পাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, উপাচার্যের কুশপুতুল দাহ

Dhaka Post Desk

জেলা প্রতিনিধি, পাবনা

০২ মার্চ ২০২২, ০৪:১৭ পিএম


পাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, উপাচার্যের কুশপুতুল দাহ

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর দেওয়া অবৈধ নিয়োগ বাতিল, গণনিয়োগ বন্ধ এবং সেশনজটমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা উপাচার্যের দুর্নীতির তদন্ত ও বিচার চেয়ে তার কুশপুতুল দাহ করেন। 

বুধবার (০২ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী এতে অংশগ্রহণ করেন। মিছিলটি উপাচার্যের বাসভবন, একাডেমিক ভবন, বিজ্ঞান ভবন, স্বাধীনতা চত্বরসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকে অবস্থান নেন। পরে প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে উপাচার্যের কুশপুতুল দাহ করেন শিক্ষার্থীরা। 

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘অবৈধ নিয়োগ মানি না, মানবো না’, ‘দুর্নীতিবাজ ভিসির, বিচার চাই করতে হবে’, ‘দুর্নীতি আর করিস না, পিঠের চামড়া থাকবে না’, ‘ভিসির গদিতে, আগুন জ্বালাও একসাথে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের উপাচার্য এমন পর্যায়ে দুর্নীতি করেছেন যে, শেষ পর্যায়ে রাতের আঁধারে পালিয়ে যেতে হয়েছে। আমরা মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তার অপরাসণ এবং দুর্নীতির বিচার চাই। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলী গত চার বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি করেছেন। নিজে নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি থেকে সম্পূর্ণ অনৈতিক ও বিধিবহির্ভূতভাবে ভাতিজি কানিজ ফাতেমা কনক, ভাগিনা হাসিবুর রহমান, ভাইয়ের ভায়রার ছেলে মীর রমজানসহ ডজনখানেক আত্মীয়কে নিয়োগ দিয়েছেন। এছাড়া মেয়াদ শেষে নিয়োগ বাণিজ্য করে শতাধিক গণনিয়োগ দিয়েছেন। এমনকি পত্রিকা মারফত আমরা জেনেছি তার ভাতিজা রফিকুল ইসলাম বাবু এবং ভাতিজি বিলকিসকে দিয়েও নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। আমরা সরকারের কাছে এসব অবৈধ নিয়োগ বাতিল ও গণনিয়োগ বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।

Dhaka Post

উপাচার্যের দুর্নীতির তদন্ত দাবি করে তারা বলেন, উপাচার্য পদে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই তিনি অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। নিয়োগ বাণিজ্য, উন্নয়ন প্রকল্পে কমিশন খাওয়া, ভুয়া ভাউচার করে টাকা লোপাট করা, ১০ কোটি টাকার বই ক্রয়ে হরিলুট, লেকের মাছ লুট, বাড়ি ভাড়া ফাঁকি দেওয়া, গাড়ি বিলাসিতাসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন। আমরা এসবের তদন্ত চাই।

সেশনজট মুক্ত ক্যাম্পাসের দাবি জানিয়ে আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা বলেন, তার অদক্ষতা ও অজ্ঞতার কারণে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। তিনি আমাদের জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করে দিয়েছেন। ইউজিসির বার্ষিক সম্পাদন চুক্তি পর্যন্ত তিনি বরখেলাপ করেছেন। ফলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিং একেবারে নিচে নেমে গেছে, ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৪৬তম।

প্রসঙ্গত, আাগামী ৬ মার্চ পাবিপ্রবি উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তবে এর আগেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে গোপনে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন তিনি। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে পাবনা থেকে প্রথমে ঢাকাস্থ পাবিপ্রবির কার্যালয় ও পরে রাজশাহীতে গেছেন তিনি। 

রাকিব হাসনাত/আরএআর

Link copied