থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং নিয়ে এখনো চুক্তি হয়নি
হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং নিয়ে এখনো জাপানের সঙ্গে চুক্তি হয়নি বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুরে হযরত শাহজালালে আন্তর্জাতিক থার্ড টার্মিনালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘নতুন টার্মিনালে অবশ্যই গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং বিদেশি প্রতিষ্ঠান করবে। এ অপারেশনের মেইনটেন্যান্স স্কুপের মধ্যে আছে কার্গো হ্যান্ডেলিং, গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং ও টার্মিনাল বোডিং। এছাড়া যেমন এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এগুলো আমাদের কাছে থাকবে। বাকি জিনিসগুলো গ্রাউন্ড ও কার্গো হ্যান্ডেলিং তাদের প্রতিষ্ঠানের কাছ চলে যাবে। এখন তারা কি বিমানকে দিয়ে করাবে না কি তারা অন্য কোম্পানিকে দিয়ে করাবে সেটি তাদের ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। কারণ টার্মিনাল-৩ এর কনসেশন কিন্তু দেওয়া হচ্ছে ওই লক্ষ্যে। সুতরাং তারাই এটি করবে।’
‘সরকার এ ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন এ টার্মিনালের মেইনটেন্যান্স ও অপারেশনের কাজ প্রতিবেশী রাষ্ট্র জাপান পাবে বলে একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে আমাদের পিপিবি কর্তৃপক্ষ একটা ট্রানজেকশন যোগ করেছে। যার মাধ্যমে পুরো কাউন্সিল কন্ডিশন নিয়ে তারা আমাদের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। তারা যদি ওইগুলোতে একমত হয় তাহলে যেসব জাপানি কোম্পানি আগ্রহী রয়েছে তারা কাজ করবে। যদিও তাদের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হতে হতে আগামী বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় লেগে যাবে।’
‘তাদের ট্রানজেকশনসহ অন্য কাজগুলো শেষ হওয়ার পর আমরা সংযুক্ত হব। এর আগে কিন্তু আমরা বেবিচকের মাধ্যমে আমাদের যত অবকাঠামো হয়েছে মেইনটেন্যান্সের জন্য কর্মীদের প্রতিক্ষণ দেব। এরপর তারা তাদের অপারেশন বুঝে নেবে। তারা যদি দেরি করে আমরা আমাদের কর্মী দিয়ে কাজ শুরু করে দেব। যেখানে বিমান তো আছেই। বিমান আগেও দিয়েছে।’
বিমান গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ে থাকবে কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিমান আমাদের গর্ব। বিমান ফ্লাক ক্যারিয়ার। জাতির জনক বিমান ও বেবিচক একসঙ্গেই করেছেন। কিন্তু আমরা প্রত্যাশাটা করছি যে, বিমান যে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং দিচ্ছে তারা সেবার মান দিনদিন উন্নত করছে। আমরা বেবিচক ও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সবসময় তাদেরকে সুপারভাইস করছি তাদের সেবার মান বাড়ানোর জন্য। গত কয়েক বছর বলব না, গত কয়েক মাসে বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের মান অনেক উন্নত করা হয়েছে। এটি নিয়ে আমাদের একটা সমন্বিত সুপারভাইস করা হচ্ছে যা বিমানের আগে ছিল না।’
‘আমাদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি টাস্কফোর্স করে দেওয়া হয়েছে যাতে যাত্রী সেবার মান বিঘ্নিত না হয়। কারণ প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে খুবই সচেতন। উনি চাচ্ছেন যাতে যাত্রীরা ভালো সেবা পায়। তার কার্যালয় থেকে কিন্তু একটি টিম নজর রাখে যাত্রী সেবার মান উন্নয়নের জন্য।’
মফিদুর রহমান বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমরা যদি এ বিমানবন্দর থেকে ভালো রেভিনিউ অর্জন করতে চাই, আবার ভালো উন্নত সেবা দিতে পারে এমন সংস্থা যদি এখানে সংযুক্ত না হয়, তাহলে বিমানবন্দরের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেড়ে যাবে।’
‘আমাদের লক্ষ্য কী? যারা বিভিন্ন সংস্থা ও যাত্রীদের ভালো গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবা দিতে পারবে তাদেরকে পছন্দ করা তাই না? তারা নিজেরাই করবে না কি অন্যদের দিয়ে করাবে তার সামনে আলোচ্য বিষয়। তাদের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা নিজেরাই এ কাজ করব।’
নির্মাণাধীন বিমানবন্দরে ১৪ বোর্ডিং ব্রিজ নিয়ে জটিলতা কেটেছে কি না এবং গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের কাজ শুরুর প্রস্তুতি পর্ব কতটা এগিয়েছে এমন প্রশ্নে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘অতিরিক্ত কাজের জন্য আমাদের জাইকার অনুমোদনের প্রয়োজন ছিল। জাইকার অনুমোদন সাপেক্ষে আমাদের আবার বিভিন্ন কিছুতে ও বাজেটে পরিবর্তন আনতে হচ্ছে। এজন্য সরকারের অনুমোদনও লাগে। তবে এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের একটি অ্যাপ্রুভাল দেওয়া রয়েছে। আর জাইকার অনুমোদনটি আমরা সম্প্রতি পেয়েছি। তবে এটার জন্য যে বরাদ্দ দরকার তার জন্য এখন আলোচনা চলছে। কিন্তু আগে বরাদ্দটা কম ছিল।’
তিনি বলেন, ‘নতুন চাহিদার ড্রাফ অনুমোদন করেছে জাইকা। এটি এক মাসের মধ্যে তারা অনুমোদন দিয়ে দেবে। ১৪টি যে বোডিং ব্রিজ সেগুলো হবে। আমরা বরাদ্দ পেলে সবার আগে সেটির কাজ শুরু করব। আগে সফট ওপেনিংটা হবে। আমরা কিন্তু কাজ শুরু করে দিয়েছি।’
এমএসি/কেএ