রক্ত দিতে শেখ হাসিনা বার্নে ঢাবি শিক্ষার্থীরা
![রক্ত দিতে শেখ হাসিনা বার্নে ঢাবি শিক্ষার্থীরা](https://cdn.dhakapost.com/media/imgAll/BG/2022June/dhakapost-20220605204354.jpg)
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ ও আহতদের রক্তের প্রয়োজন মেটাতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ছুটে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৫ জুন) সকাল থেকে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী, সেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা দল-মত নির্বিশেষে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে অবস্থান করছেন বলে জানা যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের সামনে পানি, স্যালাইন সহকারে ডেস্ক নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের। রক্তদাতাদের লিস্ট করা ও প্রয়োজনে রক্তও দিচ্ছেন তারা। সন্ধ্যা থেকে ডেস্ক নিয়ে অবস্থান করতে দেখা যায় ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের। যাদের অধিকাংশই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এছাড়া সকাল থেকে বিক্ষিপ্তভাবেও ঢাবির অনেক শিক্ষার্থী হাসপাতালে গেছেন রক্ত দিতে।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক সেখ স্বাধীন মো. শাহেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সকাল থেকে এখানে অবস্থান করছি। বিশুদ্ধ পানি ও স্যালাইন সরবরাহ করছি। এখন পর্যন্ত সাতজনকে রক্ত দিয়েছি। প্রায় ৩০০ জন রক্তদাতার লিস্ট করেছি।
ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোতে সংঘটিত ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহত যেসকল রোগীকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হবে তাদের সহযোগিতায় প্রস্তুত রয়েছে ঢাবি ছাত্রলীগের স্বেচ্ছাসেবকরা। তথ্য সরবরাহ, বিভিন্ন গ্রুপের রক্ত সংগ্রহ, রোগীর স্বজনদের বিশ্রাম-খাবারসহ যেকোনো ধরনের সহযোগিতায় ছাত্রলীগকর্মীরা নিজেদের সর্বোচ্চটুকু দিতে সংকল্পবদ্ধ।
ঢাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আখতার হোসেন বলেন, বিকেল থেকে আমরা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে অবস্থান করছি। বিশুদ্ধ পানি ও স্যালাইন দিচ্ছি। জরুরি রক্তের প্রয়োজনে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া সীতাকুণ্ড থেকে আসা কারো থাকার সমস্যা হলে আমরা সে ব্যবস্থাও করব।
রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জোনের সাধারণ সম্পাদক গালিব আহমেদ শিশির ঢাকা পোস্টকে বলেন, সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ ও আহত ব্যক্তিদের রক্তের প্রয়োজন মেটাতে আমরা প্রস্তুত। রক্তদাতাদের স্টক বাড়ানোর জন্য কাজ চলমান। আমাদের যে ট্রান্সফিউশন আছে সেটা রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। বাঁধনের সকল কর্মীকে রক্ত দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফেকশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদ উদ্দিন বলেন, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত সীতাকুণ্ডের শিক্ষার্থীরা সকাল থেকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে আছি। রক্ত, অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে শুরু করে যেকোনো সহযোগিতায় আমরা প্রস্তুত।
এদিকে, বিএম কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন এখনো জ্বলছে। আগুনের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ জনে। দগ্ধ ও আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন দুই শতাধিক মানুষ। ফায়ার সার্ভিস বলছে, লাশের সারি আরও দীর্ঘ হতে পারে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিস্ফোরণের ঘটনায় গুরুতর দগ্ধ ১৪ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আনা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বার্নের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, আমাদের এখানে সন্ধ্যার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ৭ জন এসেছেন। তাদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ পর্যন্ত আমাদের এখানে দগ্ধ ১৪ জনকে আনা হয়েছে। সবারই ইনহেলেশন (শ্বাসনালী) বার্ন রয়েছে। তারা কেউই শঙ্কামুক্ত নন।
এইচআর/ওএফ