থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের দায়িত্ব পাচ্ছে জাপান

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের (তৃতীয় টার্মিনাল) গ্রাউন্ড হ্যান্ডিংয়ের কাজ জাপান করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান।
তিনি বলেন, গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে জাপান। তাদেরই এ কাজ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তাদের কাজ দেওয়ার জন্য কি ধরনের টার্মস দেওয়া হবে সেটি নির্ধারণে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে করা হবে।
শনিবার সকালে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম, বাংলাদেশের (এটিজেএফবি) আয়োজিত ‘এটিজেএফবি ডায়ালগ উইথ ক্যাব চেয়ারম্যান’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বর্তমান গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের সিংহভাগ কাজ করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
হেলিকপ্টারের অতিরিক্ত হ্যাগার ভাড়া নির্ধারণের বিষয়ে মো. মফিদুর রহমান বলেন, হেলিকপ্টার খাত দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছে। আমরা তাদের অতি স্বল্প হ্যাগার ভাড়া নির্ধারণ করেছি। যেহেতু এটা সরকারি জায়গা, পৃথিবীর কোনো দেশেই এগুলো ফ্রিতে দেয় না, তাই আমরাও ভাড়া নির্ধারণ করেছি। তবে তাদের ভাড়া অনেক কম ধরা হয়েছে। আমরা প্রস্তাব করেছি, অর্থ মন্ত্রণালয় এ ভাড়া চূড়ান্ত করবে। তবে আমরা তাদের প্রতি সর্বোচ্চ সহানুভূতিশীল হয়ে ভাড়া নির্ধারণ করেছি।
বিমানবন্দরের কর্মীদের আচরণ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আচরণের বিষয়ে বিমানবন্দরে কর্মরতদের এ পর্যন্ত ১৯টি ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক নিজ উদ্যোগে তাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। যারা খারাপ ব্যবহার করছেন, তাদের সরিয়ে দিচ্ছি পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে আর্থিক জরিমানাও করা হচ্ছে।
বিমানবন্দরে নানা কারণে আনসার সদস্যরা যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা দাবি করে- সাংবাদিকদের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে চেয়ারম্যান বলেন, টাকা চাওয়ার বিষয়টি অসত্য নয়। আমরা দেখছি এসব ঘটনা, প্রমাণ পেয়ে তাদের চাকরীচ্যুত করেছি। যেহেতু আমাদের অত জনবল নেই, তাই অন্য সংস্থা থেকে জনবল এনেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হচ্ছে। তারপরও আমরা তাদের কাউন্সিলিং করার চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে আনসারের মহা-পরিচালকের সঙ্গেও কথা বলেছি আমি।
বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপনাকে আরও নমনীয় করতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু, মুক্তিযুদ্ধ, বৃদ্ধ ও শিশুদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সার্ভিস দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে বলে জানান চেয়ারম্যান।
১৯৭২ সাল থেকে দেশের সব বিমানবন্দরে এককভাবে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের কাজ করে আসছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। নিজেদের ফ্লাইটের পাশাপাশি ৩২টির মতো ফ্লাইটের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের সেবা দিচ্ছে তারা। তবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সসহ বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো নিজস্বভাবে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং করে আসছে।
বেবিচক সূত্র জানায়, ২০২২ সালে দুর্বল লাগেজ হ্যান্ডলিং সেবা নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠেছিল বিমানের বিরুদ্ধে। এছাড়াও লাগেজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, সময়মতো কার্গোর মাল আনলোড-অফলোড না করায় অনেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন বিমানের সেবায়। এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ও অসন্তোষ ছিল। তাই বেবিচক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভবিষ্যতে বিমানের হাত থেকে বাকি দুই টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের দায়িত্ব চলে যাওয়ারও আশংকা রয়ে গেছে।
এআর/এফকে