সোশ্যাল মিডিয়ার গুজব বাংলাদেশ-ভারতে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করছে

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ও ভারতে ধর্মীয় গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে ব্যাপক অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। এতে জনমনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে।
শুক্রবার (১ জুলাই) ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন ইনক্লুসিভিটি, কনভারজেন্স অ্যান্ড অলটারনেট নেগোসিয়েশনসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক গ্লোবাল মিডিয়া এডুকেশন কাউন্সিলের (জিমেক) ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও জিমেক-বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া কমিউনিকেশন বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. শেখ শফিউল ইসলাম তার মূল প্রবন্ধে এ কথা বলেন।
ড. শেখ শফিউল ইসলাম বলেন, ধর্ম, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, উন্নয়ন, রাজনীতিসহ নানা বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতে প্রায়ই একই ধরনের গুজব লক্ষ্য করা যায় যা প্রায়ই জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং সরকার ও দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করে। যদিও বাংলাদেশ এবং ভারতে ডিজিটাল ও সোশ্যাল মিডিয়া অনেক ইতিবাচক সুযোগ ও সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। এছাড়াও এর অপব্যবহার সাম্প্রদায়িক বিরোধ, সামাজিক অসঙ্গতি ও বিশৃঙ্খলা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলছে।

তিনি বলেন, মিথ্যা সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীদের সৃষ্ট এ অরাজকতা মোকাবিলায় দুই দেশের সরকারকেই ‘প্রোঅ্যাক্টিভ’ ভূমিকা না নিয়ে বরং বিভিন্ন সময়ে ‘রিয়্যাক্টিভ’ পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে। পরিস্থিতির সাময়িক সামাল দিতে এ পদ্ধতি কার্যকর হলেও, দীর্ঘমেয়াদি সুফল পেতে হলে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীদের উন্নত যোগাযোগ প্রযুক্তির পাশাপাশি নিজস্ব সংস্কৃতি, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবিক মূল্যবোধ, আধেয় নির্মাণ ও প্রচারে নীতি-নৈতিকতার উপর পর্যাপ্ত শিক্ষা দিতে হবে।
উল্লেখ্য, সপ্তাহব্যাপী এ সম্মেলন বিশ্ব মিডিয়া ও যোগাযোগ পরিসরে বৃহৎ আয়োজনগুলোর একটি। দিল্লী মেট্রোপলিটন মিডিয়া স্কুল ও অস্ট্রেলিয়ার ডিকেন ইউনিভার্সিটির স্কুল অব কমিউনিকেশন অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ আর্টস যৌথ উদ্যোগে উক্ত সম্মেলন আয়োজন করে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মধ্যপ্রদেশের মাখনলাল চতুর্ভেদী ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব জার্নালিজম অ্যান্ড কমিউনিকেশনের (এমসিইউ) উপাচার্য ও বিশিষ্ট মিডিয়া আলোচক অধ্যাপক কে. জি. সুরেশ। সহ-সভাপতি হিসেবে ছিলেন গ্লোবাল মিডিয়া এডুকেশন কাউন্সিলের (জিমেক) সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার চৌধুরী।
উদ্বোধনী আয়োজনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা বক্তব্য রাখেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অধ্যাপক কে. জি. সুরেশ, বিচারপতি ভানওয়ার সিং (প্রাক্তন বিচারক, আলাহাবাদ হাই কোর্ট), সম্মেলনের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার চৌধুরী, ডিএমই পরিচালক অধ্যাপক রবি কান্তি স্বামী, ডিএমই মিডিয়া স্কুলের প্রধান অধ্যাপক ড. সুস্মিতা বালা, অধ্যাপক মাইথিলি গাঞ্জো, অ্যামিটি ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক জলি জোস, অস্ট্রেলিয়া-ইন্ডিয়ান ফিল্ম কাউন্সিলের সদস্য ড. বিক্রান্ত কিশোর সম্পাদক আকরাম হক এবং ডিএমই মিডিয়া স্কুলের সহযোগী অধ্যাপক ড. মানাসভি মহেশ্বরি। সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদ্বোধনী আয়োজন সমাপ্ত হয়।
আইএসএইচ
