ও চুক্তিটি আরও যুগোপযোগী করা এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
উল্লেখ্য, ইউএইর পক্ষ থেকে, মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক ফ্লাই দুবাই ফিফথ ফ্রিডমের অনুমতি চেয়ে বাংলাদেশি যাত্রীদের ঢাকা থেকে ব্যাংকক, ঢাকা থেকে কুনমিং, চট্টগ্রাম থেকে ব্যাংকক এবং চট্টগ্রাম থেকে কুনমিং পথে ফ্লাইট পরিচালনার আগ্রহ প্রকাশ করে। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে আরও ১৪টি, চট্টগ্রাম থেকে ১৪টি এবং সিলেট থেকে ১৪টি যাত্রীবাহী ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি চায় তারা।
ইতিহাদ এয়ারওয়েজ ঢাকা থেকে হংকং রুটে কার্গো ফ্লাইট পরিচালনা করতে আগ্রহী। একইসঙ্গে বর্তমান ফ্লাইট সংখ্যার পাশাপাশি ঢাকায় আরও ৭টি যাত্রীবাহী ও ২টি কার্গো ফ্লাইট চালাতে চায় সংস্থাটি।
এয়ার অ্যারাবিয়া ঢাকা-করাচি রুটে যাত্রীবাহী ও ভারতে কার্গো ফ্লাইট চালাতে অনুমতি চায়। প্রতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে আরও ১৪টি, চট্টগ্রাম থেকে ৭টি এবং সিলেট থেকে ৭টি যাত্রীবাহী ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি চেয়েছিল।
সভার দ্বিতীয় দিনে বেবিচক জানায়, উভয় পক্ষের আলোচনায় ইউএই-এর এয়ারলাইন্সসমূহ বাংলাদেশে তাদের বিমান চলাচল বৃদ্ধির প্রস্তাব করে এবং বিভিন্ন রুটে ফিফথ ফ্রিডম অধিকার পাওয়ার জন্য প্রস্তাব করেন। বর্তমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৩য় টার্মিনালের কর্মযজ্ঞ বিবেচনায় ফ্লাইটের সংখ্যা বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে না বিধায় বর্তমানে যে হারে ফ্লাইট চলমান আছে তা সেই পর্যায়ের মধ্যে রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ভবিষ্যতে বিমানবন্দরসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধি সাপেক্ষে বর্ধিত কলেবরে বিমান উড্ডয়নের প্রস্তাবনা পর্যালোচনা করা হবে। তবে, ফিফ্থ ফ্রিডম অধিকারটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না মর্মে বেবিচক-এর পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও এই আলোচনায় এমিরেটস স্টেটসমূহের মধ্যে ফুজাইরাহ স্টেটের পক্ষে বিমানবন্দরসমূহের সক্ষমতা অর্জন সাপেক্ষে ফ্লাইট বরাদ্দের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়।
বেবিচক জানায়, আলোচনাটি অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে ও সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন হয়। ইউএই-এর ডেলিগেশন প্রধান সাইফ মোহম্মেদ আল সুওয়াইদি বাংলাদেশের আন্তরিক আতিথেয়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশের এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশেষ করে বিমানবন্দর ব্যবস্থাপনায় কারিগরি ও পরামর্শক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন।
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান এই দুই দিনের সভায় সভাপতিত্ব করেন এবং ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে জানান।
ইউএইর পক্ষে জেনারেল সিভিল এভিয়েশন অথরিটি এবং দুবাই, শারজাহ, রাস আল খাইমাহ, ফুজাইরাহ সিভিল এভিয়েশন অথরিটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও ইউএই এর বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধিসহ মোট ২২ জন উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের পক্ষে চেয়ারম্যান বেবিচকের সঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ও বেবিচকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
এআর/এসকেডি